আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: পরিসংখ্যান ও ইতিহাসের আলোকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ । একদিনের আন্তর্জাতিক (ওয়ানডে) ক্রিকেটের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতা। প্রতি চার বছর পরপর খেলাটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। প্রাথমিক বাছাইপর্ব শেষে দলগুলো চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। টুর্নামেন্টটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দেখা ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি আইসিসির ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে “আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যালেন্ডারের সেরা প্রতিযোগিতা” হিসাবে বিবেচিত হয়।
প্রথম ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচের মাত্র চার বছর পর, ১৯৭৫ সালের জুনে ইংল্যান্ডে প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরুর দুই বছর আগে মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯১২ সালের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে টেস্ট ম্যাচের একটি ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ থেকে, একটি অনানুষ্ঠানিক ঘূর্ণন ব্যবস্থার অধীনে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয়োজক নির্বাচন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আইসিসির চৌদ্দটি সদস্য দেশ এ প্রতিযোগিতার অন্তত একটি ম্যাচ আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুনঃ পরিসংখ্যান ও ইতিহাসের আলোকে এশিয়া কাপ
বর্তমানে ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্ব শুরু হওয়ার পূর্বের তিন বছরে বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কোন দল চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে তা নির্ধারণ করা হয়। টুর্নামেন্টে সরাসরিভাবে আয়োজক দেশ সহ ১০টি দল প্রায় এক মাস ধরে আয়োজক দেশের ভেন্যুতে ট্রফির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। মোট বিশটি দল টুর্নামেন্টের এগারটি সংস্করণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, যেখানে সর্বশেষ ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে দশটি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। অস্ট্রেলিয়া পাঁচবার করে টুর্নামেন্টটি জিতেছে। ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুইবার করে জিতেছে । অন্যদিকে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ড একবার করে বিশ্বকাপ জিতেছে। কেনিয়ার ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে যাওয়া আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সেরা ফলাফল ছিল।
বিশ্ব কাপ (১৯৭৫-১৯৮৩)
১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ড উদ্বোধনী ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করতে সক্ষম হয়। ১৯৭৫ সালের ৭ই জুন টুর্নামেন্ট শুরু হয়। প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রুডেনশিয়াল কাপ নামে পরিচিতি পায়। ম্যাচে প্রতি দল ছয় বলে ৬০ ওভার করে ব্যাটিং লাভের সুযোগ পায়। সাদা পোশাকে ও লাল বলে দিনের বেলা খেলা অনুষ্ঠিত হত।
প্রথম টুর্নামেন্টে আটটি দল অংশগ্রহণ করে। দল গুলো হল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সে সময়ের ছয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ), শ্রীলঙ্কা এবং পূর্ব আফ্রিকার একটি যৌথ দল। বর্ণবাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেনি। লর্ডসে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে টুর্নামেন্টটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল। ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রয় ফ্রেড্রিক্স প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি ওয়ানডেতে হিট-উইকেটে আউট হন।
১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শুরু হয়। শ্রীলঙ্কা ও কানাডার জাতীয় ক্রিকেট দল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৯২ রানে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারপর আইসিসি প্রতি চার বছর পরপর বিশ্বকাপের আয়োজনের পরিকল্পনা করে।
১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডে টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। এই পর্যায়ে, শ্রীলঙ্কা একটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে এবং জিম্বাবুয়ে আইসিসি ট্রফির মাধ্যমে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। স্ট্যাম্প থেকে ৩০ গজ (২৭ মি) দূরে একটি ফিল্ডিং সার্কেল চালু হয়েছিল। বৃত্তের ভিতর চারজন ফিল্ডার ফিল্ডিংয়ের সুযোগ পায়। দলগুলো নক আউটে যাওয়ার আগে দু’বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৩ রানে পরাজিত করে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
চ্যাম্পিয়ন দল (১৯৮৭–১৯৯৬)
প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বাইরে ভারত ও পাকিস্তানে যৌথভাবে ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়। ইংল্যান্ডের তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশে দিবা-দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় আলোকস্বল্পতার কারণে খেলায় প্রতি ইনিংসে দলগুলো ৬০-এর বদলে ৫০ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায়। অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে ইংল্যান্ড ৭ রানে পরাজিত করে বিশ্বকাপ জিতে। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে কম ব্যবধানে ম্যাচ জিতে।
১৯৯২ সালে অনুষ্ঠেয় অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিশকাপে প্রথমবারের মতো রঙিন পোশাক ও সাদা বলে খেলা শুরু হয়। এছাড়াও দিবা-রাত্রি ম্যাচ, এবং ফিল্ডিং সীমাবদ্ধতার নিয়মে পরিবর্তন হয়। বর্ণবাদী শাসনের পতন এবং আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বয়কটের সমাপ্তির পর দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। পাকিস্তান টুর্নামেন্টের হতাশাজনক শুরুর পর শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২২ রানে পরাজিত করে চ্যম্পিয়ন হয়।
১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বারের মত ভারতীয় উপমহাদেশে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীলঙ্কা গ্রুপ পর্বের কিছু ম্যাচ আয়োজন করে। সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কা, ইডেন গার্ডেনে ভারতের বিপক্ষে জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বাগতিকরা ২৫২ রানের লক্ষ্যে আট উইকেট হারিয়ে ১২০ রান সংগ্রহ করার পরে, ভারতীয় জনতার মধ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়লে শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচে জয়ী ঘোষণা করা হয়। লাহোরে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে সাত উইকেটে পরাজিত করে শ্রীলঙ্কা তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল।
অস্ট্রেলিয়ার ট্রেবল (১৯৯৯-২০০৭)
১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড ছাড়াও কিছু ম্যাচ স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস এবং নেদারল্যান্ডসেও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বারোটি দল বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সুপার সিক্স ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে লক্ষ্যে পৌঁছানোর পর সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এরপরে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ম্যাচ টাই হয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সুপার সিক্সে শীর্ষস্থানে থাকায় ফাইনালে উঠে। ফাইনালে, অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানকে ১৩২ রানে গুটিয়ে দেয় এবং তারপরে ২০ ওভারেরও কম সময়ে ব্যাটিং করে আট উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
দশ হাজারেরও বেশি দর্শক অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের জন্য স্বাগত জানায়। – মার্টিন প্লেস, সিডনি।
দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং কেনিয়া ২০০৩ বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা বারো থেকে বাড়িয়ে চৌদ্দতে করা হয়েছিল। কেনিয়ার শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে। নিউজিল্যান্ড নিরাপত্তার কারণে কেনিয়ায় খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে কেনিয়া প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া দুটি উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রানের রেকর্ড করে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ভারতকে ১২৫ রানে হারায়। বিশ্বকাপে ফাইনালে রানের দিক থেকে এ হার সর্বোচ্চ ছিল।
২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠেয় এ বিশ্বকাপে ১৬টি দল অংশগ্রহণ করে। গ্রুপ পর্বে বিশ্বকাপ অভিষেক হওয়া আয়ারল্যান্ডের কাছে পাকিস্তানের হতাশাজনক পরাজয়ের পর পাকিস্তানি কোচ বব উলমারকে তার হোটেলের রুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। জামাইকান পুলিশ প্রথমে ওলমারের মৃত্যুর বিষয়ে একটি হত্যার তদন্ত শুরু করে। তবে পরে হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়। অস্ট্রেলিয়া শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে (ডি / এল) পদ্ধতিতে ৫৩ রানে পরাজিত করে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে টানা ২৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকে। এছাড়াও টানা তিন বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়।
স্বাগতিকদের শিরোপা (২০১১-২০১৯)
ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ একসাথে ২০১১ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানে বিশ্বকাপে আয়োজন বাতিল করা হয়। মূলত পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত গেমসটি অন্যান্য আয়োজক দেশগুলোতে পুনরায় করা হয়েছিল। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা কমে চৌদ্দতে নামানো হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া ১৯ মার্চ ২০১১ সালে ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের চূড়ান্ত গ্রুপ পর্বের ম্যাচ পরাজিত হয়। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ ২৩ মে ১৯৯৯ শুরু হওয়ার টানা ৩৫ ম্যাচের অপরাজিত থাকার ধারাবাহিকতা শেষ হয়। ভারত মুম্বাই ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা লাভ করে। প্রথমবারের মতো কোনো দেশ ঘরের মাটিতে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়।
অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড যৌথভাবে ২০১৫ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। চৌদ্দটি দল এ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে। টুর্নামেন্টে মোট তিনটি জয় নিয়ে আয়ারল্যান্ড সর্বাধিক সফল সহযোগী দেশ ছিল। নিউজিল্যান্ড রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে। মেলবোর্নে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছিল।
ইংল্যান্ড ১৪ই জুলাই ২০১৯ সালে তাদের জয়ের পরে লর্ডসের আশেপাশে সম্মানের এক বিশাল অনুষ্ঠান করে।
২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে দ্বাদশ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীদের দলের সংখ্যা কমিয়ে ১০-এ আনা হয়। বৃষ্টির কারণে রিজার্ভের দিনে প্রথম সেমিফাইনাল খেলা হয়। নিউজিল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনালে ভারতকে পরাজিত করেছিল। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড এর আগে কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি। ফাইনালে, ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডকে ২৪১ রানের টার্গেট দেয়। নিউজিল্যান্ডও নির্ধারিত ৫০ ওভারে একই রান সংগ্রহ করে। সুপার ওভারে খেলা গড়ালে দুদলই ১৫ রান করে। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাউন্ডারি সংখ্যা নিউজিল্যান্ড থেকে বেশি হওয়ায় ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে।
যোগ্যতা
১৯৭৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত, অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দল সরাসরিভাবে যোগ্যতা অর্জন করে।২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বেশিরভাগই আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ এভাবেই অংশগ্রহণ করে। ২০১৯ বিশ্বকাপের আইসিসি ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপে র্যাঙ্কিংয়ে আটের ভিতরে থাকা দলগুলো সরাসরি সুযোগ পায়।
১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের পর থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত, সরাসরিভাবে যে দলগুলো যোগ্যতা অর্জন করেছিল তাদের সাথে বাছাইপর্বে আরও কিছু দেশ যোগ দেয়। প্রথমে আইসিসি ট্রফি টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বাছাই হয়। পরবর্তীতে প্রাক-বাছাইপর্ব টুর্নামেন্টে সম্পন্ন হত। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের জন্য আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লীগ অতীতের প্রাক-বাছাইপর্ব “আইসিসি ট্রফি” নাম পরিবর্তন করে “আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব” করা হয়। বিশ্ব ক্রিকেট লীগের মাধ্যমে আইসিসির সহযোগী সদস্যদের যোগ্যতা অর্জন করত। যোগ্যতা অর্জনকারী দলের সংখ্যা সবসময় একইরকম হতো না।
২০২৩ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুধুমাত্র আয়োজক দেশ সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। অন্যসব দেশ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য একটি ধারাবাহিক লীগে অংশগ্রহণ করবে, যেখানে পয়েন্ট তালিকায় প্রথম ৮টি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। এরপরে পয়েন্ট তালিকায় শেষে থাকা দলগুলো বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করবে।
টুর্নামেন্ট
ইতিহাসে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফরম্যাটটি ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথম চারটি টুর্নামেন্টে আটটি দল প্রত্যেক গ্রুপে ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে খেলত। প্রতিযোগিতায় দুটি পর্যায়ে খেলা অনুষ্ঠিত হত। প্রতিযোগিতাটি গ্রুপ পর্যায় এবং নক আউট মঞ্চ নিয়ে খেলা হত। প্রতিযোগিতায় চারটি দল রাউন্ড-রবিন গ্রুপ পর্বে একে অপরের মুখোমুখি হত। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সেমিফাইনালে উঠত। সেমিফাইনালের বিজয়ীরা ফাইনালে একে অপরের বিপক্ষে খেলত। বর্ণবাদ বয়কটের সমাপ্তির পর ১৯৯২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা পঞ্চম টুর্নামেন্টে ফিরে আসে। এ বিশ্বকাপে নয়টি দল গ্রুপ পর্বে একবার একে অপরের সাথে খেলেছিল এবং শীর্ষ চারটি দল সেমিফাইনালে উঠেছিল। ছয় দলের দুটি গ্রুপ নিয়ে ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ চারটি দল কোয়ার্টার ফাইনাল উঠে। কোয়ার্টার ফাইনালে বিজয়ী দলগুলো সেমিফাইনালে খেলত।
১৯৯৯ এবং ২০০৩ বিশ্বকাপে নতুন ফরম্যাট চালু করা হয়েছিল। দলগুলোকে দুটি পুলে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রতিটি পুলের শীর্ষ তিনটি দল সুপার সিক্সে খেলার সুযোগ পায়। সুপার সিক্সে খেলা শীর্ষস্থানীয় চারটি দল সেমিফাইনালে উঠত। বিজয়ীরা ফাইনাল খেলত।
২০০৭ বিশ্বকাপে প্রতি গ্রুপে ৪টি করে ১৬টি দল অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি গ্রুপের মধ্যে দলগুলো একে অপরকে রাউন্ড-রবিন ফর্ম্যাটে খেলত। দলগুলো জয়ের জন্য ১ পয়েন্ট এবং টাই হলে জন্য আধাপয়েন্ট পেত। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সেরা আটে খেলত। সেরা আটে প্রতিটি দল অন্য গ্রুপের ৬টি দলের সাথে খেলত। দলগুলো গ্রুপ পর্বের মতো একইভাবে পয়েন্ট অর্জন করেছিল। সেরা আটে শীর্ষ চারটি দল সেমিফাইনালে উঠত। সেমিফাইনালের বিজয়ীরা ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হত।
২০১১ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে রাউন্ড-রবিন ফরম্যাটে সাতটি দলের দুটি গ্রুপ করে খেলত। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ চার দল কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এবং অবশেষে ফাইনালের মাধ্যমে বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা শেষ হত।
২০১৯ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা কমে ১০ টিতে দাঁড়ায়। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের মতো সেমিফাইনালে প্রবেশের আগে প্রতিটি দল উন্ড রবিন ফরম্যাটে একে অপরের বিপক্ষে খেলে।
আয়োজক বাছাই
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটি ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আগ্রহী দেশগুলোর দরপত্র পরীক্ষা করে টুর্নামেন্টের আয়োজকদের জন্য ভোট দেয়।
ইংল্যান্ড প্রথম তিনটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আইসিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ইংল্যান্ডের প্রথম টুর্নামেন্ট আয়োজন করা উচিত কারণ উদ্বোধনী আয়োজন করার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও অর্থ তাদের রয়েছে। ভারত স্বেচ্ছায় তৃতীয় ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করে। কিন্তু অধিকাংশ আইসিসি সদস্য জুন মাসে ইংল্যান্ডে দিনের আলোর দীর্ঘ সময়ের জন্য ইংল্যান্ডকে পছন্দ করে। ১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রথম ইংল্যান্ডের বাইরে ভারত ও পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয়।
বেশিরভাগ বিশ্বকাপই যৌথভাবে আয়োজন করা হয়। ১৯৮৭, ১৯৯৬, ২০১১ সালের বিশ্বকাপে যৌথভাবে আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালে সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজন করা হয়। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া যৌথভাবে আয়োজন করে।
ট্রফি
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ট্রফি বিশ্বকাপের বিজয়ীদের দেওয়া হয়। বর্তমান ট্রফিটি ১৯৯৯ বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হয়েছিল। এটি টুর্নামেন্টের ইতিহাসের প্রথম স্থায়ী পুরস্কার ছিল। এর আগে প্রতিটি বিশ্বকাপের জন্য আলাদা আলাদা ট্রফি তৈরি করা হত। ট্রফিটি লন্ডনে দুই মাসের মধ্যে গ্যারার্ড অ্যান্ড কোম্পানির কারিগরদের একটি দল নকশা করে তৈরি করত।
বর্তমান ট্রফিটি রৌপ্য এবং গিল্ড দ্বারা থেকে তৈরি। এতে তিনটি রৌপ্য কলাম দ্বারা আবৃত সোনার গ্লোব রয়েছে। কলামটি স্ট্যাম্প ও বেইল আকৃতির। তিনটি রৌপ্য কলাম দ্বারা ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংকে বোঝানো হয়েছে। সোনার গ্লোব দ্বারা বলকে বোঝানো হয়েছে। বলের সেলাইটি পৃথিবীর আক্ষিক আনতির দিকে ঘুরে থাকে। ট্রফির উচ্চতা প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার ও এর ওজন প্রায় ১১ কেজি। পূর্ববর্তী চ্যম্পিয়নদের নাম ট্রফির উপর খোদাই করা থাকে। আইসিসি মূল ট্রফিটা নিজেদের কাছে রাখে। কেবল শিলালিপির তৈরি পৃথক প্রতিলিপি স্থায়ীভাবে বিজয়ী দলকে প্রদান করা হয়।
ফলাফল
টুর্নামেন্টের সারাংশ
বিশটি দেশ কমপক্ষে একবার হলেও ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি টুর্নামেন্টে কমপক্ষে সাতটি দল অংশ নিয়েছে যার মধ্যে ছয়টি দল শিরোপা জিতেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম দুটি টুর্নামেন্ট জিতেছিল, অস্ট্রেলিয়া পাঁচটি জিতেছে, ভারত দুটি জিতেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ড একটি করে শিরোপা জিতেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৭৫ এবং ১৯৭৯) দুবার করে এবং অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ এবং ২০১৫) পাঁচবার একমাত্র দল যারা টানা তিনবার শিরোপা জিতেছে। অস্ট্রেলিয়া বারোটি ফাইনালের মধ্যে সাতটিতে খেলেছে (১৯৭৫, ১৯৮৭, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ এবং ২০১৫)। নিউজিল্যান্ড এখনও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি তবে দুবার (২০১৫এবং ২০১৯) রানার্সআপ হয়েছে। আইসিসির টেস্ট স্ট্যটাসবিহীন কেনিয়ার ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে যাওয়া সেরা ফলাফল ছিল। এছাড়া আয়ারল্যন্ডের ২০০৭ বিশ্বকাপে সেরা আটে জায়গা করে নেয়।
১৯৯৬ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হিসাবে শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতল, যদিও ফাইনালে পাকিস্তান অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১১ সালে ভারত স্বাগতিক হিসাবে প্রথমবারের মতো ঘরের মাটিতে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়। অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড যথাক্রমে ২০১৫ এবং ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জিতে। এছাড়া ১৯৭৯ সালে স্বাগতিক হিসেবে ইংল্যান্ড ফাইনালে উঠেছে। টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক হিসেবে নিউজিল্যান্ড ২০১৫ সালে ফাইনাল খেলে। এছাড়া জিম্বাবুয়ে ২০০৩ সালে সুপার সিক্সে উঠেছিল এবং ২০০৩ সালে কেনিয়া সেমিফাইনাল গিয়েছিল। ১৯৮৭ সালে, স্বাগতিক ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই সেমিফাইনালে উঠলেও যথাক্রমে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া পরাজিত হয়েছিল। স্বাগতিক দল হিসেবে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড, ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়েছিল।
ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট
১৯৯২ সালের আগের বিশ্বকাপে কোন ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কার ছিল না। কিন্তু ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের জন্য ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার সবসময় দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ সময়ই এ পুরস্কার ফাইনালে বিজয়ী দলের খেলোয়াড়রা পেয়েছে। প্রতিযোগিতার ফাইনালে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কার প্রদানের তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
ফাইনালে ম্যান অব দ্য ম্যাচ
প্রতিযোগিতার ফাইনালে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারের তালিকা দেয়া হলোঃ
প্রতিযোগিতার সাল | খেলোয়াড়ের নাম | অবদান |
---|---|---|
১৯৭৫ | ক্লাইভ লয়েড | ১০২ রান |
১৯৭৯ | ভিভ রিচার্ডস | ১৩৮* |
১৯৮৩ | মহিন্দর অমরনাথ | ৩/১২ ও ২৬ রান |
১৯৮৭ | ডেভিড বুন | ৭৫ রান |
১৯৯২ | ওয়াসিম আকরাম | ৩৩ ও ৩/৩৯ |
১৯৯৬ | অরবিন্দ ডি সিলভা | ১০৭* ও ৩/৪২ |
১৯৯৯ | শেন ওয়ার্ন | ৪/৩৩ |
২০০৩ | রিকি পন্টিং | ১৪০ |
২০০৭ | অ্যাডাম গিলক্রিস্ট | ১৪৯ |
২০১১ | মহেন্দ্র সিং ধোনি | ৯১* |
২০১৫ | জেমস ফকনার | ৩/৩৬ |
২০১৯ | বেন স্টোকস | ৮৪* এবং ০/২০ |
টুর্নামেন্টের রেকর্ড
ক্রিকেট বিশ্বকাপের রেকর্ড তালিকা
বিশ্বকাপ রেকর্ড | ||
---|---|---|
ব্যাটিং | ||
সর্বোচ্চ রান | শচীন তেন্ডুলকর | ২,২৭৮ (১৯৯২-২০১১) |
সর্বোচ্চ গড় (ন্যুনতম ১০ ইনিংস) | ল্যান্স ক্লুজনার | ১২৪.০০ (১৯৯৯,২০০৩) |
সর্বোচ্চ স্কোর | মার্টিন গাপটিল বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ২৩৭* (২০১৫) |
সর্বোচ্চ জুটি | ক্রিস গেইল এবং মারলন স্যামুয়েলস (২য় উইকেট) বনাম জিম্বাবুয়ে |
৩৭২ (২০১৫) |
এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান | শচীন তেন্ডুলকর | ৬৭৩ (২০০৩) |
সর্বাধিক শতক | রোহিত শর্মা শচীন তেন্ডুলকর |
৬ (২০১৫-২০১৯) ৬ (১৯৯২-২০১১) |
এক বিশ্বকাপে সর্বাধিক শতরান | রোহিত শর্মা | ৫ (২০১৯) |
বোলিং | ||
সর্বাধিক উইকেট | গ্লেন ম্যাকগ্রা | ৭১ (১৯৯৬–২০০৭) |
ন্যুনতম (ন্যূনতম ৪০০ বল) | মিচেল স্টার্ক | ১৪.৮১ (২০১৫–২০১৯) |
সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট (ন্যূনতম ২০ উইকেট) | মোহাম্মদ শামি | ১৮.৬ (২০১৫–২০১৯) |
সর্বোচ্চ ইকোনমি রেট (ন্যূনতম ১০০০ বল) | অ্যান্ডি রবার্টস | ৩.২৪ (১৯৭৫–১৯৮৩) |
সেরা বোলিং ফিগার | গ্লেন ম্যাকগ্রা ব নামিবিয়া | ৭/১৫ (২০০৩) |
এক টুর্নামেন্ট সর্বাধিক উইকেট | মিচেল স্টার্ক | ২৭ (২০১৯) |
ফিল্ডিং | ||
সর্বোচ্চ ডিসমিসাল (উইকেট-রক্ষক) | কুমার সাঙ্গাকারা | ৫৪ (২০০৩-২০১৫) |
সর্বোচ্চ ক্যাচ(ফিল্ডার) | রিকি পন্টিং | ২৮ (১৯৯৬–২০১১) |
দল | ||
সর্বোচ্চ স্কোর | অস্ট্রেলিয়া ব আফগানিস্তান | ৪১৭/৬ (২০১৫) |
সর্বনিম্ন স্কোর | কানাডা ব শ্রীলঙ্কা | ৩৬ (২০০৩) |
সর্বোচ্চ জয় % | অস্ট্রেলিয়া | ৭৪.৭৩% (ম্যাচ ৯৪, জয় ৬৯) |
সবচেয়ে ধারাবাহিক জয় | অস্ট্রেলিয়া | ২৭ (২০ জুন ১৯৯৯ – ১৯ মার্চ ২০১১, একটি ফলাফলহীন বাদ) |
সবচেয়ে ধারাবাহিক টুর্নামেন্ট বিজয়ী | অস্ট্রেলিয়া | ৩ (১৯৯৯–২০০৭) |
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
আরও পড়ুনঃ Chat GPT থেকে অর্থ উপার্জনের সহজ পদ্ধতি