ঢাকা, রাত ২:৪৮, রবিবার, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
Advertisement

আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: প্রত্যেক শিশুরই যে আটটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা উচিত । সফল হওয়ার জন্য কিছু বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনকার শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় ভালো হলেই শুধু হবে না, আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজন হবে। ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় এমন আটটি দক্ষতা সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ডিজিটাল জ্ঞান
আজকের প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য ডিজিটাল জ্ঞান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের ডিজিটাল টুলগুলো দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করা শেখাতে হবে।

দৈনন্দিন জীবনে ও পড়াশোনার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করতে শেখা, কোডিং শেখা, সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক জ্ঞান অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সফটওয়্যারের ব্যবহার করতে শেখা খুবই প্রয়োজন। ডিজিটাল জ্ঞান অর্জন করলে তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি আসার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটের জগতে নিজেদের নিরাপদ রাখতেও সক্ষম হবে।

Advertisement

আবেগপ্রবণ বুদ্ধিমত্তা (ইকিউ)
আবেগ বুঝতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারা ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে খুবই জরুরি। শিশুদের সহমর্মিতা, আত্মসচেতনতা ও বিরোধ নিষ্পত্তি শেখাতে হবে। এতে তারা দলবদ্ধভাবে কাজ করতে শিখবে, গোটা পৃথিবীর সঙ্গেই নিজেদের একটি অর্থপূর্ণ সংযোগ তৈরিতে সক্ষম হবে।

চিন্তার কৌশল
চিন্তাহীন পৌনঃপুনিক কাজগুলো করতে বর্তমানে অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই চিন্তা করতে শেখা দিন দিন অতি প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিশুদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে, সব ধরনের সম্ভাবনা বিচার করতে ও সবকিছু জেনেশুনে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহ দিন।




আরও পড়ুনঃ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ করে যেসব খাবার

ধরা যাক, শিশুর জন্য কেনাকাটা করতে গিয়ে দুটি জামা পছন্দ হলো, কিন্তু আপনারা একটি জামা কিনতে চান। সে ক্ষেত্রে তাকে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। কোন জামাটা কিনলে কী সুবিধা, কী অসুবিধা, এগুলো নিয়ে নিজেই সে ভাবুক, ভেবেচিন্তে নিজের জন্য একটি জামা পছন্দ করুক। গণিত ও বয়সের উপযোগী কোডিং চর্চা, প্রজেক্ট তৈরি ও পাজল সমাধান করার মাধ্যমেও শিশুদের চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটে। চিন্তা করতে পারার এই দক্ষতাগুলো যেকোনো ক্ষেত্রে নতুন কিছু উদ্ভাবন ও জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আর্থিক সাক্ষরতা
অর্থনৈতিক দিক থেকে পৃথিবী দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যাচ্ছে। তাই আর্থিক বিষয়ে জ্ঞান রাখা এখন খুবই প্রয়োজন। শিশুদের বাজেট তৈরি, অর্থ সঞ্চয়, বিনিয়োগ, এমনকি ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কেও শিক্ষা দিন। আর্থিক সাক্ষরতা অর্জনের মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক বিষয়ে ভালোভাবে সিদ্ধান্ত নিতে ও জীবনে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনতে সক্ষম হবে।




যোগাযোগে দক্ষতা
মৌখিক ও লিখিত—এই দুই মাধ্যমেই স্পষ্ট ও কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই খুব প্রয়োজন। শিশুদেরকে শিখতে হবে কীভাবে নিজেদের আইডিয়াগুলো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তুলে ধরতে হয়, কীভাবে অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়। ই–মেইল, প্রেজেন্টেশন, আলোচনাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের ধরনের ভিন্নতাগুলোও তাদের রপ্ত করা শিখতে হবে।

খাপ খাওয়ানো ও ধৈর্যধারণ
ভবিষ্যতে কী ঘটবে, তা কেউই জানে না। সব পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা যেকোনো মানুষকে জীবনযুদ্ধে অনেক এগিয়ে রাখতে পারে। শিশুদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ খুশিমনে গ্রহণ করতে, ব্যর্থতা থেকে শিখতে ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে শিক্ষা দিন। এই গুণগুলো ভবিষ্যতে বিভিন্ন সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে কাজে আসবে। যেমন ক্যারিয়ারের দিক পরিবর্তন, বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট, প্রযুক্তিগত ব্যাঘাত ইত্যাদি।




আরও পড়ুনঃ

যে পাঁচ অভ্যাস থাকলে বুঝবেন আপনার শিশুর ভবিষ্যৎ সফল
যেসব বিষয়গুলো শিশুর সঙ্গে কখনোই করবেন না
বাচ্চাকে জিনিয়াস হিসাবে গড়ে তোলার ৮ কৌশল
কোন বয়সে শিশুকে কেমন খেলনা দেওয়া উচিত

বৈশ্বিক ও সাংস্কৃতিক সচেতনতা
পৃথিবীতে মানুষে মানুষে দূরত্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কম। এ কারণেই এক দেশে ঘটে চলা আন্দোলনের খবর মুহূর্তেই এখন আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়ে, দূর দেশ থেকেও অনেকে সংহতি প্রকাশ করেন।

শিশুদেরকে বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা ও বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর সঙ্গে পরিচয় করালে তারা উন্মুক্ত মানসিকতা নিয়ে বড় হবে, তাদের সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বাড়বে। এই দক্ষতাগুলো বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশে তাদের মিলেমিশে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করতে সহায়তা করবে। তারা বিশ্বের নাগরিক হিসেবে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।




পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা
শিশুদের পরিবেশ সম্পর্কে ভাবতে, বর্জ্যের পরিমাণ কমাতে ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে বোঝানো হলে পৃথিবীর সচেতন বাসিন্দা হিসেবে তারা গড়ে উঠবে। বাগান করা, বিভিন্ন উপাদানের পুনর্ব্যবহার ও শক্তির রূপান্তর সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

 মা ও শিশুর যত্ন থেকে আরও পড়ুন

আরও পড়ুনঃ গর্ভকালীন সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন

Advertisement
Share.
Leave A Reply

Advertisement
Advertisement
Exit mobile version