আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি, কুড়িগ্রাম । নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি (Naodanga Jomidar Bari) একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন স্থাপনা। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির অবস্থান। অবিভক্ত ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠার আরো আগে নাওডাঙ্গা পরগনার তৎকালীন জমিদার বাহাদুর প্রমদারঞ্জন বক্সী বাড়িটি নির্মাণ করেন।
পরবর্তী জমিদারীর উত্তরসরী বীরেশ্বর প্রসাদ বক্সী নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়িতে একটি মাইনর স্কুল এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে নাওডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচিত। বীরেশ্বর প্রসাদ বক্সী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুণ্য জন্মতিথিতে প্রতি দোলপূর্ণিমায় নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির সামনের মাঠে দোল মেলার আয়োজন শুরু করেন যা বর্তমানেও চালু আছে।
ইতিহাস
নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ও বংশের প্রতিষ্ঠাতা ব্রিটিশদের কাছ থেকে বাহাদুর খেতাবপ্রাপ্ত প্রমদরঞ্জন বক্সী। তার ছিল তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তান। বড় ছেলে বিরেশ্বর প্রসাদ বক্সী আইন বিষয়ে বিদেশে পড়ালেখা করে কর্ম হিসেবে আইন ব্যবসা শুরু করেন এবং তিনি একজন বিচারক ছিলেন। ছোট ছেলে বিপুলেশ্বর প্রসাদ বক্সী প্রকৌশলী বিষয়ে পড়ালেখা করে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন বেচে নেন। কিন্তু মেজো ছেলে বিশ্বেশ্বর প্রসাদ বক্সী পড়ালেখায় খারাপ থাকায় তিনবার প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারেননি।
তাই প্রমদরঞ্জন বক্সী তাকেই পরবর্তী জমিদার হিসেবে জমিদারীর দায়িত্ব দেন। আর অন্যরা অন্যদের কর্মজীবন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাদের জমিদারী ছিল বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বিদ্যাবাগিশ, শিমুলবাড়ী, তালুক শিমুলবাড়ী, কবির মামুদসহ আরো অনেক এলাকা। এছাড়াও তাদের পাঙ্গা নামক এলাকায় আরেকটি জমিদারী ছিল। যা শিবপ্রসাদ বক্সী নামের একজন দেখাশোনা করতেন।
আরও পড়ুনঃ ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক, গাইবান্ধা
জমিদার বিশ্বেশ্বর প্রসাদ বক্সীর দুই ভাই ভারতের কোচবিহার রাজ্যে একটি বাড়ি ক্রয় করে সেখানে তাদের বাবা জমিদার প্রমদরঞ্জন বক্সীকে নিয়ে চলে যান। শুধু শেষ জমিদার বিশ্বেশ্বর প্রসাদ বক্সী জমিদারী প্রথা বিলুপ্তী হওয়ার আগ পর্যন্ত এখানে ছিলেন এবং জমিদারী পরিচালনা করেছেন। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলেও তিনিও ভাইদের কাছে ভারতে চলে যান। আর এইভাবেই এই জমিদার বংশের জমিদারীর ইতি ঘটে।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার শ্যামলি অথবা কল্যাণপুর থেকে এস-বি, নাবিল, শ্যামলী, হানিফ এবং কুড়িগ্রাম পরিবহণের (01924-469437, 01914-856826) বাস সরাসরি কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। কুড়িগ্রাম থেকে ফুলবাড়ি উপজেলা সদরে এসে সেখান থেকে সহজেই ৮ কিলোমিটার দূরে নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি দেখতে এতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাছে বিভিন্ন মানের কয়েকটি হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল আকাশ, মেসার্স হোটেল ডিকে (01712-123171), মেসার্স হোটেল স্মৃতি (01719-028411), মেসার্স হোটেল মেহেদী (01711-348910), মেসার্স হোটেল আরজি, মেসার্স হোটেল নিবেদিকা (01717-058295), মেসার্স হোটেল অর্ণব প্যালেস (01740-571006), মেসার্স হোটেল বসুন্ধরা (0581-61507), মেসার্স মিতা রেস্ট হাউস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন
কুড়িগ্রামের মাছের খ্যাতি আছে দুনিয়াজোড়া তাই এখানে এসে বিভিন্ন রকম মাছ টেস্ট করে দেখতে পারেন। এছাড়া খাবারের জন্য কুড়িগ্রামে সাধারণ মানের খাবার হোটেল রয়েছে।
✺ আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক- ✺ আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ
আরও পড়ুনঃ অষ্টগ্রাম হাওর, কিশোরগঞ্জ