আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: গাজীপুরের কাঁঠালের খ্যাতি দেশ-বিদেশে । জাতীয় ফল কাঁঠাল। পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু এই ফল যেমন রোগব্যাধি উপশমে কার্যকর, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ। কাঁঠালের রাজধানী বলা হয় গাজীপুর জেলাকে। এই জেলার পাঁচ উপজেলাই প্রচুর কাঁঠালের ফলন হয়। তবে স্বাদ, মিষ্টতা, ঘ্রাণ ও আকারের দিক থেকে শ্রীপুরের কাঁঠালের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে।
শুধু কাঁঠাল বিক্রির জন্য এখানে জমে বড় বাজার। এখানে যে শুধু রেকর্ড পরিমাণ কাঁঠাল হয়, তা নয়; এখানকার কাঁঠাল রপ্তানি হয় বিদেশেও। তাই জেলা প্রশাসন কাঁঠালকে শ্রীপুরের ব্র্যান্ডিং করেছে। উপজেলা প্রশাসন চত্বরে তৈরি করা হয়েছে বিশাল কাঁঠালের ভাস্কর্য। অফিশিয়াল স্লোগান ‘সবুজে শ্যামলে শ্রীপুর, মিষ্টি কাঁঠালে ভরপুর’।
আরও পড়ুনঃ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার বাকরখানি
ঢাকা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরের এই উপজেলা এখন কাঁঠালে সয়লাব। গ্রাম কিংবা শহর, সবখানেই কাঁঠাল বেচাকেনার ধুম। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর এই অঞ্চলে গড়ে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়। খাজা, গালা ও দুরসা—এই তিন জাতের কাঁঠাল এখানে উৎপাদন হয় প্রচুর পরিমাণে। এ বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ‘খাজা’ জাতের কাঁঠাল রপ্তানি করা হয়েছে। আরও রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে। শ্রীপুরের জৈনা বাজার এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে ঘুরে ঘুরে একদল ক্রেতা কাঁঠাল কিনছেন। সেগুলো স্তূপ করে রাখা হয় সড়কের পাশে। আরেক দল ক্রেতা তাঁদের কাছ থেকে কাঁঠাল পাইকারি কিনে নেয়। ভ্যানগাড়িতে তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পাইকারি বাজারে। এরপর বাজারে বিক্রি করা হয় আড়তদারদের মাধ্যমে। আর আড়তদারদের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বড় বড় পাইকারেরা সেগুলো কিনে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ভাগ্যকুলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি এবং ঘোল
বেশির ভাগ কাঁঠালবাগানের মালিকেরা ছোট অবস্থায় কাঁঠাল পাইকারের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর সুবিধামতো সময়ে ক্রেতা সেগুলো গাছ থেকে কেটে নেন। তবে অনেকেই ভালো দাম পাওয়ার আশায় নিজেই গাছ থেকে কাঁঠাল কেটে সেগুলো খুচরা বাজারে বিক্রি করেন।
একেকটি ভ্যানগাড়িতে মাঝারি আকারের ২০ থেকে ৫০টি কাঁঠাল ধরে। বড় পাইকারেরা ভ্যানগাড়িতে থাকা কাঁঠালগুলোর আনুমানিক মূল্য নির্ধারণ করে দর–কষাকষি করে কিনে।
কাঁঠালের এই পাইকারি হাটকে কেন্দ্র করে চার মাস ধরে দুই থেকে আড়াই শ মানুষের কর্মসংস্থান হয় বলে দাবি করেছেন বেশ কয়েকজন আড়তদার। তাঁরা বলেন, কেউ মাঠপর্যায়ে কাঁঠাল কেনে, কেউ আবার সেগুলো ভ্যানগাড়িতে ভর্তি করে। অনেকেই চুক্তিভিত্তিক কাঁঠাল কেনার কাজে নিয়োজিত। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারদের কাঁঠাল ট্রাকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য প্রচুর শ্রমিক কাজ করেন এখানে।
সরকারি উদ্যোগে শ্রীপুরের কাঁঠাল বিদেশেও পাঠানো হয়। জৈনাবাজার থেকে পাইকারদের হাত হয়ে শ্রীপুরের কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
আরও পড়ুনঃ শরীয়তপুরের বিখ্যাত ‘বিবিখানা’ পিঠা