আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: মা–বাবা সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য যা করবেন । ‘বাবা, কেমন আছিস? কতবার ফোন দিলাম, ধরলি না। এত ব্যস্ত! মায়ের ফোন ধরার সময় পাস না? আচ্ছা শোন, ঠিকমতো খেয়ে নিস। আর নিজের যত্ন নিস।’
কথাগুলো আপনার কাছে পরিচিত লাগতে পারে। ছুটির দিনে ফোনে আপনি হয়তো মায়ের কাছ এমন কথা শুনে থাকবেন। এ রকম সময়ে আপনি মাকে কথা দেন যে নিয়মিত ফোন করবেন, খোঁজখবর নেবেন। তারপর আবার আগের জীবনে ফিরে যান।
কানাডার কুইনস ইউনিভার্সিটির এক নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, সন্তানদের মা–বাবার সঙ্গে থাকার সঙ্গে তাঁদের সুস্থভাবে বেশি দিন বেঁচে থাকার ঘনিষ্ঠ ও ইতিবাচক সম্পর্ক আছে। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, একাকিত্বের সঙ্গে মানুষের হুট করে বুড়ো হয়ে যাওয়ার ও বয়সজনিত বিভিন্ন রোগ ও সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সরাসরি প্রভাব আছে। কানাডার ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ৩৮ শতাংশই ভুগছেন একাকিত্বে।
গবেষণাটি ১ হাজার ৬০০ জন বয়স্ক মানুষের ওপর ২০ বছর ধরে পরিচালিত হয়েছে। তাঁদের সবার বয়স ৬৫–৮১–এর মধ্যে। এই গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা একাকিত্বে ভুগেছেন, তাঁদের গড় আয়ু যাঁদের সঙ্গে সন্তান, সঙ্গী বা বন্ধু ছিল, তাঁদের তুলনায় কম। এই গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ পুরোপুরি একা হয়ে যাওয়ার মাত্র ৬ বছরের মধ্যে মারা গেছেন। অন্যদিকে যাঁদের সঙ্গে সন্তান বা সঙ্গী ছিল, তাঁদের মধ্যে পরবর্তী ছয় বছরে মারা যাওয়ার হার ৭ শতাংশ।
বয়স্ক মা–বাবাকে সময় দেবেন কেন?
আপনি হয়তো ২ দশক আপনার মা–বাবার সঙ্গে ছিলেন। তারপর হঠাৎ করেই তাঁদের জীবন থেকে আপনি ‘নেই’ হয়ে গেলেন। নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ছন্দপতন ঘটল মা–বাবার জীবনে। তাঁদের দুজনের কেউ একজন যদি না থাকেন, অপরজন আরও একা হয়ে যান।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যকারিতা হারাতে থাকে। সে সময় কেউ যদি একা থাকেন, তাঁর যদি বেঁচে থাকার কোনো লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বা তাগিদ না থাকে, তাহলে সেই প্রক্রিয়া আরও দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। সামাজিক বা পারিবারিক জীবনযাপন না করলে বৃদ্ধদের বয়সজনিত জটিলতা বাড়ে।
একাকিত্ব থেকে দুশ্চিন্তার শুরু। আর দুশ্চিন্তা ডেকে আনে হাজারো শারীরিক ও মানসিক অসুখ। অবজ্ঞা ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ার কারণেও নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুনঃ
❒ আপনার বন্ধুর সংখ্যার উপর নির্ভর আপনি মানুষ হিসেবে কেমন
❒ আপনি ভাগ্যবান কারণ আপনার বোন আছে
❒ ১৫ লক্ষণে বুঝবেন সে আপনাকে সত্যিই ভালোবাসে
❒ জেন-জিদের ডেটিং ডিকশনারির আলোচিত শব্দগুলোর মানে জেনে নিন
অনেকেই প্রিয়জন হারানোর ধাক্কা, সন্তান বা জীবনসঙ্গীর মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে পারেন না। সেটা ভেতরে ভেতরে মারাত্মক ক্ষতি করে। কর্মজীবী মানুষ বেকার হয়ে গেলে, কাজের মধ্যে না থাকার ফলে নানা জটিলতা তৈরি হয়। এ কারণে অনেকেই অবসরের পর হঠাৎ স্ট্রোক করেন।
তাই আপনি যদি চান যে আপনার মা–বাবা সুস্থভাবে বেঁচে থাকুক, তাহলে তাঁদেরকে সময় দিন। তাঁদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। তাঁদের সঙ্গে গল্প করুন। বিকেলে হাঁটতে বের হন। ঘুরতে নিয়ে যান। মা–বাবাকে ছোট ছোট দায়িত্ব দিন। দূরে থাকলেও নিশ্চিত করুন, তাঁরা যাতে একা না হয়ে যান। নিদেনপক্ষে সারা দিন কী হলো, জানতে চান। সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করুন।
সূত্র: ফিউচার কেয়ার গ্রুপ ও মাইন্ডসেট থেরাপি
❑ সম্পর্ক থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ আপনার কোন বৈশিষ্ট্যগুলো টক্সিক সঙ্গীকে আকর্ষণ করে?