আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: পুরাতন গাড়ি কেনার আগে যেসব বিষয়গুলো দেখে নেওয়া জরুরি । সময় বাঁচাতে এবং শখ পূরণের জন্য বেশিরভাগ মানুষ গাড়ি ক্রয়ের পরিকল্পনা করেন। কারণ গাড়ি কেনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ। শুরুতেই ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি কিনতে না পারলে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনে ফেলতে পারেন। পুরনো গাড়ি কেনা বরং অনেক বেশি জটিল প্রক্রিয়া কারন আপনাকে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হবে যদি আপনি বড় কোন লোকসানের মুখোমুখি না হতে চান।
ব্যবহৃত গাড়ি ক্রয় করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেনার আগে গাড়ির সম্পূর্ণ ডেটা সঠিকভাবে পরীক্ষা করা খুবই জরুরি। ব্যবহৃত গাড়ি গাড়ির প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ অটোমোবাইল কোম্পানি ব্যবহৃত গাড়ির শোরুমও খুলেছে। ব্যবহৃত গাড়ি গাড়ি কেনার আগে শুধু টেস্ট ড্রাইভই যথেষ্ট নয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্যবহৃত গাড়ি কেনার সময় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১) গাড়ির বনেট তুলে চ্যাসিস মার খাওয়া কিনা সেটা দেখবেন। চেসিস হল গাড়ির মেরুদণ্ড শক্ত না হলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না এটা আপনি নিজেই জানেন। তাই আগে দেখে নিন চেসিস মাইর খাওয়া আছে কিনা! যদি চেসিস খুব বেশি আঘাত না লাগে তবে পরবর্তী স্তরগুলোতে যেতে পারেন নয়তো বা এই গাড়ি কেনার ডিসিশন এখান থেকে বাদ দিন এবং আরেকটা খোঁজা শুরু করুন।
২) চেসিস নাম্বার ,ইঞ্জিন নাম্বার মিলিয়ে দেখুন কাগজের সঙ্গে এক কিনা (এগুলো আপনি ফিটনেস পেপারে পাবেন)।
৩) ইঞ্জিন স্টার্ট করার পর অয়েল গেজটি তুলুন , এক্সেলেরেটর প্যাডেলে চাপ দিন যদি সাদা ধোঁয়া বের হয় তাহলে ইঞ্জিন বদলাতে হবে এটা ধরে নিতে নিন অন্যথা ভালো ইঞ্জিন।
আরও পড়ুনঃ মোটরবাইক চুরি ঠেকাতে যা করতে পারেন
৪) ইঞ্জিন স্টার্ট করে স্টিয়ারিং সিটে বসুন এরপর হেড লাইট অন করুন। তারপর ব্যাক গিয়ারে দিন যদি ঝাঁকি দেয় তবে ধরে নিবেন গিয়ারবক্স খুব শীঘ্রই বদলাতে হবে অন্যথায় গিয়ারর্বক্স ভালো আছে। বাকি গিয়ার গুলো পরিবর্তন করে দেখুন , স্মুথলি শিফট হয় কিনা। যদি স্মর্টলি শিফট হয় তবে ভালো নতুবা ধরে নিন গিয়ার বক্স খুব শীঘ্রই বদলাতে হবে। (অনেক সময় গিয়ার বক্স বস করলে প্রবলেম এর সমাধান হয়ে যায় কিন্তু সমাধান না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই খরচটা হাতে ধরে নিবেন)
৫) গাড়ির সামনে বা সামনে ডানে বামে মার খাওয়া কিনা তা বোঝার জন্য স্টিয়ারিং ফুল ডানে-বামে কাটুন এবং দেখুন ফেন্ডারের নিচে ঝালাই করা আছে কিনা। যদি ঝালাই থাকে তবে বুঝবেন মাইর খাওয়া।
৬) গাড়ির সামনে পিছে নাম্বার প্লেট একদম স্টেট আছে কিনা সেটা মিলিয়ে নেবেন মাইর খাওয়া হলে একদম বাজে অবস্থায় চলে যাবে নতুবা ঠিক থাকবে।
৭) পুরো গাড়ির অন্য কোথাও কোন মাইর আছে কিনা সেটা দেখেন। ভাড়ায় চালিত গাড়ি হলে অনেকাংশেই পিছনে মাইর খাওয়া থাকে দাম কম পেলে কিনতে পারেন অন্যথায় বাদ দিন।
৮) গাড়ির ইন্টেরিয়র দেখুন ভালো কন্ডিশনার খারাপ কন্ডিশন নিজেই বুঝতে পারবেন।
৯) ইঞ্জিন স্টার্ট করে এসি অন করে দেখুন আপনাকে পর্যাপ্ত ঠান্ডা করতে পারে কিনা (টোয়োটা সিডান কার গুলোতে এসি এসি মেরামত করতে ২৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে)।
১০) ইঞ্জিন স্টার্ট করার পর সাইলেন্সার পাইপ দিয়ে দেখুন কোনরকম কালো অথবা সাদা ধোয়া অনবরত বের হয় কিনা যদি হয় তাহলে ইঞ্জিনের কাজ করাতে হবে।
১১) টায়ার গুলো দেখুন নতুন আছে কিনা মধ্যম মানের থাকলেও ভালো অন্য তা আবার বিষ হাজার টাকা খরচ।
১২) সুযোগ পেলে গাড়ি সামনে ড্রাইভ করে দেখুন স্টিয়ারিং ডানে বামে মোড় নেওয়ার সময় বাজে আওয়াজ হয় কি না । যদি হয় তবে সিবি জয়েন্ট বদলাতে হবে।
১৩) গাড়ির মালিক আপনাকে সাথেসাথে মালিকানা বদলি করে দিবে কিনা সেটা নিশ্চিত করুন।
১৪) সুযোগ পেলে একটু ভাঙ্গা রাস্তায় চালিয়ে সাসপেনশন এর অবস্থা দেখে নিন ভাঙ্গা রাস্তা চালানোর সময় যদি ঢকঢক আওয়াজ করে তাহলে বুঝবেন সাসপেনশনের কাজ করতে হবে।
১৫) যদি উবারে চালান তাহলে ১ নম্বর পয়েন্ট কোন মেজর ইস্যু নয় , দাম কম পেলে নিতে পারেন।
১৬) গাড়িতে কোন রংয়ের কাজ আছে কিনা দেখে নিন। ব্যবহৃত গাড়ি হলে রংয়ের কাজ থাকবেই এটাই স্বাভাবিক। ব্যবসায় থেকে কিনেন তাহলে ব্যাপারটা অন্তত ভালো পাবেন।
১৭) গাড়িতে সিএনজি করা থাকলে সিলিন্ডারের মেয়াদ কত দিন আছে সেটা দেখে নিন।
আরও পড়ুনঃ পাসওয়ার্ডের বদলে বায়োমেট্রিক আরও বেশি সুরক্ষিত