আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: মানুষকে অভিশাপ দেওয়ার কঠিন পরিণতি । মানুষ ও যেকোনো প্রাণী বা বস্তুকে অভিশাপ দেওয়া কঠিন গুনাহের কাজ। হাদিসে অভিশাপ দেওয়াকে হত্যাতুল্য অপরাধ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ঈমানদার ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া তাকে হত্যা করার সমতুল্য।’ (সহিহ বুখারি: ৬০৪৭)
মনে রাখতে হবে সবকিছুই মহান আল্লাহর সৃষ্টি। কোনো কিছুর মালিক আমরা নই। এমনকি একটি গাছের শুকনো পাতাও মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং কাউকে বা কোনোকিছুকে অভিশাপ দেওয়ার অধিকার মানুষের নেই। আল্লাহর রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা একে অপরকে আল্লাহর লানত, তার গজব ও জাহান্নামের অভিশাপ দিয়ো না।’ (তিরমিজি: ১৯৭৬)
অভিশাপ দেওয়া ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ‘কেয়ামতের দিন অভিশাপকারীরা সুপারিশ করতে পারবে না এবং সাক্ষ্যপ্রদানও করতে পারবে না।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯৮)
আরও পড়ুনঃ গোপন দান আল্লাহর অধিক পছন্দনীয়
সমাজে দেখা যায়, অনেকেই ঝগড়ার সময় একে অপরকে গালি-গালাজ ও অভিশাপ দিতে থাকে। অথচ এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে লানত বা অভিশাপ দেওয়া সর্বাবস্থায় হারাম ও কবিরা গুনাহ। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি কখনও দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি: ১৯৭৭)
নির্দিষ্ট কোনো অমুসলিমকেও লানত করা যাবে না, যতক্ষণ না কুফরি অবস্থায় তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হবে। তবে কুফরি অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত জানা থাকলে তার ওপর লানত করার অবকাশ রয়েছে। (ফতোয়ায়ে শামি: ২/৮৩৬)
যে লানত বা অভিশাপ দেবে, সে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তাহলে ওই অভিশাপ তার দিকে যায় না। বরং অভিশাপকারীর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যখন কোনো বান্দা কোনো ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়, তখন অভিশাপ আকাশে চলে যায়, আকাশের দরজাগুলো তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়, অতঃপর তা জমিনের দিকে নেমে আসে। তখন জমিনের দরজাগুলোও তার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়, অতঃপর তা ডানে বাঁয়ে ঘুরতে থাকে, যখন কোনো উপায় না পায়, তখন যাকে অভিসম্পাত করা হয়েছে, সে যদি এর যোগ্য হয়, তাহলে তার প্রতি পতিত হয়। অন্যথায় অভিশাপকারীর দিকেই ধাবিত হয়।’ (আবু দাউদ: ৪৯০৭)
তাই রাগ হলেই কাউকে অভিশাপ দিতে নেই। বরং হেদায়েতের দোয়া করা উচিত। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এ ধরনের নীচু মানসিকতার কাজ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
আরও পড়ুনঃ ছোট্ট বাক্যটির মর্যাদা আসমান-জমিনের চেয়েও বেশি