আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: শিশুর ঠোঁটে চুমু দিলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি । শিশু লালন-পালন সহজ বিষয় নয়। পৃথিবীর অনেক কঠিন কাজের মধ্যে এটিও একটি। কখনও কখনও আদরের আতিশয্যে আমরা এমন কিছু করি, যেটি শিশুকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। শিশুকে আদর করার সময় অনেকে ঠোঁটে চুমু দেন বা শিশুর ঠোঁটের সঙ্গে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করেন। এটি শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশুর ঠোঁটে চুমু দিলে সে হারপেস সিমপ্ল্যাক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। এটি বড়দের জন্য তেমন অসুবিধার বিষয় নয়। তবে খুব ছোট শিশু এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারে না। এটি শিশুর মৃত্যুর কারণও ঘটাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ করে যেসব খাবার
হারপেস সিমপ্লেক্স ভাইরাস সংক্রামক এবং খুব প্রচলিত রোগ। এটি সাধারণত ঠোঁটকে আক্রান্ত করে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের যে সব সমস্যা হয়:
❖ জ্বর
❖ অস্বস্তি
❖ ঠোঁটে চুলকানি বার ঠোঁট জ্বালাপোড়া
❖ শরীরে ফোলাভাব
❖ মাড়িতে লাল ভাব
❖ ঠোঁট, মুখে ঘা হওয়া।
ভাইরাসটি ঠোঁটে আক্রমণ করে শরীরের অন্যান্য জায়গাও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন— লিভার, মস্তিষ্ক ইত্যাদি অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
যেকোনো রোগ বাধিয়ে ফেলার আগেই প্রতিরোধ করা উচিত। অর্থাৎ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে শিশুদের আদর করার সময় ঠোঁটে চুমু দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শই দেন বিশেষজ্ঞদের।
আমেরিকায় এ রকম একটি ঘটনা ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকরা মনে করেছেন- শিশু মারিয়ানাকে পরিবারের বাইরের কেউ চুমু দিয়েছিলেন। আর সে কারণে তার শরীরে মেনিঞ্জাইটিস এইচ এস ভি-১ এর ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যাতে মারিয়ানার মৃত্যু হয়।
১ জুলাই ২০১৭ সালে আমেরিকার আইওয়াতে জন্ম হয়েছিল মারিয়ানা সিফ্রিটের। সুন্দর স্বাস্থ্যবান বাচ্চা ছিল সে। ৭ জুলাই, তার মা-বাবার বিয়ের অনুষ্ঠানের মাত্র দুঘণ্টা পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হলো। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখলেন সে মেনিঞ্জাইটিস এইচ এস ভি-১ এ আক্রান্ত। যা কি না হারপিস মেনিঞ্জাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয়েছে। এই ভাইরাস সেক্সুয়াল কন্ট্যাক্টের দ্বারা ট্রান্সমিটেড হতে পারে। মা থেকে সন্তানের মধ্যেও ছড়াতে পারে। কিন্তু মারিয়ানার বাবা-মাকে পরীক্ষা করে ফল নেগেটিভ পাওয়া গেল।
সর্বশেষ খবর পেতে আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ এর গুগল নিউজ চ্যানেলটি ফলো করুন ।
সুতরাং ডাক্তাররা অনুমান করলেন তাদের বাড়িতে কোনো ব্যক্তি এসেছিল যে ওই রোগের ক্যারিয়ার ছিল এবং মারিয়ানার ঠোঁটে চুম্বন করেছিল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দুদিনের মধ্যে মারিয়ানাকে ৬ বার ব্লাড ট্রান্সফিউসন করা হয়েছিল। কিন্তু তার কিডনি এবং লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল।
১১ জুলাই নিকোল সিফ্রিট ফেসবুকে পোস্ট করলেন তার বাচ্চার ব্রেন হার্ট লাং ‘স্টপড ফাংশনিং’। পরদিন ১২ জুলাই সকালে মারিয়ানার মৃত্যু হয়। তাই কেউ আদিখ্যেতা করে আপনার শিশুকে চুমু খেতে চায়, তাকে দরজার বাইরে বার করে দিন। শিশুর জীবনের বিনিময়ে কোনো ভদ্রতা নয়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
আরও পড়ুনঃ চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিস্ময়কর সাফল্য কৃত্রিম লিভার