আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ ও মুক্তির উপায় । ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় বর্তমানে অনেকেই ভুগছেন। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা আবার দু’ভাবে বিভক্ত- অ্যালোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার মূল কারণ হলো মদ্যপান। তবে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার অ্যালকোহল সেবনের সঙ্গে যুক্ত নয়। যে কারও এ সমস্যাটি হতে পারে। তবে জীবনযাত্রার অনিয়মের ফলেই এ রোগ বেশি দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে,, সবার শরীরেরই বিভিন্ন স্থানে জমে ফ্যাট। যাদের পেটে চর্বির পরিমাণ বেশি, তাদের লিভারে ফ্যাটের আস্তরণ বেড়ে যায়। আস্তে আস্তে পুরো লিভারের উপরই চর্বির আস্তরণ পড়ায় শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটি তার নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে না। ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হলে এর থেকে হতে পারে লিভার সিরোসিস।
ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ-
প্রাথমিক অবস্থায় রোগের কোনো লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও, সমস্যা কিছুটা বাড়লে পেটের উপরের ডানদিকে ব্যথা হয়। পেট ভারী হয়ে থাকে। খাবার খেলে হজম হয় না। এই সমস্যায় প্রায়ই ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ ক্যান্সারের ১০টি প্রাথমিক লক্ষণ
● অনিয়ন্ত্রিত বা অনিয়মিত খাদ্যাভাসের ফলে লিভারের ওপর চাপ পড়ে। ফলে হজমে সমস্যা হয় ও খাবারে অরুচি চলে আসে।
● খাবার সময় বমি বমি ভাব হতে পারে।
● অনেক সময় পেট ফুলে যেতে পারে।
● পেট ফুলে যাওয়ার সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে যেতে পা…
● হঠাৎ করেই ওজন কমে যেতে পারে।
● ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হলে মাথাব্যথা, ডিপ্রেশন বা মন খারাপ এসবও হতে পারে।
ঝুঁকিতে আছেন যারা-
● টাইপ টু ডায়াবেটিস আছে যাদের।
● মেনোপজ শুরু হয়েছে এমন নারীদের।
● স্থূলতা আছে যাদের।
● শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা যাদের বেশি।
● দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যারা।
যে ধরনের খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে-
● অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে যারা আক্রান্ত আছেন, তাদের প্রথমেই অ্যালকোহল গ্রহণ করা বন্ধ করতে হবে।
● আপনার যদি দুধ চা খাওয়ার অভ্যাস থাকে বা কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে তৈরি চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সেই অভ্যাস পরিহার করতে হবে। ঘন দুধের তৈরি খাবার বা ফুলক্রিম মিল্ক খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
● ফ্যাটি লিভার দূর করতে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
●ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আপনার হজমে সাহায্য করবে, ক্ষুধাটাকে দমিয়ে রাখবে এবং আপনার পেট অনেক বেশি সময় পর্যন্ত ভরা থাকবে৷ তাই খাদ্যতালিকায় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
● বিভিন্ন রঙের শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। যেমন – বিটরুট, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, শিম, বরবটি, ব্রকলি ইত্যাদি। এছাড়াও আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় শাক পাওয়া যায়। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন যেকোনো একটি দেশীয় শাক।
● অনেকেই ভেবে থাকেন ফ্যাটি লিভার হলে প্রোটিন গ্রহণ একদমই কমিয়ে দিতে হবে। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। আপনাকে অবশ্যই উন্নত মানের প্রোটিন খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। তবে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন – যে মাছটি খাচ্ছেন সেই মাছের একেবারে চর্বির অংশটি বাদ দিয়ে খেতে হবে। অনেকেই মুরগির চামড়া খেতে পছন্দ করেন, তবে ফ্যাটি লিভার হলে অবশ্যই মুরগি চামড়া ছাড়িয়ে খেতে হবে৷ আপনি মাঝেমধ্যে গরুর মাংস খেতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে চর্বির অংশটি বাদ দিয়ে শুধু সলিড ১ বা ২ টুকরো মাংস খেতে পারবেন ১ বেলা।
● আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি সেদ্ধ ডিম রাখতে পারেন। ডেইরি প্রোডাক্টের এর মধ্যে খেতে পারেন টক দই, নন ফ্যাট মিল্ক।
● এছাড়াও দেশীয় মৌসুমী বিভিন্ন ফল আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করতে পারেন।
● খাবার তৈরিতে তেলের ব্যবহার কমাতে হবে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মসলাজাতীয় খাবার কম খেতে হবে।
সূত্র: ইন্টারনেট
আরও পড়ুনঃ উচ্চ রক্তচাপের যে লক্ষণ হতে পারে বিপজ্জনক