গণমানুষের রুখে দাঁড়ানোর সময় এখনই
কবীর হুমায়ুন
গণতন্ত্র কি তা আমরা কখনো দেখিনি, সত্যিকারের গণতন্ত্র কি তা আমরা জানিও না, পড়েছি হয়তো বইয়ের পাতায়। আমাদের নেতাদের কাছে গণতন্ত্র মানে জনগনকে পুড়িয়ে মারা। আর ক্ষমতা নিয়ে কাড়াকাড়ি করা।
তারা ক্ষমতা থাকার জন্য বা ক্ষমতা যাওয়ার জন্য যে কোন হীন কাজ নাই যা করতে পারে না। খাঁটি গণতন্ত্র উপভোগকারী জনগণ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার পাঁচ থেকে ছয় শতাংশের বেশি হবে না। কাজেই ওসব গণতন্ত্রের কথা শুনে আমাদের লাভ নাই।
আমি শুধু বলতে চাই এ দেশটা আমাদের সবার। এ দেশে আমরা মানুষ হিসাবে বাঁচতে চাই, একটু শান্তিতে থাকতে চাই, আমরা আমাদের দেশটাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চাই না।
দেশে অনেক জ্ঞানীগুনী ব্যক্তি আছেন দয়া করে তাদের সঙ্গে নিয়ে কিছু একটা সমাধানে পোঁছানোর ব্যবস্থা করুন। এ দেশ শুধু কোন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী নয়, সাধারণ মানুষেরও অধিকার আছে। অধিকার হয়তো কেউ দেবে না, কিন্তু শান্তিতে বাঁচতে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগের শিক্ষা
আর কতদিন রাজনীতিকরা তাদের ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে ক্ষমতার লোভে তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে আমাদের স্বজনদের রক্ত ঝরাবে? ভোটের রাজনীতি নামে দেশ বিরোধীদের নিয়ে বিচারের প্রহসন করে তারে এদেশে পুনবাসন করবে? অবরোধ, হরতাল ডেকে ঘরে বসে ভাড়া করা দুষ্ট লোক দিয়ে মানুষ মারার কাজ করেও তারা দিব্যি আইনের চোখে সম্মানিত রাজনীতিক!
আমরা কোন সভ্য সমাজে আছি? এসব আর কত কাল আমাদের সহ্য করতে হবে? আমরা কি শুধুই তাকিয়ে থাকবো আগামী দিনের দিকে? বর্তমান বলে আমাদের কি কিছুই থাকবে না?
এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক, রাজনীতিকরা যাদের নামে রাজনীতি করেন, যাদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন, সেই সাধারণ মানুষের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। আমাদের কষ্টের কথা ভাবে না কেউ। ভোটের সময় ছাড়া আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কোন মূল্য নেই এই নেতাদের কাছে।
রাজনীতি গণমূখী না হয়ে ক্ষমতামূখী হওয়ার কারণেই সাধারণ জনগণের এই দুর্ভোগ। বস্তুত মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এ ধারার রাজনীতিতে। ক্রমেই রাজনীতিবিমুখ হয়ে উঠেছে মানুষ। যারা রাজনীতি করেন, তাদের অনুধাবন করতে হবে এর পরিণতি। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে সর্বোপরি রাজনীতিকদের নিজেদের স্বার্থে রাজনীতিকে সুস্থধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কীভাবে হবেন একজন ভালো মানুষ?
দেশ আর জনগণের জন্যে ভাবার কেউ নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সাধারণ মানুষের। অস্ত্রবাজ সন্ত্রসীদের মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজন গণশক্তির। কোনো নেতৃত্বের প্রয়োজন নেই। এসব ক্ষমতা লোভী রাজনৈতিক নেতাদের থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য সবায়কে নেতা, সবায়কে কর্মী হতে হবে।
হাজার বছরের বাংলার ইতিহাস পড়লে দেখা যাবে গণবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বহুবার বাঙালি ফুঁসে উঠেছিল। নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে এনেছে। আমি বিশ্বাস করি, যে কোন পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতিবাদের কন্ঠ নিয়ে পথে বেরিয়ে আসতে হবে।
ক্ষমতার লোভে যারা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, নিরীহ মানুষের জীবন সংহার করছে, সাধারণ মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারছে, মানুষকে পুঙ্গ করে দিচ্ছে, দেশপ্রেমিক মানুষকে রুখে দাঁড়াতে হবে সেসব অপশক্তির বিরুদ্ধে।
গণশক্তির জোয়ারে ভেসে যাবে বোমারুদের অপশক্তি। আমি প্রকৃত অর্থেই এখন গণমানুষের রুখে দাঁড়ানোর এবং নিজেদের সেই মিছিলে শামিল করার অপেক্ষায় রয়েছি।
❑ মুক্তকলাম থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ জ্বলছে সব জ্বলছে