আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: বিএমডব্লিউ সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য । গাড়িপ্রেমীরা বিএমডব্লিউ নিয়ে মাতামাতি করতেই পারেন, স্বাভাবিক। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে এমন সব ছবি পোস্ট করছেন যার সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা ‘বিএমডব্লিউ গাড়ি’র কোনো সম্পর্কই নেই।
নেটিজেনদের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিকে নিয়ে আছে অনেক চমকপ্রদ তথ্য। তেমনই ১০টি তথ্য জেনে নেয়া যাক।
১. উড়োজাহাজের ইঞ্জিন তৈরি দিয়ে শুরু
১৯১৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল বিএমডব্লিউ (বাভারিয়ান মোটর ওয়ার্কস)। তখন প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল বাভারিয়ান ফ্লুগজেইগ (জার্মান ভাষায়-বিমান) মোটর ওয়ার্কস বা বিএফডব্লিউ। তাদের মূল কাজ ছিল জার্মান যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি। ১৯১৭ সালে নাম পরিবর্তন করে বিএমডব্লিউ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।
২. লোগোর রহস্য
অনেকে মনে করেন, বিএমডব্লিউর লোগো তৈরি হয়েছে তাদের অতীতকে কেন্দ্র করে। অর্থাৎ উড়োজাহাজের প্রপেলার থেকে এটি এই লোগো নেয়া। আসলে ব্যাপারটি সেরকম না। বরং বাভারিয়ান পতাকার দুই রং- নীল ও সাদা দিয়ে লোগে তৈরি করে বিএমডব্লিউ। বাভারিয়ান ফুটবল ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের লোগোতেও এই ধরনের প্যাটার্ন দেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ হিটলার সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
৩. ইঞ্জিনের আদলে হেডকোয়ার্টার
বিএমডব্লিউর হেডকোয়ার্টার জার্মানির মিউনিখে। দূর থেকে যার দিকে তাকালে মনে হয়, একটি চার সিলিন্ডারের ইঞ্জিন। এমনভাবে পুরো ভবনের নকশা করা হয়েছে, যাতে একটি সেন্ট্রাল হাব থেকে এটি পরিচালনা করা যায়।
ঠিক যেভাবে গাড়ির ইঞ্জিন পুরো গাড়িটিকে চালিয়ে নিয়ে যায়। ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭২ মিউনিখ অলিম্পিককে সামনে রেখে। ১৯৭৩ সালে ভবনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
৪. মোটরসাইকেলও তৈরি করে বিএমডব্লিউ
বিশ্বজুড়ে গাড়ির জন্য বিখ্যাত বিএমডব্লিউ। কিন্তু একসময় তারা নিয়মিত মোটরসাইকেল তৈরি করত। ১৯২৩ সালে তৈরি বিএমডব্লিউ প্রথম মোটরসাইকেলের নাম ছিল বিএমডব্লিউ আর৩২। এ ছাড়া ১৯৩৭ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির মোটরসাইকেল তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। যার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ২৭৮ কিলোমিটার!
আরও পড়ুনঃ ইউরেনিয়াম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
৫. ইলেকট্রিক কার
বলা হয়, আগামীর বিশ্ব ইলেকট্রিক কারের। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির জয়জয়কার এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অথচ বিএমডব্লিউ এই ট্রেন্ডে পা দিয়েছিল সত্তরের দশকেই! ১৯৭২ সালে প্রথম ইলেকট্রিক কার তৈরি করে তারা!
৬. ট্রেন ও উড়োজাহাজের ভেতরের সজ্জা করে বিএমডব্লিউ
উড়োজাহাজের ইঞ্জিন তৈরি আগেই বন্ধ করে দিয়েছে বিএমডব্লিউ। কিন্তু বিমানের ভেতরের সজ্জার কাজ এখনো করে। তাদের ডিজাইন স্টুডিও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, আভা এয়ারের মতো জনপ্রিয় কোম্পানির অন্দরের কাজ করে। এমনকি জার্মানির অত্যাধুনিক ৭৭৫টি ট্রেনের কাজও করে তারা।
৭. এখনো পুরোনো পার্টস বানায়
আপনি নিশ্চিন্তে পুরনো মডেলের একটি বিএমডব্লিউ কিনতে পারেন। কারণ তারা এখনো পুরনো গাড়ির পার্টস তৈরি করে। বিএমডব্লিউর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ন্যায্যমূল্যেই আপনার গাড়ির পার্টস পাঠিয়ে দেবে।
আরও পড়ুনঃ রহস্যময় এই সেতু থেকে কুকুর কেন লাফিয়ে আত্মহত্যা করে
৮. বিএমডব্লিউর সবচেয়ে দামি গাড়ি
বিএমডব্লিউ এম ৭৬০ আই এক্সড্রাইভ বর্তমান সময়ে কোম্পানিটির সবচেয়ে দামি গাড়ির মডেল। বিলাসবহুল এই সেডান গাড়ি মাত্র ৩ দশমিক ৬ সেকেন্ডের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার গতি তুলতে পারে। এই গাড়ির বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ।
৯. বিএমডব্লিউর মালিকানাতেই রোলস রয়েস
রোলস রয়েসকে বিবেচনা করা হয় গাড়ির ইতিহাসের সবচেয়ে বিলাসবহুল এবং অভিজাত হিসেবে। ১৯৯৮ সালে গাড়ি প্রস্তুতকারী ব্রিটিশ এই কোম্পানি কিনে নেয় বিএমডব্লিউ। ২০০৩ সাল থেকে রোলস রয়েস রাগি তৈরি করে আসছে বিএমডব্লিউ।
১০. প্রায় বিক্রিই হয়ে গিয়েছিল বিএমডব্লিউ
১৯৫৯ সালে প্রায় দেউলিয়া হওয়ার অবস্থায় চলে গিয়েছিল বিএমডব্লিউ। ওই সময় তাদের কিনে নেয়ার চেষ্টা করেছিল প্রতিদ্বন্দ্বী মার্সিডিজ বেঞ্জ। তবে শেষ পর্যন্ত স্টকহোল্ডারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: কারবাজ
❑ জানা-অজানা বিশ্ব থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ জেন-জি ও মিলেনিয়ালস প্রজন্ম ফোনকল এড়িয়ে চলে কেন?