আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: চাঁদে অক্সিজেন তৈরির চেষ্টা । মানুষের চাঁদে বসতি স্থাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এক নতুন অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের খরচ কমাতে এবং চাঁদে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সম্ভাবনাকে জোরদার করবে।
চাঁদে গিয়ে অক্সিজেনের সংকটে পড়েন নভোচারীরা। এই সংকট কাটিয়ে ওঠা যায় কীভাবে, সেই উদ্যোগ নিয়েছেন একদল প্রকৌশলী। তাঁরা চাইছেন, সেখানে যে অক্সিজেন পাওয়া যায়, এ জন্য একটি যন্ত্রের নকশা তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়েরা স্পেসের প্রকৌশলীরা। তাঁরা আশা করছেন, এই যন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করলে খানিকটা ঝক্কিমুক্ত হবেন নভোচারীরা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সিয়েরা স্পেস একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন পাওয়ার চেষ্টা করছে। সিয়েরা স্পেসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ব্র্যান্ট হোয়াইট বললেন, ‘পৃথিবীতে করা যায়, এমন সবকিছু আমরা পরীক্ষা করে সেরেছি। আমাদের পরের কাজটি হচ্ছে চাঁদে যাওয়া।’
আরও পড়ুনঃ চাঁদে তৈরি হবে টাওয়ার!
সিয়েরা স্পেসের এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল চলতি গ্রীষ্মে, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে। কেবল এটি নয়, ভবিষ্যতে চাঁদে একটি ঘাঁটি গড়া হলে সেখানে থাকা নভোচারীদের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে গবেষকেরা এই ধারার আরও অনেক প্রযুক্তি নিয়েই কাজ করছেন।
শুধু চাঁদে যাওয়া নভোচারীদের শ্বাস নেওয়ার জন্য অক্সিজেন নয়, সেখান থেকে মঙ্গল গ্রহসহ অন্যান্য দূরের গন্তব্যে নভোযান পাঠাতে চাইলে তাঁদের রকেটের জ্বালানি তৈরি করতে হবে। অক্সিজেন সে জন্যও লাগবে। এই লক্ষ্য নিয়েও কাজ করছেন প্রকৌশলীরা।
এদিকে চাঁদে বসবাসকারী নভোচারীদের ধাতুরও প্রয়োজন হতে পারে। এই ধাতু তাঁরা চন্দ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে থাকা ধুলায় ধূসর মাটি-পাথরকণা থেকে আহরণ করতে পারবেন। তবে অনেক কিছুই নির্ভর করছে এই সম্পদগুলো কার্যকরভাবে আহরণের উপযোগী পারমাণবিক চুল্লিগুলো তৈরি করার ওপর।
আরও পড়ুনঃ
❒ গ্রহাণুর আঘাতে লন্ডভন্ড হবে পৃথিবী!
❒ অবশেষে জানা গেল চাঁদের বয়স
❒ চাঁদের দূরবর্তী অংশের অজানা তথ্য দিলেন চীনের বিজ্ঞানীরা
❒ চাঁদের সবচেয়ে বড় ও পুরনো গর্তের বয়স ৪৩২ কোটি বছর
ব্র্যান্ট হোয়াইট বলেন, ‘এটা অভিযানের খরচ থেকে কোটি কোটি ডলার বাঁচাতে পারবে।’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এটা না করা গেলে পৃথিবী থেকে চাঁদে বাড়তি ধাতু ও বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন নিয়ে যেতে হবে, সেটা হবে কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল।
চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বা মহাকর্ষ বল মোটাদাগে পৃথিবীর প্রায় এক-ষষ্ঠাংশ। সে জন্য চাঁদে এই পরীক্ষা জরুরি। তবে সরেজমিনে চাঁদে কম মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আওতায় উপগ্রহটির নিজস্ব ধুলামাটি-পাথরকণা দিয়ে তাদের যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে সিয়েরা স্পেসের আরও কয়েক বছর লেগে যাবে। হয়তো ২০২৮ সালের আগে এটা সম্ভব হবে না কিংবা আরও দেরি হতে পারে।
❑ মহাকাশ ও বিজ্ঞান থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ মহাকাশে ‘গুপ্তধনে’র সন্ধান নাসার উদ্ধার অভিযান