আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ: বারবার হাই ওঠা কি শরীরের বিপদের সিগনাল ? হাই তোলা আমাদের শরীরের একটি সাধারণ ও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু যখন এটি খুব ঘন ঘন হতে থাকে, তখন অনেকেই চিন্তিত হন—এটা কি অলসতার লক্ষণ, না শরীর বা মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা হচ্ছে? চলুন জেনে নিই, বিজ্ঞান কী বলে এই বিষয়ে।
হাই ওঠার পেছনে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা
হাই তোলার মূল উদ্দেশ্য হলো—মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখা ও শরীরকে জাগ্রত রাখা। আমাদের মস্তিষ্ক যখন বেশি গরম বা ধীরগতির হয়ে পড়ে, তখন শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাই তোলে, যেন ঠান্ডা বাতাস নিয়ে ব্রেনকে রিফ্রেশ করা যায়।
বারবার হাই ওঠার সম্ভাব্য কারণ
১। ঘুমের ঘাটতি ও ক্লান্তি: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ব্রেন স্লো হয়ে যায়। তখন শরীর হাই দিয়ে সতেজ থাকার চেষ্টা করে।
২। মনোযোগের ঘাটতি ও বিরক্তি: একঘেয়ে কাজ বা বিরক্তিকর পরিবেশে হাই ওঠে বেশি, কারণ মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকার উৎসাহ পায় না।
৩। অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্যহীনতা: যদি শরীরে অক্সিজেন কমে যায় বা CO₂ বেড়ে যায়, তখন হাই উঠতে পারে।
৪। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু স্নায়ুবিষয়ক ওষুধ (যেমন: সেরোটোনিন অ্যাগনিস্ট, ট্রানকুইলাইজার) অতিরিক্ত হাই তোলার কারণ হতে পারে।
৫। নিউরোলজিক্যাল সমস্যার লক্ষণ: বিরল ক্ষেত্রে, ঘন ঘন হাই ওঠা হতে পারে ব্রেইন টিউমার, মৃগী, স্ট্রোক বা মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের পূর্বাভাস।
৬। হার্টের সমস্যা: গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু হৃদরোগে (যেমন ভেগাল রিফ্লেক্সের গণ্ডগোল) অতিরিক্ত হাই ওঠে।
কিছু অতিরিক্ত তথ্য:
❖ হাই তোলার উপকারিতা: হাই তোলার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়, যা মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তোলে।
❖ অন্যকে হাই তুলতে দেখলে হাই ওঠা: অন্যকে হাই তুলতে দেখলে আমাদেরও হাই ওঠে, কারণ এটি একটি সংক্রামক প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন:
❒ ঘরে খালি পায়ে হাঁটা নাকি স্যান্ডেল পরে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
❒ দুপুরে যে ৪ খাবার খেলেই পড়বেন বিপদে!
❒ গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রুত সারবে নিয়মিত লেবুপানি খেলে
❒ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কেন খাবেন?
❒ ছড়িয়ে পড়ছে মরণব্যাধি ভাইরাস মারবার্গ
❒ পুরুষের বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা
কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?
❖ হাই ওঠা যদি ঘণ্টায় বহুবার হয়।
❖ সঙ্গে মাথা ঘোরা, ঝিমুনি, বুক ধড়ফড় করা থাকে।
❖ মনে হয় মনোযোগ বা স্মৃতিশক্তি কমছে।
❖ হঠাৎ করে শুরু হলে এবং থামছে না।
সবসময় বার বার হাই ওঠা কোনো গুরুতর সমস্যা বোঝায় না, তবে তা আমাদের শরীর বা মস্তিষ্কের ক্লান্তি বা অন্য সমস্যার সংকেত হতে পারে। তাই যদি এটা নিত্যকার জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে, তাহলে অবহেলা না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
❑ স্বাস্থ্যকথা থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: শীতে ভিটামিন ডি’র মাত্রা বাড়ানোর উপায়