আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: জুমার দিনে গুরুত্বপূর্ণ ৪ দোয়া । ইসলাম ধর্মে সপ্তাহের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ দিন হলো জুমাবার। এ দিনের রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও বরকত। রাসুলুল্লাহ (স.) জুমাকে `সপ্তাহের সেরা দিন’ বলেছেন এবং এ দিনে কিছু বিশেষ ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো—দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ মুহূর্ত।
এ প্রতিবেদনে জুমার দিনের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া তুলে ধরা হলো, যেগুলো রাসুল (স.) নিজে পাঠ করতেন বা উম্মতকে পাঠ করতে উৎসাহিত করেছেন।
১. দরুদ শরিফ পাঠ করা
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ ওয়া ‘আলা আলে মুহাম্মাদ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের ওপর রহমত বর্ষণ করুন।’ রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা জুমার দিনে আমার প্রতি বেশি করে দরুদ পাঠ করো। নিশ্চয়ই তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ: ১৫৩১)
২. ক্ষমা চাওয়ার দোয়া
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ উচ্চারণ: ‘আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম, ওয়া আতূবু ইলাইহি।’ অর্থ: ‘আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই, যাঁর ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং আমি তাঁরই কাছে তাওবা করি।’ প্রিয়নবী (স.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তাওবা ও ইস্তেগফার করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ৭০ বারেরও বেশি ইস্তেগফার ও তাওবা করে থাকি।’ (সহিহ বুখারি: ৬৩০৭)
৩. দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের দোয়া
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً، وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً، وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ উচ্চারণ: ‘রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাহ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন, আখেরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।’ এ দোয়া সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, ‘এরা তারাই, যারা বলে: হে আমাদের পালনকর্তা! দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখেরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা বাকারা: ২০১)
আরও পড়ুনঃ
❒ আস্তাগফিরুল্লাহ শব্দের এত বড় ফজিলত!
❒ আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দিবে যে ছোট ছোট জিকির
❒ পরীক্ষায় ভালো করার দোয়া ও আমল
❒ সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারের ফজিলত ও অর্থ
❒ সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ার ফজিলত
❒ যে আমল করলে জান্নাতে ‘বায়তুল হামদ’ নামে বিশেষ ঘর নির্মিত হয়
৪. মা-বাবাসহ সব মুমিনের জন্য দোয়া
رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا উচ্চারণ: ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনাও ওয়ালিল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাত। ওয়ালা তাজিদিজ জা-লিমিনা ইল্লা তাবারা।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষদের ক্ষমা করুন এবং আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ: ২৮)
জুমার দিন একটি মহাসুযোগ। এই দিন আল্লাহর রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, দোয়া কবুলের সময় রয়েছে, যা সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত থাকে। তাই এ দিনে উপরোক্ত দোয়াগুলোর মাধ্যমে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত। এতে দুনিয়াতেও বরকত আসবে, আখেরাতেও নাজাত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
❑ ইসলামী জীবন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ বিপদ কেটে যাওয়ার পর একজন মুমিনের করণীয়