আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ঘুচতে পারে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব, ওয়াই ক্রোমোজোমের রহস্যভেদ ! পুরুষের দেহের রহস্যময় ওয়াই ক্রোমোজোম নিয়ে সুখবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, এই প্রথম মানবদেহের ওয়াই ক্রোমোজোমের সম্পূর্ণ ক্রম (সিকোয়েন্স) উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব কাটাতে এই গবেষণা দারুণ কাজে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন বলছে, একজন মানুষের প্রতিটি কোষে বা দেহকোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে দুটি সেক্স ক্রোমোজোম। একটি ওয়াই (Y) এবং অন্যটি এক্স (X) ক্রোমোজোম। সাধারণত বাবার ক্রোমোজোমেই নির্ধারিত হয় সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে।
প্রতিটি পুরুষের থাকে একটি ওয়াই ও একটি এক্স ক্রোমোজোম। আর নারীর থাকে দুটি এক্স ক্রোমোজোম। সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় যদি পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোম অংশ নেয়, তাহলে সন্তান ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। না হলে মেয়ে হয়।
এ ছাড়া এই ওয়াই ক্রোমোজোম পুরুষের দেহে শুক্রাণু উৎপাদনসহ প্রজননের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেয়। এ কারণে ওয়াই ক্রোমোজোমের নিষ্ক্রিয়তায় একজন পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে যেতে পারেন। এ ছাড়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্যানসারের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এই ক্রোমোজোম।
আরও পড়ুনঃ ফ্যাটি লিভারের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়
ওয়াই ক্রোমোজমের রহস্যভেদ সম্পর্কিত বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনের প্রধান লেখক এবং ইউএস ন্যাশনাল হিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্টাফ সায়েন্টিস্ট আরং রাই বলেন, ‘সাফল্যের জন্য আমি নতুন সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তি এবং কম্পিউটেশনাল পদ্ধতিগুলোকে কৃতিত্ব দেব।’
সহ-গবেষক এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপক কারেন মিগা বলেন, ‘ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্যের ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রকাশ করে গবেষণাটি প্রথমবারের মতো একটি ওয়াই ক্রোমোজোম কোডের সম্পূর্ণ দৃশ্য প্রদান করেছে। অতীতে আমাদের জিনোম মানচিত্র থেকে এটি অনুপস্থিত ছিল।’
মানুষের জেনেটিক কোড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০ বছর আগেই এসব ক্রম ও ব্লক বের করে ফেলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থেকেই যায়। ২০২২ সালে সেই কাজেই হাত দেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ১০০ বিজ্ঞানী। এদের বলা হয় তেলোমেরে-তো-তেলোমেরে কনসোর্টিয়াম।
চোচোভা বলেন, ‘ওয়াই ক্রোমোজোম মানব জিনোমের সবচেয়ে ছোট এবং দ্রুত ক্রমবর্ধমান ক্রোমোজোম।’
গবেষকদের মতে, ওয়াই ক্রোমোজোমের পূর্ণাঙ্গ পাঠোদ্ধারের ফলে প্রজনন সম্পর্কিত গবেষণা সহ এর ব্যবহারিক প্রয়োগ সম্ভব হতে পারে। তবে সবচেয়ে ছোট ও জটিল ওয়াই ক্রোমোজোমের সিকোয়েন্স বের করা যায়নি। এবার সেই কাজটাই শেষ করলেন ১০০ জনের দলটি। বুধবার (২৩ আগস্ট) বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী নেচারে এ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদের একজন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার মনিকা চেকোভা বলেন, কয়েক বছর আগেও এটি সম্ভব হয়নি। এবার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যা করা হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য।
আরও পড়ুনঃ ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব তবু আমারে দেব না ভুলিতে …