আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ১২৫ বছরেও কমেনি মদন গোপালের মিষ্টির কদর । কিশোরগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় মদন গোপাল সুইটস কেবিন। স্বাদে অতুলনীয় এই মিষ্টির খ্যাতি পুরো অঞ্চলজুড়ে। গত ১২৫ বছরেও কমেনি ঐহিত্যবাহী এই মিষ্টির কদর; বরং বর্তমানে এই মিষ্টির সুখ্যাতি কিশোরগঞ্জ ছাড়িয়ে সারা দেশেই কমবেশি পরিচিতি লাভ করেছে।
স্থানীয় মানুষজনের কাছে মদন গোপালের মিষ্টি যেন লোভনীয় এক নাম। সকাল, দুপুর কি সন্ধ্যা মিষ্টিপ্রেমীদের জটলা লেগেই থাকে। মদন গোপালের মিষ্টির স্বাদ যে কারো জিভে জল আনতে বাধ্য।
প্রায় ১২৫ বছর আগে মিষ্টির দোকানটির সূচনা করেন মুরারী মোহন তালুকদার। তার মৃত্যুর পর ব্যবসার হাল ধরেন তার ছেলে ধীরেন্দ্র চন্দ্র বসাক। তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে দোকানটির হাল ধরেন দুই ছেলে নিবেদন বসাক ও চন্দন বসাক। দীর্ঘদিন ধরে তারা দু’জনেই ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টির দোকানটি পরিচালনা করছেন।
কিশোরগঞ্জের এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি মদন গোপালের মিষ্টির স্বাদ নেননি। এমনকি যারা এখানে কোন কাজে আসেন, তারাও এই মিষ্টির স্বাদ নিতে ভুলেন না। উৎসব-পার্বনে মদন গোপালের মিষ্টি কিনতে আসেন দূর-দুরান্তের ক্রেতারা। দেশের বাইরেও আত্মীয়স্বজনের কাছে এই মিষ্টি পাঠাচ্ছেন অনেকে।
আরও পড়ুনঃ নরসিংদীর ঐতিহ্য সাগর কলা
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রায় ১২৫ বছর আগে মুরারী মোহন তালুকদার যখন শহরের গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় মিষ্টির দোকানটি শুরু করেন, তখন শহরে হাতেগোনা কয়েকটি মিষ্টির দোকান ছিলো।
শুরুতে বেচাকেনা কম হলেও মিষ্টির গুণাগুণ ও মান ভালো থাকায় মদন গোপালের সুস্বাদু মিষ্টির কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে মদন গোপালের মিষ্টির সুনাম। ফলে রসনার স্বাদ মেটাতে মিষ্টিপ্রেমীরা ভীড় করেন মদন গোপাল সুইটস কেবিনে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদন গোপালের সব ধরনেরর মিষ্টিই কম বেশি ভালো বিক্রি হয়। তবে বেশি বিক্রি হয় রসমালাই। মদন গোপালের আমিত্তি এবং বরফিরও বেশ কদর রয়েছে। এছাড়া লাড্ডু, রসগোল্লা, পেয়ারা, সন্দেশ, মালাইকারী, চমচম, কাঁচাগোল্লাসহ এখানকার বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক মিষ্টির জুড়ি মেলা ভার।
মদন গোপালের বর্তমান স্বত্ত্বাধিকারীদের একজন চন্দন বসাক। ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টির সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তারা বদ্ধপরিকর মন্তব্য করে চন্দন বসাক বলেন, খাঁটি দুধের ছানা দিয়ে তারা মিষ্টি তৈরি করেন। সুনাম ধরে রাখতে মিষ্টির মানের ব্যাপারে তারা কোন আপস করেন না।
তিনি জানান, মিষ্টির স্বাদ বা গুণগত মান পরিবর্তন হতে পারে এমন কোনো উপকরণ তারা মেশান না। সব সময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়। চারদিকে ভেজালের ছড়াছড়ির মাঝেও কোনো ধরনের ভেজালের ছোঁয়া তারা লাগতে দেননি বলেও মন্তব্য করেন চন্দন বসাক।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লার মিষ্টির রাজা ‘রসমালাই’