আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: প্রযুক্তি পিংক ফ্লয়েডের গান মানব মস্তিষ্ক থেকে ‘বের করে আনল’ । কোনো গান শোনার স্মৃতির ওপর ভরসা করে মানব মস্তিষ্কের সংকেত ডিকোডের মাধ্যমে সেই গান ফের ‘তৈরি’ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
৬০-এর দশকে যাত্রা শুরু করা জনপ্রিয় প্রগ্রেসিভ রক ব্যান্ড পিংক ফ্লয়েডের ‘অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল, পার্ট ১’ গানটি পুনর্গঠন করে এর নমুনা দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে’র একদল গবেষক। এর জন্য মৃগী রোগীদের অস্ত্রোপচার চলাকালীন তাদের মস্তিষ্কে ‘ইলেকট্রোড’ বসানোর পাশাপাশি সে সময়ে গানটি বাজিয়েছেন তারা।
পরে রোগীর মস্তিষ্কের কার্যক্রম বিশ্লেষণের মাধ্যমে গানের ছন্দ তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি, তারা গানের কয়েকটি বোধগম্য লাইনও শনাক্ত করেন। এর মধ্যে রয়েছে, গানের কোরাস ‘অল ইন অল ইট’স জাস্ট অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল’।
আরও পড়ুনঃ আইবিএমের নতুন চিপ, কাজ করে মানুষের মস্তিষ্কের মতো
মানুষের ভাবনাকে বক্তব্যে রূপান্তরের প্রচেষ্টা হিসেবে এর আগেও একই রকম ‘ব্রেইন-রিডিং’ কৌশল ব্যবহার করতে দেখা গেছে বিজ্ঞানীদের। তবে, মস্তিষ্ক থেকে কোনো জনপ্রিয় গান পুনর্গঠনের ঘটনা এটিই প্রথম।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের ‘হেলেন উইলস ইনস্টিটিউট’-এর মনোবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট নাইট। তার ভাষায় গবেষণার ফলাফল ‘ওয়ান্ডারফুল’!
“আমার কাছে সঙ্গীত এমন এক বিষয়, যেখানে ছন্দ ও আবেগ থাকবে। আর মস্তিষ্কের মেশিন ইন্টারফেসে এই অগ্রগতির ফলে ভবিষ্যতে মস্তিষ্ক ইমপ্ল্যান্টে সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট বিষয় যোগ করার সুবিধাও মিলবে।”
“যাদের ‘এএলএস’ বা অন্যান্য স্নায়ুজনিত সমস্যা আছে তারাসহ বাকপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও এ থেকে উপকৃত হবেন।” – বলেন অধ্যাপক নাইট।
“এর সুবিধা হল, এটি কেবল ভাষাগত দিক থেকে ডিকোড করে না বরং কারও বক্তব্যের ছন্দ বুঝতেও সাহায্য করে। আমার মতে, এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ধাঁধাঁটি মেলাতে পেরেছি আমরা।”
‘ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস’ প্রযুক্তিতে বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই অর্জন। এর লক্ষ্য, স্নায়ুজনিত রোগের নিরাময় কেবল নয়, নতুন কোনো সক্ষমতা যোগ করার উপায় হিসাবে মানুষের সঙ্গে মেশিনের সংযোগ ঘটানো।
“আমাদের প্রত্যাশা, ভবিষতে রোগীদের মাথার বাইরের অংশেই ইলেকট্রোড বসাতে পারব আমরা। এ ছাড়া, মস্তিষ্কের গভীর অংশগুলো থেকে উন্নতমানের সংকেত পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তবে, এর জন্য আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।”
‘মিউজিক ক্যান বি রিকনস্ট্রাকটেড ফ্রম হিউম্যান অডিটরি কোরটেক্স অ্যাক্টিভিটি ইউজিং ননলিনিয়ার ডিকোডিং মডেলস’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ‘পিএলওএস বায়োলজি’।
সূত্র: ইন্টারনেট
আরও পড়ুনঃ নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ৫ কোম্পানি