আইসিটি ওয়ার্ল্ড নিউজ: চোখ কপালে ওঠে বলি কেন ? “চোখ কপালে উঠেছে!” — এই বাক্যটি আমরা হরহামেশা শুনি বা বলি। বিস্ময়, ভয় বা অবাক হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে এই প্রচলিত বাংলাটি ব্যবহার করি। কিন্তু আপনি কি জানেন, আসলে চোখ তো কপালে ওঠে না! তাহলে কেন এমন বলা হয়? এর পেছনের ভাষাগত এবং শারীরিক ব্যাখ্যাই বা কী?
চলুন, এই কথার রহস্যভেদ করি।
মানুষের মুখের অভিব্যক্তি ও বিস্ময়:
আমরা যখন হঠাৎ কিছু বিস্ময়কর, অপ্রত্যাশিত বা ভয়াবহ দেখি বা শুনি, তখন আমাদের শরীর স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রতিক্রিয়া দেখায়। বিশেষ করে:
❆ ভ্রু উঁচু হয়ে যায়।
❆ চোখ গোল হয় এবং বড় দেখায়।
❆ চোখের পাতাগুলো আরও প্রসারিত হয়।
এই সময় চেহারার যে অভিব্যক্তি তৈরি হয়, সেটি দেখে মনে হয় চোখ বুঝি উপরের দিকে উঠে গেছে — অর্থাৎ কপালের দিকে ঠেলে উঠেছে।
কেন ঘটে এমন প্রতিক্রিয়া?
এই প্রতিক্রিয়া আসলে মানব শরীরের প্রাকৃতিক ফাইট-অর-ফ্লাইট সিস্টেম (Fight or Flight Response) এর অংশ। যখন আমরা বিপদ বা অপ্রত্যাশিত কিছু অনুভব করি, তখন স্নায়ুতন্ত্র এমনভাবে কাজ করে:
❆ চোখ বড় হয়ে আসে, যাতে চারপাশ বেশি ভালোভাবে দেখা যায়।
❆ ভ্রু উপরের দিকে উঠে যায়, যাতে দৃষ্টি ক্ষেত্র আরও প্রশস্ত হয়।
ফলাফল? মুখের এমন একটি অবস্থা হয় যে মানুষজন দেখে ভাবতে বাধ্য হয় — “চোখ তো বুঝি কপালে উঠলো!”
আরও পড়ুন:
❒ ঘুম না পেলে শরীরে কী হয়?
❒ ঘাম কেন আসে এবং সেটা লবণাক্ত কেন?
❒ বৃষ্টিপাত কিভাবে মিলিমিটারে পরিমাপ করা হয়?
❒ চিন্তা করলে মাথা গরম হয় কেন?
❒ মোবাইল বেশি ব্যবহার করলে চোখে কেন সমস্যা হয়?
❒ বৃষ্টি হলে মাটির ঘ্রাণ আসে কেন?
বাক্যটির উৎপত্তি ও ব্যবহার:
“চোখ কপালে ওঠা” একটি রূপক (Metaphor)। ভাষায় এটি ব্যবহার করা হয় অত্যন্ত বিস্ময় বা আশ্চর্য বোঝাতে। যেমন:
> “একজন ছাত্র এক রাতেই পুরো বই মুখস্থ করে ফেলেছে—শুনে তো চোখ কপালে উঠল!”
বাংলা ভাষায় এমন রূপক ব্যবহার প্রচুর আছে, যা আমাদের দৈনন্দিন অভিব্যক্তিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
চোখ কপালে ওঠা কথাটি আসলে একদম শারীরিক নয়, এটি একটি চমৎকার রূপক। তবে এর ভিত্তি রয়েছে মানুষের চোখের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায়। আমাদের অভিব্যক্তি ও ভাষার মেলবন্ধনই এই প্রবাদবাক্যকে জনপ্রিয় করেছে।
❑ মাথায় কত প্রশ্ন আসে থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: চোখ ফড়ফড় করা কেন হয়?