আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: নবীজি প্রথম উপার্জন যে ভাবে ব্যয় করতে বলেছেন । নবীজির সুন্নতের অনুসরণে যে কাজই করা হোকনা কেন, সবই আল্লাহর ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি সুন্নত অনুসরণের নিয়তে উপার্জনের প্রথম খরচ নবীজির নির্দেশনা মোতাবেক ব্যয় করেন, নিশ্চয়ই তিনি সওয়াব লাভ করবেন।
রাসুলুল্লাহ (স.) উপার্জনের প্রথম খরচ পরিবারকে দিয়ে শুরু করতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাউকে যখন আল্লাহ কল্যাণ (সম্পদ) দান করেন তখন সে নিজের এবং তার পরিবারস্থ লোকজনকে দিয়ে (ব্যয়) শুরু করবে।’ (মুসলিম: ১৮২২)
পরিবারের জন্য যে খরচটা করা হয়, হাদিসের ভাষায় সেটিই সর্বোত্তম অর্থ। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের সর্বোত্তম মুদ্রা সেটি, যা সে তার পরিবারের খরচে ব্যয় করে।’ (সহিহ মুসলিম: ৯৯৪)
সুতরাং সন্দেহ নেই যে পরিবারের জন্য খরচ করা অনেক বড় নেক আমল। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার পরিবারে যে খরচ করে তা-ও সদকাস্বরূপ, অর্থাৎ এতেও সে সদকার সওয়াব পাবে।’ (সহিহ বুখারি: ৪০০৬)
আরও পড়ুনঃ প্রাত্যহিক জীবনে নবীজির ১০ উপদেশ
আরেক হাদিসে পরিবারের জন্য উপার্জনরত ব্যক্তিকে মুজাহিদের মতো মর্যাদাসম্পন্ন বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস- ‘বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো অথবা রাতে সালাতে দণ্ডায়মান এবং দিনে সিয়ামকারীর মতো। (সহিহ বুখারি: ৫৩৫৩)
সদকার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর মুখে ভালোবেসে তুলে দেওয়া একলোকমা খাবারকেও। সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসুলুল্লাহ (স.) আমার শুশ্রূষার জন্য আসেন। আমি বললাম, আমার তো সম্পদ আছে। সেগুলো আমি অসিয়ত করে যাই? তিনি বললেন, না।
আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করতে পারো। আর এক-তৃতীয়াংশই তো বেশি। ওয়ারিশদের মানুষের কাছে মুখাপেক্ষী অবস্থায় (মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে ফিরবে) ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে তাদের বিত্তবান অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম।
আরও পড়ুনঃ
❒ ইবাদত কবুলের জন্য অন্তত ৩ শর্ত মানতে হবে
❒ শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচবেন উপায়
❒ যেসব আমলের কারণে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবেন
❒ ভালো মানুষের বিপদ বেশি কেন?
আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য সদকা হবে; এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দেবে, সেটাও। সম্ভবত আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সহিহ বুখারি: ৫৩৫৪)
পরিবারের জন্য খরচ করলে একদিকে বিপুল সওয়াব লাভ হয়, অন্যদিকে এটি দায়িত্বও বটে। যারা পরিবারের জন্য খরচ করে না, আল্লাহর কাছে তাদের জবাব দিতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির পাপের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে যাদের খোরপোষ তার দায়িত্ব সে তাদের খোরপোষ আটকিয়ে রাখবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৯৯৬)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
❑ ইসলামী জীবন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ রাসুল (স.) ১২ শ্রেণীর মানুষকে ‘আমার উম্মত নয়’ বলেছেন