আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: নজরকাড়া নীল চায়ের যত উপকারিতা । ঘুম থেকে উঠে অনেকেই ইদানীং চিনি দেওয়া দুধ চা কিংবা লাল চায়ের বদলে গ্রিন টির কাপে চুমুক দিচ্ছেন। কেউ ওজন ঝরানোর আশায়, কেউ আবার নিছকই শখে চা খাওয়ার অভ্যাসে বদল এনেছেন। তবে কেবল গ্রিন টি-ই নয়, এখন বাজারে ব্লু টি-রও চাহিদা বেড়েছে। অপরাজিতা ফুল, নীল জবার মিশ্রণ দিয়েই তৈরি হয় ব্লু টি। হালকা টক স্বাদ ও নীল রঙের জন্য অনেকেই এই চায়ের স্বাদ অনেকেই পছন্দ করেন। কেবল স্বাদেই ভাল নয়, এই চায়ের স্বাস্থ্যগুণও অনেক।
Blue Tea কি?
অপরাজিতা ফুলের পাপড়ি এবং লেমনগ্রাস (থাই পাতা)শুকিয়ে তৈরী হয় Blue Tea. বহুকাল ধরেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে ওষধি (medicine) হিসেবে এই চা ব্যবহার করা হতো, কিন্তু দুঃখের বিষয় এই চা সম্বন্ধে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ জানতেন না। কিন্তু ইদানিং, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গন্ডি পার করে Blue Tea পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে গেছে এবং শুধু তাই নয়, বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছে।
জেনে নিন, কেন এই চা কেন এত স্বাস্থ্যকর
❖ বর্ষাকাল মানেই শরীরে ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। ব্লু টি-তে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
❖ ব্লু টি-তে অ্যান্টিথ্রম্বোটিক গুণ রয়েছে, ফলে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই চা। তাই এই চা নিয়মিত খেলে তাই কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমে। সব মিলিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতেও এই চা বেশ উপকারী।
❖ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত এই চা খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরও পড়ুনঃ গুড়ের চা অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে রক্তশূন্যতা দূর করবে
❖ ব্লু টি হজমে সাহায্য করে। ভারী খাবার খাওয়ার আগে এক কাপ ব্লু টি খেতে পারেন। এতে বিপাকহার বাড়ে। বমি ভাব কাটানোর কাজেও আসে ব্লু টি।
❖ রোজকার ডায়েটে রাখলে এই চা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। কারণ, ব্লু টি মস্তিষ্কে অ্যাসিটাইলকোলিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। যার অ্যান্টিপাইরেটিক গুণ উদ্বেগ কমাতে ও অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে।
❖ এই চায়ে রয়েছে ক্যাটেচিন, যা পেটের মেদ কমাতে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
❖ এই চায়ের অ্যান্টি গ্লাইকেশন বৈশিষ্ট্য আছে বলে দাবি করা হয়। এটি ত্বকের জন্যে দারুণ উপকারী। তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।
❖ এই চায়ের ঘ্রাণ মেজাজ ভালো করে দেয়। নীল চা পান করলে স্ট্রেস দূর হয়।
❖ নীল চা লিভারের জন্য ভালো, রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে পারে এমন দাবি করেন কেউ কেউ। অবশ্য তা এখনো প্রমাণিত সত্য বলে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি। নীল চা সাধারণ চা ও কফির চেয়ে স্বাস্থ্যকর।
❖ অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুণে ভরপুর নীল চা শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।
❖ এ বিষয়টি এখনও পরীক্ষিত নয়, তবে দাবি করা হয় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে নীল চা।
❖ সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে এককাপ নীল চা অনেক উপকার করতে পারে।
❖ এমনকী ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে নীল চা। এর মধ্যে থাকা একাধীক উপকারী উপাদান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
Blue tea কি green tea থেকে ভালো?
Green tea এর তুলনায় Blue tea ক্লিনিক্যালি অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধারণ করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। Blue tea হেপাটিক মেটাবলিজমের উন্নতি ঘটিয়ে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
Blue tea এর স্বাদ (taste)কেমন?
Blue tea এর স্বাদে কিছুটা মাটির ঘ্রান, কিছুটা কাঠের ঘ্রান এবং এক আশ্চর্য ফুলের গন্ধ আছে যা অদ্ভুত সুন্দর লাগে, ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
সাবধানতা
তাই বলে যে নিশ্চিন্তে ইচ্ছেমতো কেবল নীল চা পান করতে পারবেন তা নয়। যদিও নীল চায়ের সাথে সম্পর্কিত কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তব, হোম ট্রিমেজস বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, নীল চা তৈরির বীজ বা পাতা থেকে ডায়রিয়া ও বমিভাব হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের নীল চা খাওয়া উচিত হবে না। কারণ তাদের ওপর এই চায়ের কি প্রভাব পড়তে পারে সে সম্পর্কে খুব কম তথ্য রয়েছে। তবুও, খাওয়ার পর যদি কোনো অস্বস্তি বা অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয় তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মাত্র দেড় বছরে ঘুরে দাঁড়ালো শ্রীলঙ্কা