আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: থাইল্যান্ডে তেলাপিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা । দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া নামের একটি মাছের প্রজাতির দ্রুত বিস্তার দেশটির পরিবেশ এবং অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হওয়ায় থাইল্যান্ড সরকার এই প্রজাতির মাছ নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে এই মাছটি থাইল্যান্ডের অন্তত ১৭টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া ছোট মাছ, কুচো চিংড়ি, শামুক এবং লার্ভা খেয়ে ফেলে, যা থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক চাষাবাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছটির প্রাদুর্ভাবে দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ২৯৩ মিলিয়ন ডলার বা সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছে ব্যাংক।
আরও পড়ুনঃ মানচিত্রে নেই, জনশ্রুতিতে জীবন্ত যে ‘ভূতুড়ে গ্রাম’
দেশটির আইনপ্রণেতা নাত্তাচা বুনচাইনসাওয়াত বলেন, আমরা একটি বিধ্বস্ত ইকোসিস্টেম পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাব না। ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়ার বংশবিস্তার রোধে থাই সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে নদী ও জলাশয়ে ভেটকি এবং মাগুরের মতো শিকারি মাছ ছেড়ে দেয়া এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া ধরতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকার ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া ধরার জন্য কেজিপ্রতি ১৫ বাথ (প্রায় ৫২ টাকা) পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
তবে, ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া প্রজাতির প্রজনন ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এটি সম্পূর্ণ নির্মূল করা কঠিন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়ালাইলাক ইউনিভার্সিটির জলজ প্রাণীর জেনেটিকস বিশেষজ্ঞ ড. সুইট উথিসুথিমেথাভি বলেছেন, এই মাছটি একবার প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়লে, এর প্রজনন চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।
আরও পড়ুনঃ ভূতের গ্রাম ‘আল-ঘুরাইফা’
তবে, থাই সরকার এমন একটি মাছের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে যার প্রজনন দ্রুত ঘটে। একটি মা তেলাপিয়া একবারে ৫০০টির বেশি মাছের জন্ম দিতে সক্ষম।
থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে আলোচনায় উঠে এসেছে যে, ২০১০ সালের শেষ দিকে চারোয়েন পোকফান্ড ফুড নামক একটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে ঘানা থেকে ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া আনে। যদিও প্রতিষ্ঠানটি পরে দাবি করে যে, তারা সব মাছ মেরে ফেলে দিয়েছে, তবু মাছটির প্রাদুর্ভাব থাইল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
মোটের ওপর, থাইল্যান্ড সরকার ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর প্রাদুর্ভাব রোধে স্থানীয়দের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
❑ অবাক বিশ্ব থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ ভিনগ্রহে কি সত্যিই কোনো প্রাণী বা এলিয়েন বাস করে!