আইসিটি ওয়ার্ল্ড নিউজ: বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট: ভ্রমণের শেষ গন্তব্য । বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট (Banglabandha Zero Point) বাংলাদেশের উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া এর সীমান্তবর্তী ল্যান্ডমার্ক। এর পরে ভারতের বর্ডার শুরু হয়েছে। এই স্থানে মহানন্দা নদীর তীর ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন প্রায় ১০ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর যেখান থেকে নেপালের সাথেও বাংলাদেশের পণ্য বিনিময় সম্পাদিত হয়। হিমালয়ের কোলঘেঁষে অবস্থিত বাংলাদেশের সর্বোত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্থলবন্দর যার মাধ্যমে তিনটি দেশের সাথে সুদৃঢ় যোগাযোগ গড়ে উঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট গেলে ইট-পাথরের দ্বারা নির্মিত বিশালাকৃতির একটি জিরো এর দেখা মিলবে। আর এটিই আপনাকে বলে দিবে যে আপনি জিরো পয়েন্টে চলে এসেছেন। এখানেই বাংলাদেশ এর সীমান্তের শেষ এবং ওপারে ভারতের সীমান্ত এর শুরু। বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি শহরের দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার এবং দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের কাকরভিটা সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। পর্যটকেরা বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দিয়ে সড়কপথে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান যাতায়াত করে। ফলে পঞ্চগড় জেলা পর্যটকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে জিরো পয়েন্ট। তাই এই শীতে পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার প্ল্যান করে থাকলে আপনার প্ল্যানে অবশ্যই যুক্ত করে নিতে পারেন এই বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট।
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট যাওয়ার উপায়-
বাসে যেতে চাইলে:
ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মিরপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইস, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল বাসে চেপে বাই রোডে পঞ্চগড় যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় নন এসি বাস ভাড়া ৫৫০-৭০০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ৮০০-১৬০০ টাকা।
ট্রেনে যেতে চাইলে:
ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে সরাসরি পঞ্চগড় নামতে পারবেন। যাত্রাপথে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে – শোভন ৫৫০ টাকা, এসি চেয়ার ১০৫৩ (স্নিগ্ধা), প্রথম বার্থ ১৯৪২ টাকা।
❖ পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন ঢাকা থেকে রাত ১০ঃ৪৫ মিনিটে ছেড়ে পঞ্চগড়ে পৌঁছাবে পরদিন সকাল ০৮ঃ৫০ মিনিটে। আর পঞ্চগড় থেকে বেলা ১টা ১৫ মিনিটে ছাড়বে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে। পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী এই ট্রেনটি কেবল পার্বতীপুর, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও স্টেশনে থামবে।
❖ দ্রুতযান এক্সপ্রেস – ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় রাত ৮:০০ টা , পঞ্চগড় পৌছায় সকাল ৬.১০ এর দিকে।
❖ একতা এক্সপ্রেস – ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় সকাল ১০.১০, পঞ্চগড় পৌছায় রাত ৯ টার দিকে।
❖ সবগুলো ট্রেন পঞ্চগড় পৌছাতে কিছু সময় বিলম্ব করে। সপ্তাহের প্রতিদিন এই ট্রেনগুলো চলে থাকে।
পঞ্চগড় শহর থেকে বাংলাবান্ধা ৫৫ কি.মি দূরে অবস্থিত। তাই শহর থেকে লোকাল বাস, প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস যোগে বাংলাবান্ধা যেতে হয়। বাসে যেতে চাইলে জনপ্রতি ৬০-৮০ টাকা করে টিকেট কেটে নিতে হবে। বাস আপনাকে তেতুলিয়া বাজারে নামিয়ে দিলে সেখান থেকে অটোরিক্সা যোগে আপনি বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন:
পঞ্চগড় সার্কিট হাউজ, ডিসি কটেজ, পঞ্চগড়, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। রয়েছে চিনিকল রেস্ট হাউজ, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্ণার, দেবীগঞ্জ কৃষি ফার্ম গেস্ট হাউজ, বোদা ডাকবাংলো, রেশম প্রকল্প রেস্ট হাউজ ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ
❒ শান্তির খোঁজে ঘুরে আসুন চায়না বাঁধ, সিরাজগঞ্জ
❒ চা পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা এক টুকরো স্বর্গ–ক্যামেলিয়া লেক
❒ একদিনেই দেখে নিন বীরদের স্মৃতি
❒ আরামদায়ক এয়ার ট্রাভেলের জন্য ৭টি স্মার্ট টিপস
❒ সুন্দরবনের বৈচিত্রময় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম কটকা সমুদ্র সৈকত
❒ অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মতিরহাট সৈকত
দৃষ্টি আকর্ষণ: যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
[আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান।]
✺ আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক ✺ আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ
❑ ভ্রমণ থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ চলন বিল: প্রকৃতির এক বিস্ময় ভুবন

