আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি ম্যারাডোনা । বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনার ১৯৬০ সালে ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ভক্তদের কাছে ‘এল পিবে দে অরো’ (সোনালী বালক) ডাকনামে পরিচিত ম্যারাডোনা তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় আর্জেন্তিনোস জুনিয়র্স এবং নাপোলির হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সে মারা যান ফুটবল জাদুকর ম্যারাডোনা।
আরও পড়ুনঃ একজন ষ্টিভ জবস
সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম তিনি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। অনেকের কাছে তিনি আবার ফুটবল ঈশ্বর, সেরাদের সেরা। যত নামেই ডাকা হোক না কেন, তিনি আর্জেন্টাইন ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। বল পায়ে দক্ষ নিয়ন্ত্রণ, চিতার বেগে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়াসহ আরও অনেক ঐতিহাসিক মুহূর্ত আর গোল বিশ্বসেরা ফুটবলারের বিতর্কে তাকে রেখেছে বেশ উঁচু স্থানে।
ম্যারাডোনার বেড়ে ওঠা আর্জেন্টিনার দক্ষিণ প্রান্তের শহর ভিয়া ফিওরিতোতে। তিন কন্যা সন্তানের পর মা-বাবার প্রথম পুত্র সন্তান তিনি। তার ছোট দুই ভাই হুগো এবং রাউলও পেশাদার ফুটবলার। মাত্র দুই দশকে ছয়টি ক্লাবে পেশাদার ফুটবল খেলেছেন ম্যারাডোনা। ১৬ বছর বয়সের কিছুদিন আগে আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে অভিষেক ঘটে তার। এরপর ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলিসহ নানান ক্লাবে। এর মধ্যে একক কৃতিত্বে নাপোলিকে শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি। অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে ক্লাবটিকে ইতিহাসের সফলতম পর্যায়েও নিয়ে যান তিনি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে তার একক নৈপুণ্যে বিশ্বকাপের সোনালি শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। সেই আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ‘হ্যান্ড অব গড’ ও শতাব্দীর সেরা গোল করেছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপেও দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন। পরের আসরে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হন এ কিংবদন্তি। পড়েন ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞায়। এরপর ম্যারাডোনাকে আর স্বাভাবিক ছন্দে দেখা যায়নি। এরপর ১৯৯৪ সালে তিনি আবার আমেরিকায় আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কত্ব করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অবৈধ মাদক পরীক্ষায় ফেল করার কারণে তাকে আর্জেন্টিনা ফিরে যেতে হয়।
তার জীবনের পরের দিকে ম্যারাডোনা মাদকে আসক্তি নিয়ে সমস্যায় ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে তার শরীরের মাদকের উপস্থিতি ধরা পড়লে তাকে ১৫ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। তার ৩৭তম জন্মদিনে ১৯৯৭ সালে তিনি পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নেন। সেসময় তিনি আর্জেন্টিনার বড় দল বোকা জুনিয়ার্সে খেলছিলেন।
২০ বছরের আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ক্যারিয়ারে ৩৪৬টি গোল করেছেন আর্জেন্টাইন এ মহাতারকা। ২০০৮ সালে মেসিদের কোচ ছিলেন তিনি। তার অধীনে অনেক চড়াই-উতরাই শেষে ২০১০ বিশ্বকাপে টিকিট কাটে আকাশি-নীল শিবির। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪ গোল হজম করে বিদায় নেয় মেসিরা।
ফিফা তাকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করে এবং আর্জেন্টিনাও দ্বিতীয় পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর ম্যারাডোনার ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে। পুরো ক্যারিয়ারে তিনি আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ খেলায় ৩৪টি গোল করেন।
তর্ক-বিতর্ক মিলিয়ে ফুটবল ইতিহাসে অনন্য স্থান তৈরি করেছেন ম্যারাডোনা। বল পায়ে সেই জাদুকরী ফুটবল নিদর্শন রয়ে যাবে যুগ থেকে যুগান্তরে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
আরও পড়ুনঃ সালমান শাহ ছিলেন কালোত্তীর্ণ নায়ক