আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: শিমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা । শীতের সবজির মধ্যে শিম অন্যতম। রান্নায় স্বাদ বাড়াতে শীতের এ সবজির জুড়ি নেই। শিমের পাশাপাশি শিমের বিচির চাহিদাও এখন বাজার জুড়ে। ঠান্ডা কনকনে বাতাসে গরম গরম শিম, মাছের ঝোল শীতের দুপুরে ভোজন রসিকদের অন্যতম আকর্ষণ। অনেকেই আবার কেবল শিমের বিচি দিয়ে রাঁধেন নানা পদের রান্না।
তাই শীতের সকাল থেকে বাজারে যেমন শিম চোখে পড়ে তেমনি আবার হেঁসেলেও নানা পদের সবজির মাঝে শিম লক্ষ্য করা যায় প্রায় প্রতিদিন। অন্যদিকে মৌসুমি এ শীতের সবজি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম শিমে আছে ৮৬.১ গ্রাম জলীয় অংশ এবং খনিজ উপাদান আছে ০.৯ গ্রাম, আঁশ ১.৮ গ্রাম সঙ্গে ক্যালোরিও ৪৮ কিলো। এর পাশাপাশি শিম থেকে আরও পাবেন ৩.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ২১০ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম ও ১.৭ মি. গ্রাম লৌহসহ নানা উপকারী গুণাগুণ। মৌসুমি এ সবজি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়াবে তেমনি সুস্থ হতেও কাজ করবে।
বিশেষ করে গর্ভবতী মা এবং অনাগত সন্তানের পুষ্টি যোগাতে শিম বেশ কার্যকর। এ ছাড়া কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে এবং কোলন ক্যানসার থেকে সুরক্ষিত রাখতে আপনি খাবারের তালিকায় যুক্ত করতে পারেন শিম। অন্যদিকে নিয়মিত শিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে অনেকাংশে। যারা প্রায়শই পেটের সমস্যায় ভুগেন তাদের জন্য আদর্শ একটি খাবার শিম।
এ ছাড়া রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিম বেশ কার্যকর। যাদের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ কিংবা র্যাশ প্রায়শই হয় তারা নিয়মিত শিম খেতে পারেন। অন্যদিকে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে শিমের বিচি রাখতে পারেন খাবার তালিকায়। এতে আছে ভিটামিন বি সিক্স। যা আপনার স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ রাখতে সহয়তা করে। তাই শীতের এ সবজি রাখুন খাবার তালিকায় আর ঋতুভেদে থাকুন সুস্থ প্রাণবন্ত।
আরো পড়ুন: মুলার পুষ্টি গুণ ও নানা উপকারিতা
শিমের কিছু উপকারিতা
শিম নিয়মিত খাওয়া গেলে নানা দিক থেকে উপকার হয় শরীরের। চলুন শিমের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
রোগের প্রতিকার এবং প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে।
কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ
অনেকটা ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়াবেটিস সুরক্ষায়
শর্করা ও চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস বশে রাখার ক্ষমতা আছে।
চুল পড়া কমায়
প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ থাকায় চুল পড়ার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে শিম।
অস্থিসন্ধির জন্য
হাড়ের সংযোগস্থলের সুরক্ষা দেয় এবং অস্ট্রিও আথ্রাইটিস রোগ হওয়ার শঙ্কা কমায়।
আরো পড়ুন: থানকুনি পাতা কেন খাবেন?
ত্বকের আর্দ্রতা দূর করে
অনেকটা পানিও থাকে এই সবজিতে। ফলে ত্বকের আর্দ্রতা দূর করতেও সাহায্য করে শিম।
হৃদরোগীদের জন্য
যারা নিয়মিত শিম খান, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা ফাইটোকেমিক্যালস হৃৎপিণ্ডকে সুরক্ষা দেয়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
এই সবজির পাচক আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর স্যাপোনিনস রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে।
ওজন কমাতে
শিমের আঁশ দ্রুত ভরে ফেলে পাকস্থলী। এছাড়া রক্তে চিনি আসার পারিমাণও কমিয়ে রাখে। শরীরকে শক্তি দেয়। অন্যদিকে, ওজন বাড়তে বাধা দেয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অসাধারণ এক ক্ষমতা আছে শিমে। এতে ইসোফ্লাবোনেস, ফাইটোস্টেরলসের মতো ক্যানসার-প্রতিরোধী উপাদান থাকে।
শিমের রয়েছে কিছু অপকারিতাও
কারো কারো শিম খেলে মাইগ্রেনের তীব্রতা বাড়তে পারে। মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শিম খাওয়া বাদ দিতে হবে। যারা বিষণ্নতার জন্য মনো-অ্যামাইন অক্সিডেস ইনহিবিটর খান, তাদের জন্য শিম বাদ দেওয়াই ভালো। এই সবজির উপাদান এসব ওষুধের সংস্পর্শে এসে রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর তেজপাতা