আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর কক্ষপথে ৬ মাসের মিশনে ৪ নভোচারী । তিন মার্কিন ও এক রাশিয়ান নভোচারীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে স্পেসএক্সের একটি রকেট। এ যাত্রার মাধ্যমে, পৃথিবীর কক্ষপথে ছয় মাসব্যাপী মিশন শুরু হল।
চার ক্রু সদস্যের ১৬ ঘণ্টার ফ্লাইটের পর মঙ্গলবার ভোরে, পৃথিবী থেকে প্রায় ৪২০ কিলোমিটার ওপরে, মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক উপকূলের কেপ ক্যানাভেরালে নাসার ‘কেনেডি স্পেস সেন্টার’ থেকে ‘এন্ডেভার’ নামে স্বয়ংক্রিয় ‘ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল’সহ দুই অংশের ফ্যালকন ৯ রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
নাসা-স্পেসএক্সের সরাসরি ওয়েবকাস্টে ২৫ তলা ভবনের সমান উঁচু রকেটটি উৎক্ষেপিত হতে দেখা যায়। রকেটের নয়টি মেরিল ইঞ্জিন বাষ্পের উজ্জ্বল মেঘ ও লালচে আগুনের আভায় রাতের আকাশ আলোকিত হতে দেখা যায়। উৎক্ষেপণের সময়ে প্রতি সেকেন্ডে রকেটটি সাত লাখ গ্যালন জ্বালানি খরচ করেছে বলে জানিয়েছে স্পেসএক্স।
ফ্যালকনের ওপরের অংশটি উৎক্ষেপণের নয় মিনিট পরে ‘এন্ডেভার’কে তার প্রাথমিক কক্ষপথে পৌঁছে দেয়। কেবিন থেকে সরাসরি ভিডিওতে দেখা যায় চারজন ক্রু সদস্য তাদের হেলমেট, সাদা-কালো ফ্লাইট স্যুট পরে পাশাপাশি বাঁধা অবস্থায় রয়েছেন।
“কক্ষপথের উদ্দেশ্যে কী অবিশ্বাস্য যাত্রা।”, লস অ্যাঞ্জেলসের বাইরের কন্ট্রোল রুমকে রেডিওর মাধ্যমে বলেন ৪২ বছর বয়সী নভোচারী ম্যাথিউ ডমিকিন। তিনি ফ্লাইট কমান্ডার ও ক্যাপসুলে থাকা তিনজন ফ্লাইট রুকিদের (প্রথমবার মহাকাশ যাত্রা করছেন এমন) একজন।
আরও পড়ুনঃ ভয়েজার ১ পৃথিবী থেকে ১৫০০ কোটি মাইল দূরে
“নতুন প্রজন্মের ক্রুদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের এ মহাকাশযানটিতে উড়তে পেরে সত্যিই সম্মানিত,” – ডমিনিকের পাশের আসন থেকে বলেন ৬৪ বছর বয়সী নাসার অভিজ্ঞ নভোচারী ড. মাইকেল ব্যারাট।
চার ক্রু সদস্যের ১৬ ঘণ্টার ফ্লাইটের পর মঙ্গলবার ভোরে, পৃথিবী থেকে প্রায় ৪২০ কিলোমিটার ওপরে, মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে লিখেছে রয়টার্স।
‘ক্রু-৮’ নামের এ মিশনটি নাসা’র অষ্টম দীর্ঘ মেয়াদী মিশন যেখানে স্পেসএক্সের মহাকাশযান ব্যবহার করে আইএসএস যাচ্ছেন নভোচারীরা। ২০২০ সালের মে মাস থেকে স্পেসএক্স মার্কিন নভোচারীদের পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে শুরু করে।
এ মিশনে আইএসএস ক্রুদের নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন নৌবাহিনীর পরীক্ষামূলক পাইলট ডমিনিক, যিনি কক্ষপথে তার প্রথম যাত্রা করছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন ব্যারাট, একজন চিকিৎসক, তিনি স্পেস স্টেশনে আগের দুটি ফ্লাইট ও দুটি স্পেসওয়াক করেছেন। ব্যারাট মিশনের পাইলট হিসেবে কাজ করছেন।
পাশাপাশি, দলটিতে রয়েছেন ৫৩ বছর বয়সী নাসা নভোচারী জিনেট ইপ্পস, যিনি একইসঙ্গে মহাকাশ প্রকৌশলী ও ‘সিআইএ’র সাবেক প্রযুক্তি কর্মকর্তা। আরও রয়েছেন, ৪২ বছর বয়সী রাশিয়ান নভোচারী আলেকজান্ডার গ্রেবেনকিন, একজন প্রাক্তন সামরিক বিমান প্রকৌশলী। ডমিনিকের মতো তিনি ও ইপ্পস উভয়ই মহাকাশে নিজেদের প্রথম অভিযানে গেলেন।
‘অরবিটাল প্ল্যাটফর্মে’র ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ পরিবেশ নিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রায় ২৫০টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য ক্রু-৮ অগাস্টের শেষ পর্যন্ত মহাকাশ স্টেশনে থাকবেন।
মহাকাশে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় কাঠামো আইএসএস, যা প্রায় একটি ফুটবল মাঠের সমান। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতৃত্বে কানাডা, জাপানসহ ইউরপের মোট ১১টি দেশ এ স্টেশনটি পরিচালনা করছে।
আরও পড়ুনঃ স্ট্রবেরি মুন দেখা যাবে ২১ জুন