আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: প্রি-ম্যাচিউর শিশু জন্ম থেকেই দুর্বল । সাধারণভাবে ৩৪ সপ্তাহ গর্ভকালের কম নবজাতক শিশুর মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া, চোষা ও গিলতে পারা—এই তিনের সমন্বয় গড়ে ওঠে না। ফলে এ সময়টা নবজাতকের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
জন্মের সময়ের ওজনের ওপর ভিত্তি করে প্রি-ম্যাচিউর বেবির নানা অবস্থা লক্ষ করা যায়। যেসব অকালপ্রজ নবজাতক এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ গ্রাম নিয়ে জন্মায়, জন্মমুহূর্ত থেকে সে খুব দুর্বল থাকে। ঘাড় একপাশে পড়ে থাকে, হাত-পা নড়াচড়া করে না বললেই চলে, কান্না খুব ক্ষীণ আওয়াজের হয়। ততধিক দুর্বল থাকে তার রিফ্লেক্স কর্মকাণ্ড।
তার ঘুম বা জাগরণ ভাবের মধ্যে তেমন পার্থক্য থাকে না। ক্ষুধা পেলেও কাঁদে না বললেই চলে, খাওয়ার সামর্থ্যও থাকে বেশ কম।
আরও পড়ুনঃ নবজাতকের যত্ন
কারণ
❖ মায়ের অল্প বয়সে গর্ভধারণ। তিন বছরের কম বিরতিতে বারবার সন্তানধারণ, একসঙ্গে একাধিক সন্তান প্রসব।
❖ মায়ের দীর্ঘমেয়াদি নানা অসুখ, বিশেষত উচ্চ রক্তচাপ (প্রি-একলাম্পসিয়া), কিডনি রোগ, হৃদরোগ, ইউটিআই ও অপুষ্টি।
❖ গর্ভকালে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান, অ্যালকোহল ও অন্যান্য মাদকাসক্তি।
❖ গর্ভভ্রূণের ক্রমোজোম ত্রুটিবিচ্যুতি ও সংক্রমণ।
❖ গর্ভফুলের বিবিধ জটিল অবস্থা প্রিভিয়া, সংক্রমণ, স্বল্প ওজন প্রভৃতি।
চিকিৎসা
অপরিণত শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হয়। এ ধরনের শিশুদের ইনকিউবেটরে রাখা প্রয়োজন হয়। এসব শিশুর যত্নে ইনকিউবেটর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনেকখানি, বিশেষত শিশুর ওজন দুই হাজার গ্রামের কম হলে।
এই বিশেষ ব্যবস্থায় শিশুর তাপমাত্রা সঠিক পর্যায়ে সুরক্ষা করা, ৪০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে আর্দ্রতা বজায় রেখে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। ইনকিউবেটরের ব্যবস্থা না করা গেলে শিশুর তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
যেমন— রেডিয়েন্ট হিটার ও ল্যাম্প জ্বালিয়ে ঘর গরম রাখার চেষ্টা করা যায়। সঙ্গে অন্যান্য বিধিব্যবস্থা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নির্ধারণ করে দেবেন। ওজন এক হাজার ৫০০ গ্রামের কম হলে নাকে নল দিয়ে বুকের গলানো দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। প্রি-ম্যাচিউর শিশুর জন্য বুকের গলানো দুধই শ্রেষ্ঠ। শিশুর ওজন ও বয়স হিসাব করে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ তা নির্দিষ্ট করে দেন। শিশুর চুষে খেতে পারা নিয়ে সামান্যতম সংশয় থাকলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
যা মনে রাখবেন
এই সময় শিশুর জন্য বিপজ্জনক একটি ইস্যু হলো ইনফেকশনস। এদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অত্যধিক কম থাকে। এসব সন্তানকে বিশেষ করে জন্মের প্রথম মাস, মা-বাবা ছাড়া অন্য কারো সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা এবং মা-বাবারই উচিত নবজাতক পরিচর্যার ভার নেওয়া।
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ
আরও পড়ুনঃ মুখের ১০ পাপ পরিহার মুমিনের কর্তব্য