আইসিটি ওয়ার্ল্ড নিউজ: বৃষ্টি হলে মাটির ঘ্রাণ আসে কেন ? বৃষ্টি শুরু হলেই বাতাসে ভেসে ওঠে এক বিশেষ ধরনের ঘ্রাণ—যেটাকে আমরা বলি মাটির গন্ধ বা বৃষ্টির গন্ধ। এই গন্ধটা কেন আসে? এটা কি শুধুই আমাদের কল্পনা? না, এর পেছনে রয়েছে একেবারে বৈজ্ঞানিক কারণ।
আসল গন্ধের উৎস: পেট্রিকোর (Petrichor)
বৃষ্টির পরে যে ঘ্রাণ আমরা পাই, সেটার বৈজ্ঞানিক নাম পেট্রিকোর। এই শব্দটি ১৯৬৪ সালে দুইজন অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী—আইজাবেল জয় বেয়ার এবং রিচার্ড গ্রিন—প্রথম ব্যবহার করেন।
কিভাবে তৈরি হয় এই ঘ্রাণ?
১। Actinobacteria: মাটিতে থাকা বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া, বিশেষ করে Actinomycetes বা Actinobacteria, শুকনো অবস্থায় কিছু নির্দিষ্ট যৌগ তৈরি করে। এর মধ্যে একটি হলো জিওসমিন (Geosmin)—যেটিই সেই পরিচিত মাটির গন্ধের মূল উপাদান।
২। বৃষ্টি ও গ্যাস মুক্তি: যখন বৃষ্টি পড়ে, তখন পানির ফোঁটা মাটিতে আঘাত করলে ছোট ছোট এয়ার বাবল তৈরি হয়। এই বাবল ফেটে যায় এবং বাতাসে *জিওসমিন*সহ অন্যান্য গন্ধযুক্ত যৌগ ছড়িয়ে দেয়।
৩। গাছের তেল: কিছু গাছপালা তাদের পাতা বা গায়ে প্রাকৃতিক তেল জমা রাখে। বৃষ্টির ছোঁয়ায় এগুলো মাটিতে পড়ে এবং পেট্রিকোর গন্ধে আরও মাত্রা যোগ করে।
আরও পড়ুন:
❒ বিড়াল রাতের অন্ধকারে দেখে কীভাবে?
❒ আলোর গতি কি সব সময় একই থাকে?
❒ চিপসের প্যাকেটে বাতাস থাকে কেন?
❒ বৃষ্টির আগে মেঘ ধূসর হয় কেন?
❒ বিড়ালের পানির প্রতি বিতৃষ্ণা কেন?
❒ চাঁদ না থাকলে পৃথিবীর কী অবস্থা হতে পারে?
কেন এই ঘ্রাণ এত আকর্ষণীয়?
আমাদের মস্তিষ্কের ঘ্রাণ শনাক্ত করার সিস্টেম খুব সংবেদনশীল। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ ৫ বিলিয়ন ভাগ পানির মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ জিওসমিনের ঘ্রাণও বুঝতে পারে!
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা এই গন্ধের প্রতি সংবেদনশীল ছিল কারণ বৃষ্টির আগমন মানে ছিল খাদ্য উৎপাদনের সময়।
বৃষ্টির সাথে মাটির ঘ্রাণ আসাটা কোনো রহস্য নয়, বরং বিজ্ঞান ও প্রকৃতির এক দারুণ মিলন। এটি আমাদের স্মৃতি, আবেগ ও পরিবেশের সাথে এক অদ্ভুত সংযোগ তৈরি করে।
❑ মাথায় কত প্রশ্ন আসে থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: বিড়াল কেন ছোট্ট জায়গা পছন্দ করে?