আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: শিশুর সঙ্গে খেলা জরুরি কেন ? আপনার জন্য শিশুর সঙ্গে খেলা করা একটা মজার ব্যাপার। সুখস্মৃতি সঞ্চয়ের অনুষঙ্গ। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য জরুরি এই খেলা। বিশেষ করে শিশুর প্রথম এক হাজার দিন বা প্রথম তিন বছর শিশুর মস্তিষ্কের যথাযথ বিকাশের জন্য তাদের সঙ্গে খেলা করার বিকল্প নেই।
সাধারণত তিনভাবে শিশুর সঙ্গে খেলা করা হয়
১. খেলনা দিয়ে খেলা: শিশুর বয়স অনুসারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিভিন্ন ধরনের খেলনা দিয়ে খেলা হয়।
২. শারীরিক খেলা: শিশুর সঙ্গে হাঁটা, দৌড়ানো, শিশুকে ব্যায়াম করানো, ঘুমানোর আগে শরীর ম্যাসাজ করে দেওয়া, তেল মাখানো, হাঁটা শেখানো, ঘোড়া সেজে শিশুকে নিয়ে বেড়ানো, নাচ-গান করা, বেড়ানো, সাইকেল চালানো, প্রকৃতি বা পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো, গাছ লাগানো—এ রকম নানাভাবেও খেলা করা হয় শিশুর সঙ্গে।
৩. কাল্পনিক খেলা: শিশুকে গল্প শোনানো, গল্প করা, বিভিন্ন কাল্পনিক চরিত্র সেজে অভিনয় করা ইত্যাদি কাল্পনিক খেলা।
কেন শিশুর সঙ্গে খেলবেন?
শিশুর যোগাযোগদক্ষতা, সামাজিকীকরণের শিক্ষা, আবেগীয় প্রকাশ, ভাষাজ্ঞান, সসস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা, মা–বাবার সঙ্গে গভীর আস্থা ও বন্ধুত্ব, সর্বোপরি শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধনের জন্য খেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একনজরে জেনে নিন, কেন শিশুর সঙ্গে খেলবেন?
শিশুদের শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হয়। দ্রুত বাক্যগঠন শেখে। মূলত বাবা-মায়ের সঙ্গে খেলাচ্ছলে সময় কাটানোর মাধ্যমেই শিশুদের প্রথম ভাষাজ্ঞান হয়। এমনকি শরীরী ভাষায় তথ্য আদানপ্রদানের ধারণা পায়।
মা–বাবার সঙ্গে খেলার মাধ্যমেই শিশুরা নিজের সম্পর্কে, মা–বাবার সম্পর্কে, পরিবারের সম্পর্কে, বাইরের জগৎ সম্পর্কে জানতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বাচ্চাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার উপায়
মা–বাবার সঙ্গে খেলার মাধ্যমে শিশুরা এমন সব দক্ষতা অর্জন করে, যা পরবর্তী সময়ে তার স্কুলে, কর্মক্ষেত্রে, সম্পর্ক তৈরিতে, এককথায় জীবনের সর্বক্ষেত্রে কাজে লাগে।
মা-বাবার সঙ্গে খেলার মধ্য দিয়ে শিশু যে পরিবারে অংশ, সেই ধারণা পায়। সন্তানের সঙ্গে গভীর আস্থা আর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে তাদের সঙ্গে খেলা করার বিকল্প নেই। সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে খোলামেলা আলাপ করার শিক্ষাও মা-বাবার সঙ্গে খেলতে খেলতেই পায় শিশু।
খেলার মাধ্যমে শিশুরা হামাগুড়ি দেওয়া, জিনিস ওঠানো–নামানো, বিভিন্ন খেলনার আকার আকৃতি, ভারসাম্য করা, মোটর দক্ষতা শেখে।
দলগতভাবে কাজের ধারণা, ভাগাভাগি, সমস্যা সমাধান, অন্যকে সাহায্য করা, সৃজনশীল উপায়ে চিন্তা করা ইত্যাদি শেখে।
মা-বাবার সঙ্গে খেলার মাধ্যমে শিশুরা তাঁদের কাছে নিজেদের অনুভূতি, আবেগ প্রকাশ করা শেখে। আনন্দ বা হতাশা, ভয় বা রাগের মতো অনুভূতিগুলো কীভাবে উদ্যাপন বা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, মা-বাবার সঙ্গে খেলার মাধ্যমে শিশুরা তার সঠিক দিকনির্দেশনা পায়।
আরও পড়ুনঃ
❒ বাবা-মায়ের যে ১০ ভুলের কারণে সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যায়
❒ যে পাঁচ অভ্যাস থাকলে বুঝবেন আপনার শিশুর ভবিষ্যৎ সফল
❒ শিশুর ঘন ঘন হেঁচকি তোলা কারণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার
❒ যেসব বিষয়গুলো শিশুর সঙ্গে কখনোই করবেন না
মা-বাবার সঙ্গে খেলার মাধ্যমেই শিশু প্রথম বন্ধু তৈরি ও সামাজিকীকরণের ধারণা পায়।
মা-বাবার মানসিক চাপ কমানোর উপায় হতে পারে শিশুর সঙ্গে খেলা। খেলার মাধ্যমে সন্তান ও মা-বাবা উভয়ের ‘লাভ হরমোন’ অক্সিটোসিন নিঃসরণ হয়। ভালোবাসায় মোড়া শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধন তৈরিতে তাই শিশু সন্তানের সঙ্গে খেলা করুন।
এ ছাড়া, বাবা-মা ও শিশু সবার মস্তিষ্কে যে সুখস্মৃতি জমা হচ্ছে, সেটাকেও কোনোভাবে ছোট করে দেখার উপায় নেই।
সূত্র: এক্সচেঞ্জ ফ্যামিলি সেন্টার
❑ মা ও শিশুর যত্ন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ ছেলেসন্তানকে যে ৫টি জিনিস অবশ্যই শেখাবেন