আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: কাউ ফলের পুষ্টি ও অবাক করা ঔষধি গুণাগুণ । নামটা কাউ হলেও, টক-মিষ্টি স্বাদের ফল এটি। উপকূলীয় অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে শিশুদের অনেক প্রিয় এই ফল। ভিটামিন-সি তে ভরপুর কাউ ফলে আছে সর্দি-জ্বর ও ঠাণ্ডা সারাবার মতো ভেষজ গুণাগুণ। দিন দিন তাই বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে এই কাউ ফল।
কাউয়ের বৈজ্ঞানিক নাম- Gracinia cowa Roxb বা Gracinia idia Roxb. ইংরেজিতে- Cowa (mangosteen) বলা হয়। মাঝারি বৃক্ষ জাতীয় ঝুলন্ত শাখার ঝুপড়ি গাছ। উচু হয় ৩-৬ মিটার। পূর্ণমোচী। গাঢ় সবুজ ও চকচকে সরল পত্র। ফুল ছোট লালাভ-হলুদ ও চতুরাংশক।
চারটি বৃত্তাংশ ও চারটি পাপড়ি হলুদ, বেগুনী কিংবা লাল আভাযুক্ত। পাকলে কমলা-হলুদ হয়। আকারে ছোট কমলা লেবুর মতো মোটা বাকলযুক্ত ফলের ভেতর চুষে খাওয়ার মতো রসালো দানা থাকে চার-পাঁচটি। পাকা ফলের টক-মিষ্টি দানায় কিছুটা কসভাব থাকে। জানুয়ারী-জুলাই ফুল ও ফল ধারণ করে।
আরও পড়ুনঃ কামরাঙ্গার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
চিরহরিৎ অঞ্চল, উষ্ণমন্ডলীয় মালয়েশিয়া, ভারত, চীন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে এই ফল দেখা যায়। জলাবদ্ধতা ও লবনাক্ততা সহনীয় হওয়ায় দেশের সিলেট, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, চট্টগ্রামের মতো উপকূলীয় পিরোজপুর, বরিশাল, বাগেরহাট, পটুয়াখালী অঞ্চলের জঙ্গলে, খালের পাড়ে দেখা মেলে কাউ গাছের।
কাঁচা ফলের রঙ সবুজ। তবে অনেকটাই সুস্বাদু বেগুনী রঙের শক্ত বাকলের mangosteen নামে পরিচিত থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় কাউয়ের আরেকটি প্রজাতি দেখা যায়। দেশের কোন কোন এলাকায় কাউগোলা, তাহগোলা নামেও পরিচিত ফলটি।
পুষ্টিগুণ :
(১০০ গ্রাম প্রতি ৬৩ ক্যালোরি) ক্যালোরি পরিমিতরূপে কম এবং কোন সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল রয়েছে৷ যাইহোক, এটা (১০০ গ্রাম আরডিএ প্রায় ১৩% প্রদান করে) খাদ্যতালিকাগত ফাইবারে সমৃদ্ধ৷কাউফলে ভিটামিন সি এর ভাল উৎস এবং ১০০ গ্রাম প্রতি আরডিএ প্রায় ১২% প্রদান করে৷
ভিটামিন-সি একটি শক্তিশালী জল দ্রবণীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে৷ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল শোষণের মানব দেহের ভাইরাল-ফ্লু বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বিকাশ ও ক্ষতিকর, প্রো-উদ্দীপনাময় ফ্রি-মৌল ময়লা সাফ করতে সাহায্য করে৷
আরও পড়ুনঃ তালের শাঁস কেন খাবেন জানুন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
উপকারিতা :
মুখের অরুচি ভাব দূর করতে : হটাৎ করে মুখে অরুচি দেখা দিলে অরুচি ভাব দূর করার জন্য কাউ ফল খেলে মুখে রুচি ফিরে আসে ।
অপুষ্টির সমস্যায় : অপুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দিলে কাউ ফল খেলে ভাল উপকার পাওয়া যায়।
খিচুনি নিরাময়ে : কাউ গাছের ছাল সিদ্ধ করে সকাল বিকেল সেবন করলে খিচুনি রোগ ভালো হয় ।
ঠান্ডার সমস্যায় : ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দিলে সকাল বিকেল কাউ ফল খেলে উপকার পাওয়া যায় ।
আমাশয় নিরাময়ে : আমাশয় হলে কাউ ফল খেলে আমাশয়ে দ্রুত নিরাময় হয়ে যায় ।
মাথা ধরা নিরাময়ে : মাথা ধরা নিরাময়ের জন্য কাউ ফল খেলে মাথা ধরায় দারুণ উপকার পাওয়া যায় ।
❑ ভেষজ থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ আম খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা