আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: দুই সিজদার মাঝে বৈঠকে স্থিরতার গুরুত্ব । একজন মুমিনের জন্য নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই নামাজ সঠিকভাবে পড়া জরুরি। অনেকে নামাজে তাড়াহুড়া করে থাকেন, যা মূলত আদবের খেলাফ।
নামাজকে বলা হয় আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য ইবাদত। নবীজি (স.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন সে তার রবের সঙ্গে একান্তে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪০৫)
তাই নামাজে তাড়াহুড়া পরিত্যাজ্য; বরং ধীরস্থিরতা বজায় রেখে বিনীতভাবে নামাজ পড়তে হবে। দুই সিজদার মাঝে সোজা স্থির হয়ে বসা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে হাদিসে যথেষ্ট তাকিদ এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী কারিম (স.) মসজিদে প্রবেশ করার পর এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ পড়ল।
অতঃপর এসে রাসুলুল্লাহ (স.)-কে সালাম দিল। রাসুলুল্লাহ (স.) তার সালামের জওয়াব দিয়ে বললেন, ফিরে যাও, আবার নামাজ পড়ো। কেননা তুমি তো নামাজ পড়োনি। সে পুনরায় নামাজ পড়ার পর এসে নবী কারিম (স.)-কে সালাম দিল।
তিনি (স.) বললেন, ফিরে যাও, আবার নামাজ পড়ো। কেননা তুমি তো নামাজ পড়োনি। (তিনবার এরূপ হলো)। সে বলল, যে সত্তা আপনাকে সত্য দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন তার শপথ, আমি এর চেয়ে উত্তম তরিকায় নামাজ পড়তে জানি না। তাই আমাকে শিখিয়ে দিন।
আরও পড়ুনঃ একটি দোয়া কবুল হলে জীবনে আর কিছু লাগবে না
তিনি বললেন, যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে তখন তাকবির বলবে, অতঃপর কোরআনের যতটুকু তেলাওয়াত করা তোমার পক্ষে সম্ভব ততটুকু তেলাওয়াত করবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। অতঃপর সোজা স্থির হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর ধীরস্থিরভাবে সেজদা করবে, এরপর ধীরস্থির হয়ে বসবে, তারপর ধীরস্থিরভাবে সেজদা করবে, তোমার পুরো নামাজ এভাবেই আদায় করবে। (সহিহ বুখারি: ৭৯৩)
উল্লেখিত হাদিসের আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম দুই সিজদার মাঝে স্থির হয়ে বসাকে ওয়াজিব বলেছেন। এ ওয়াজিব তরক করলে নামাজ মাকরুহে তাহরিমি হবে। এমন ব্যক্তির কর্তব্য হচ্ছে, বিগত সময়ের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর দরবারে ইস্তেগফার করা এবং এখন থেকে পরিপূর্ণ তরিকামতো নামাজ আদায় করা।
(আলবাহরুর রায়েক: ১/৩০০; রদ্দুল মুহতার: ১/৪৬৪; আলমাবসুত, সারাখসি: ১/১৮৯; খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/৫৩; আলইখতিয়ার লিতালিলিল মুখতার: ১/১৭৯; শরহুল মুনইয়াহ: ৩২২-৩২৩)
উল্লেখ্য, দুই সিজদার মাঝে এই দোয়াটি পড়তে পারেন—اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ، وَارْحَمْنِي ، وَاجْبُرْنِي ، وَاهْدِنِي ، وَارْزُقْنِي ، وَعَافِنِي ، وَارْفَعْنِي উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ার হামনি, ওয়াজবুরনি, ওয়াহদিনি, ওয়ারজুকনি, ওয়া আ’ফিনি ওয়ারফা’নি। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার ওপর রহম করুন। আমার প্রয়োজন পুরো করে দিন। আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন। আমাকে সুস্থতা দান করুন এবং আমার সম্মান বৃদ্ধি করুন।’ (আবু দাউদ: ৮৫০; ইবনে মাজাহ: ৮৮৮) এতে ধীরস্থিরভাবে বসাও হবে, একইসঙ্গে দোয়ার ফজিলতও পাওয়া যাবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন।
❑ ইসলামী জীবন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ ভালো মানুষের বিপদ বেশি কেন?