জাহাপনা, দেশটা কি নাট্যমঞ্চ!
একদিন বিকেলবেলা, হালকা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসলাম খবরের কাগজ পড়তে। হেডলাইনে লেখা, “দেশে সব ঠিক আছে।” পাশে লেখা, “পেঁয়াজ ৩০০ টাকা কেজি!” আমি চোখ কচলালাম। ভাবলাম, “জাহাপনা, দেশটা কি নাট্যমঞ্চ?”
রাস্তায় বেরোলেই দেখি—ডানে নেতার পোস্টার, বামে নেতার ব্যানার। মাঝখানে আমি, মাথা গোঁজার মতো ভোটার! পেছন থেকে রিকশাওয়ালা বলে, “ভাই, সামনে হর্ন দিয়া জাগায়ে তুলেন, ওনারা বক্তৃতায় ব্যস্ত।” কী আশ্চর্য! জাহাপনা, নাটকে যেমন দৃশ্য বদলায়, আমরাও দেখি—দুই বছর আগে যিনি নায়ক ছিলেন, তিনি এখন ভিলেন। আর যিনি তখন প্রতিবাদ করতেন, তিনিই আজ শাসক! কেমন যেন কাস্টিং বদল!
একবার এক বন্ধুকে বললাম, “দোস্ত, চল চাকরি খুঁজি।” সে হেসে বলে, “তুই নাটক করবি না?” আমি বললাম, “কেন?” সে বলল, “তুই তো মুখে মুখে কথা সাজাতে পারিস, এটাই এখন প্রফেশন!” আমি ভাবলাম, নাট্যমঞ্চেই ভালো ছিলাম।
গণতন্ত্র আসে, গণতন্ত্র যায়। কিন্তু নাটকের মতো সংলাপ ঠিকই থেকে যায়। এক নেতা বলেন, “আমরা জনগণের সেবা করতে এসেছি।” পরদিন খবরে দেখি, জনগণ সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেছে, অথচ সেবা পায়নি। জাহাপনা, এই দেশে সংলাপ ভালো চলে—অভিনয় আরও ভালো!
আরও পড়ুন:
❒ ভূতের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ এবং মানুষের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব
❒ সেদিন আসলে কে জিতেছিল?
❒ শেষ দেখা
❒ পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট গল্প
সবচেয়ে বড় নাটক হয় বাজেট ঘোষণার দিন। ঘোষণা হয়: “সবকিছুর দাম কমবে।” পরদিন বাজারে গিয়ে দেখি—সবকিছুর দাম বাড়ে! আমি দোকানদারকে বললাম, “ভাই, কাল তো বললো দাম কমবে।” সে উত্তর দেয়, “ভাই, ওটা তো প্রেস কনফারেন্সে নাটক ছিল!”
জাহাপনা, আমরা যারা দর্শক, তারা জানি—নাটক যেমনই হোক, হাসতে হয়, কাঁদতে হয়, আবার টিকিট কেটে দেখতে হয়। তবে একটাই অনুরোধ, নাট্যকারদের বলবেন, পরবর্তী দৃশ্যে যেন একটু ‘বাস্তবতা’ ঢোকায়।
লেখা: এম এইচ কবীর
❑ পাঠকের দৃষ্টি ও চশমা থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী সংঘাতের জন্য আমেরিকার ভূমিকা: ইতিহাস এবং পরিণতি