আইসিটি স্পোর্টস ডেস্ক: ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জিতলো অস্ট্রেলিয়া । গ্যালারিতে ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শক। টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে স্বাগতিক ভারত। ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশে যেন উৎসব লেগেছিল, সবারই একটাই আশা বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে দিলো অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ষষ্টবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলো অজিরা।
আজ ভারতের আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ২৪০ রান করে ভারত। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন কে এল রাহুল। এছাড়া বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে ৫৪ রান। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। লক্ষ্য তাড়ায় ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে অজিরা। তবে এরপর ট্রাভিস হেডের দুরন্ত সেঞ্চুরিতে ৭ ওভার বাকি থাকতে জয় পায় অজিরা। হেডের ব্যাট থেকে আসে ১২০ বলে ১৫ চার ও চার ছক্কায় ১৩৭ রানের ইনিংস। এছাড়া ৫৮ রান করেন মার্নাস লাবুশানে।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ১৫ রান করে অস্ট্রেলিয়া। তবে দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ডেভিড ওয়ার্নারকে ফেরান মোহাম্মদ শামি। ৩ বল খেলে ৭ রান করেন ওয়ার্নার।
আরও পড়ুনঃ টুর্নামেন্টের ইতিহাসই বদলে দিচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ
ওয়ার্নারের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে ঝড় তুলেছিলেন মিচেল মার্শ। তবে সে ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বুমরাহর পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলটি মার্শের ব্যাটে আলতো চুমু খেয়ে উইকেট কিপারের হাতে জমা পড়ে। ১৫ বলে ১টি করে চার ও ছয়ে ১৫ রান করে ফেরেন মার্শ। সপ্তম ওভারের শেষ বলে স্টিভেন স্মিথকেও ফেরান বুমরাহ। ৯ বলে ৪ রান করে ফেরেন স্মিথ।
তৃতীয় উইকেটে অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়েন হেড এবং লাবুশেন। বিপদের মুখে দুজনে মিলে গড়েন ১৯২ রানের জুটি। আর তাতে কোনো শঙ্কা ছাড়াই রান তাড়া করে ফেলে অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার যখন ২ রান দরকার, তখন আউট হন হেড। মাঠে নেমে প্রথম বলেই উইনিং শট খেলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই শুভমান গিলের উইকেট হারায় ভারত। মাত্র ৪ রান করে আউট হন তিনি। মিচেল স্টার্কের বলে অ্যাডাম জাম্পাকে ক্যাচ দেন এ ওপেনার। গিল ফিরলেও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাওয়ার-প্লেতে ভারতের রানসংখ্যা বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন রোহিত। কিন্তু ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ভুল শট সিলেকশনে আউট হন তিনি। ৩১ বলে ৪৭ রান করেছেন তিনি।
উইকেটে এসে দ্বিতীয় বলেই চার মেরেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। নিজের খেলা তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে জস ইংলিসের কাছে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার।
১০০ রানের আগে ৩ উইকেট হারানোর পর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দিচ্ছিলেন বিরাট কোহলি। তবে ফিফটি তুলে নেয়ার পর ৫৪ রানে কামিন্সের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
কোহলির বিদায়ের পর রানের গতি একেবারেই কমে যায়। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে এরপর ৩০ রানের জুটি গড়েন রাহুল। তবে ৩৬তম ওভারে হ্যাজলউডের শর্ট লেন্থ ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে জাদেজা ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
চাপের মুখে ফেরেন রাহুলও। দলীয় ২০৩ রানে তার বিদায়ের পর ১১ রানের ব্যবধানে আরও দুই উইকেট হারায় ভারত। উইকেটে একমাত্র ভরসা হিসেবে টিকে ছিলেন সূর্যকুমার যাদব। তবে দলের প্রয়োজনে কিছুই করতে পারেননি তিনি। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের বলে ফেরেন তিনি।
ওভার শেষ হওয়ার আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছিল ভারতের। তবে মোহাম্মদ সিরাজ এবং কুলদীপ যাদবের ব্যাটে সেই শঙ্কা এড়িয়ে ৫০ ওভার ব্যাটিং করে রোহিতের দল। শেষ বলে অবশ্য রান আউট হয়েছেন কুলদীপ যাদব।
আরও পড়ুনঃ ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া কে হাসবে শেষ হাসি