আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ: বিদ্যুৎ উৎপাদন সংরক্ষণ এবং সঞ্চালন প্রক্রিয়া । বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে জ্বালানি ব্যবহার করে বাষ্প বা অন্য কোনো উপায়ে টারবাইন ঘোরানো হয়, যা জেনারেটরকে চালিত করে বিদ্যুৎ তৈরি করে। এরপর এই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে সাবস্টেশন হয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং সঞ্চালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে বুঝতে পারবেন এর কার্যপ্রণালী এবং বিভিন্ন ধাপ কীভাবে একে অপরের সাথে সম্পর্কিত।
১. বিদ্যুৎ উৎপাদন
বিদ্যুৎ উৎপাদন মূলত শক্তির উৎস থেকে শক্তি তৈরি করে, যা পরে আমাদের ব্যবহারের জন্য পরিবেশিত হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উপায়গুলো হল:
❖ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট: এই প্ল্যান্টে কয়লা, তেল বা গ্যাস পোড়ানো হয়, যা থেকে তাপ শক্তি পাওয়া যায়। এই তাপ শক্তি দিয়ে পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হয় এবং সেই বাষ্পে টারবাইন ঘোরানো হয়, যা জেনারেটরকে চালিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
❖ হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট: জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে পানির গতিবেগকে কাজে লাগানো হয়। জলাধার থেকে পানি নিচে নামানো হলে টারবাইন ঘুরে, এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
❖ পারমাণবিক শক্তি (NUCLEAR ENERGY): পরমাণু শক্তি প্ল্যান্টে ইউরেনিয়াম বা অন্য কোন পারমাণবিক উপাদানকে ভাঙানো হয় (ফিশন), যার ফলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। সেই তাপ দিয়ে বাষ্প তৈরি হয় এবং টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
❖ সৌরশক্তি: সৌর প্যানেল (solar panels) সূর্য থেকে শক্তি শোষণ করে, যা সেমিকন্ডাকটর উপাদানের মাধ্যমে বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
❖ বায়ু শক্তি: বায়ু ঘূর্ণনের মাধ্যমে টারবাইন চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় (wind energy)।
২. বিদ্যুৎ সংরক্ষণ
বিদ্যুৎ সংরক্ষণ বা সঞ্চিত রাখা মূলত দুটি প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে:
❖ ব্যাটারি ব্যবহার: বিদ্যুৎ ব্যাটারিতে সঞ্চিত থাকে, যেমন মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন ডিভাইসগুলোর ব্যাটারি। কিছু বড় স্কেলে, যেমন সৌরশক্তি বা বায়ুশক্তি উৎপাদন প্ল্যান্টে, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যাটারি ব্যাঙ্কে সংরক্ষিত হতে পারে, যা পরে শীর্ষ চাহিদার সময় ব্যবহৃত হয়।
❖ পাম্পেড স্টোরেজ হাইড্রো পাওয়ার: এতে উচ্চস্থানে পানি পাম্প করা হয় যখন বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি থাকে। পরে এই পানি নিচে নামানোর মাধ্যমে টারবাইন চালানো হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
৩. বিদ্যুৎ সঞ্চালন
বিদ্যুৎ সঞ্চালন হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থান থেকে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া। এটি মূলত নিম্নলিখিত ধাপগুলোতে বিভক্ত:
❖ ট্রান্সফরমার: বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট থেকে তৎক্ষণাৎ উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ প্রেরণ করা হয়। তবে এটি স্থানান্তর করতে একে উচ্চ ভোল্টেজে রূপান্তর করা হয়। তারপর, গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর জন্য, এটি একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফরমারে পুনরায় কম ভোল্টেজে পরিণত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ
❒ বিনা শর্তে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ
❒ মোবাইল ইন্টারনেট ডেটা এবং ব্রডব্যান্ডের পার্থক্য জানুন
❒ ইন্টারনেট ডেটা ও এর কার্যকরী প্রক্রিয়া
❒ অনলাইনে বাস-ট্রেন ও বিমানের টিকিট কাটবেন যেভাবে
❒ ডোমেইন রেটিং কি এটি কিভাবে বাড়ানো যায়?
❒ এমআরআই মেশিন রুমে যাওয়ার আগে যা অবশ্যই জানা দরকার
❖ এলটিএস (High Voltage Transmission Lines): উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ টাওয়ার বা ক্যাবলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
❖ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম: উচ্চ ভোল্টেজকে কম ভোল্টেজে রূপান্তরিত করার পর, এটি বিভিন্ন সেক্টরে সঞ্চালিত হয়, যেখানে গ্রাহকরা এটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং সঞ্চালন একটি জটিল, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা আধুনিক সমাজের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য অপরিহার্য। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন উৎস ব্যবহার করা হয়, এবং এই বিদ্যুৎ সংরক্ষণ ও সঞ্চালন প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়।
❑ জেনে রাখুন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ এথিক্যাল হ্যাকিং কি এবং কিভাবে এটি নিরাপদ ও প্রয়োজনীয়?