আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: কৃতজ্ঞ বান্দাদের জন্য আল্লাহর ঘোষণা । আল্লাহ তাআলা মানবজাতীকে শুধু শ্রেষ্ঠত্বই দেননি, সাথে দিয়েছেন অগণিত নেয়ামত। এর শুকরিয়া যদিও পুরোপুরি আদায় করা সম্ভব নয়। তবুও মানুষের কর্তব্য হলো- সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করা, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো; আমিও তোমাদের স্মরণ করব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫২)
মহান আল্লাহ শুকরিয়া আদায়কারী ও অনুগত বান্দাদের পছন্দ করেন এবং তাদের জন্য নেয়ামত বাড়িয়ে দেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আমার নেয়ামতরাজির কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো, আমি অবশ্য অবশ্যই তোমাদের জন্য আমার নেয়ামত বাড়িয়ে দেবো।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
বর্ণিত আয়াত মানুষকে শিক্ষা দেয়, ছোট-বড় প্রতিটি নেয়ামতের জন্য আল্লাহর দরবারে সন্তুষ্টচিত্তে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুস্থতার জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে আলহামদুলিল্লাহ বলা। ধন-সম্পদের জন্যও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি সামর্থ্যানুযায়ী সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করা।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মুমিন তাদেরকে বলো সালাত কায়েম করতে এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে, সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব থাকবে না।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩১)
আরও পড়ুনঃ জুমাবারে ক্ষমা ও অফুরন্ত সওয়াব লাভের উপায়
ইসলামের শিক্ষা হলো- সুখ-দুঃখ, স্বচ্ছলতা-দারিদ্র্য, সুস্থতা-অসুস্থতা সর্বাবস্থায় শোকরগুজার থাকা উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শ হলো, ‘আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল’ তথা সর্বাবস্থায় সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। অর্থাৎ সুখে-দুঃখে জীবনের ওপর সন্তুষ্ট থাকা। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। এমন মনোভাব পোষণ করলে কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং নেয়ামতসমূহ বাড়িয়ে দেবেন।
এক হাদিসে মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন কোনো বান্দার সন্তান মারা যায়, তখন মহান আল্লাহ (জান কবজকারী) ফেরেশতাদের বলেন, ‘তোমরা আমার বান্দার সন্তানের প্রাণ হরণ করেছ কি? তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তোমরা তার হৃদয়ের ফলকে হনন করেছ? তারা বলেন, ‘হ্যাঁ।
তিনি বলেন, ‘সেসময় আমার বান্দা কী বলেছে?’ তারা বলেন, ‘সে আপনার হামদ (প্রশংসা) করেছে ও ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রা-জিউন পাঠ করেছে।’ মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমার (সন্তানহারা) বান্দার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ করো, আর তার নাম রাখো ‘বায়তুল হামদ’ (প্রশংসাভবন)।’ (তিরমিজি: ১০২১)
আরও পড়ুনঃ
❒ মহানবী (সা.)-এর কথাবার্তার ১০টি অনন্য সৌন্দর্য
❒ কোরআন-হাদিসের আলোকে দান-সদকার যেসব প্রতিদান আল্লাহ দুনিয়াতেই দিয়ে দেন
❒ হাদিসের আলোকে জুমার রাতের বিশেষ কিছু আমল
❒ পবিত্র কোরআনের যে সুরাগুলো বেশি পড়বেন
অসুস্থ ব্যক্তির আলহামদুলিল্লাহ বলা সম্পর্কে হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি আমার মুমিন বান্দাকে রোগাক্রান্ত করি, আর বান্দা সে অবস্থায় আমার প্রশংসা করে আলহামদুলিল্লাহ বলে; তবে সে বিছানা থেকে এমনভাবে ওঠে দাঁড়ায়; যেন তার মা তাকে ভূমিষ্টকালে যেমন জন্মদান করেছিল।’ (হাদিসে কুদসি)
অন্যদিকে, আল্লাহর নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় না করা পাপের কাজ। এমন কাজ না করতে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যদি তোমরা আমার নেয়ামাতরাজির অস্বীকার করো, তবে জেনে রাখো নিশ্চয় আমার শাস্তি বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
❑ ইসলামী জীবন থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ সন্ধ্যার দোয়া-জিকির আল্লাহ বেশি পছন্দ করেন