আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: কাইকারটেক হাটের ঐতিহ্যবাহী পুতা মিষ্টি । দেখতে চমচমের মতো; তবে আকারে বড়। একেকটির ওজন এক থেকে দেড় কেজি। সেই মিষ্টির স্বাদ নিতে দূরদূরান্ত থেকে মিষ্টিপ্রেমীরা আসেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাইক্কারটেক হাটে। প্রতি রোববার কাইকারটেক হাট বসে। হাটে এসে অনেকে এই মিষ্টি খান, অনেকে আবার বাড়ির জন্য নিয়ে যান। এ হাটের অন্যতম আকর্ষণ বিশেষ ধরনের পুতা মিষ্টি।
মূলত এ হাটটির নাম কাইকারটেক হাট। তবে প্রতি রোববার এই হাটটি বসে বলে একে রোববারের হাটও বলা হয়ে থাকে।
এই হাটে পুতা মিষ্টি নামে এক প্রকার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি পাওয়া যায়, যার স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। মিষ্টিটি দেখতে স্বাভাবিক মিষ্টির চেয়েও কিছুটা বড়। অনেকটা শিলপোতার মতো। এ মিষ্টির জন্য এখানে ছুটে আসেন অনেক মিষ্টিপ্রেমী।
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কাইক্কারটেক হাটটি অন্তত ২০০ বছরের পুরোনো। সাপ্তাহিক এই হাট পুতা মিষ্টি, কাঠের তৈরি নৌকা ও গরু-ছাগল বেচাকেনার জন্য প্রসিদ্ধ। তবে এই হাটে এখন আর আগের মতো গরু-ছাগল বেচাকেনা হয় না। পুতা মিষ্টি ও নৌকার পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে হাটটি। হাটের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাবেচা হয়।
আরও পড়ুনঃ ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ীর ‘ক্ষীর চমচম’
প্রতি কেজি পুতা মিষ্টি বিক্রি হয় ২০০ টাকায়। ছোট আকারের পুতা মিষ্টিও আছে। একেকটি ছোট পুতা মিষ্টির দাম ৫০ টাকা। এ ছাড়া বড় রসগোল্লা প্রতিটি ৫০ টাকা, ছোট রসগোল্লা প্রতি কেজি ২০০ টাকা, কালো জাম প্রতি কেজি ২০০ টাকা, বালুশাই প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও দই প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
পুতা মিষ্টি তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে দিলীপ ঘোষ বলেন, দুধ থেকে প্রথমে ছানা বানানো হয়। সেই ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে ঘন চিনির শিরায় জাল দিয়ে পুতা মিষ্টি তৈরি করা হয়।
হাটে আসা হোসেনপুর এলাকার ব্যবসায়ী বলেন, ‘কাইক্কারটেক হাট পুতা মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। এই মিষ্টি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। বহু জায়গায় মিষ্টি খাই, তবে পুতা মিষ্টির স্বাদ অন্য রকম লাগে।’
পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদের তীরে হাটটির চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ অপরূপ। হাটের পাশেই রয়েছে কাইকেরটেক ব্রিজ। ব্রিজ থেকে যেদিকেই তাকাবেন চোখে পড়বে অবারিত সবুজ। হাটে বিক্রি হওয়া মজার মজার খাবারের স্বাদ আপনার মনে থাকবে বহু দিন।
নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলার মানুষের কাছে এটি কাইকারটেক হাট নামেই পরিচিত। স্থানীয়দের দাবি, ঐতিহাসিক এই কাইকারটেক নৌকার হাটটি প্রায় দুই থেকে আড়াইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। হাটের প্রাচীন নির্দশন ও পাতা ঝরা কড়ই গাছগুলো যেন হাটের বয়সকালের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আরও পড়ুনঃ চালু হচ্ছে সি প্লেন, সারা বছর যাওয়া যাবে সেন্টমার্টিন