আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ঐতিহাসিক সোমপুর বৌদ্ধ বিহার, নওগাঁ । আপনি ভাবতে পারেন নওগাঁয় দেখার মতো কী আছে? হঠাৎ মনে পড়ে যেতে পারে স্কুলের কথা। কেননা আপনি স্কুলে পড়েছেন ‘সোমপুর বৌদ্ধ বিহার’। মন ভরে দেখার মতো বাংলাদেশে যত ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে, সোমপুর বিহার তার মধ্যে অন্যতম।
এমন দর্শনীয় স্থান না দেখে এত কাছ থেকে ঘুরে যাবেন তা কি হয়? তাই বৌদ্ধ বিহার দেখার প্লান করতে করতে আপনি সোমপুর বিহারসহ নওগাঁর ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরে আসতে পারেন।
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার (Paharpur Buddhist Vihara) বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার যা নওগাঁ (Naogaon) জেলার বদলগাছী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিমি উত্তরে অবস্থিত।
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়।
পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। আয়তনে এর সাথে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা হতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, চীন, তিব্বত, মায়ানমার ( তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন।
আরও পড়ুনঃ শীতে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে যেসব স্পট ঘুরে দেখবেন
❑ অবস্থান
পাহাড়পুরের অবস্থান নওগাঁর বদলগাছি থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নে। নওগাঁ মূলত সমতলভূমি এলাকা। তারপরও এই এলাকার নাম শুনে অপনার মনে কৌতূহল জাগতেই পারে। পাহাড় ছাড়া কীভাবে হলো পাহাড়পুর। অষ্টম শতাব্দী থেকে দশম শতাব্দী পর্যন্ত বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শাসন ছিল। ১২ শতকের শেষের দিকে বৌদ্ধধর্ম একরকম উঠেই যায়।
❑ আয়তন
পাহাড়পুরের পুরাকীর্তি এলাকাটির আয়তন ৪০ একর। তবে বিহার অঙ্গনের আয়তন ২৭ একর।
❑ কি আছে বৌদ্ধ বিহারে
বৌদ্ধ বিহারটির ভূমি-পরিকল্পনা চতুষ্কোনাকার। উত্তর ও দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ২৭৩.৭ মি এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৭৪.১৫ মি। এর চারদিক চওড়া সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল বরাবর অভ্যন্তর ভাগে সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ ছিল। উত্তর দিকের বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ।
এই কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রতিটি মেঝে বিছানো ইঁটের ওপর পুরু সুরকী দিয়ে অত্যন্ত মজবুত ভাবে তৈরি করা হয়েছিলো। সর্বশেষ যুগে ৯২টি কক্ষে মেঝের ওপর বিভিন্ন আকারের বেদী নির্মাণ করা হয়। এ থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রথম যুগে সবগুলো কক্ষই ভিক্ষুদের আবাসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীকালে কিছু কক্ষ প্রার্থনাকক্ষে রুপান্তর করা হয়েছিলো।
আরও পড়ুনঃ গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, চট্রগ্রাম
কক্ষগুলোর প্রতিটিতে দরজা আছে। এই দরজাগুলো ভেতরের দিকে প্রশস্ত কিন্তু বাইরের দিকে সরু হয়ে গেছে। কোন কোন কক্ষে কুলুঙ্গি পাওয়া যায়। কুলুঙ্গি সম্বলিত কক্ষগুলোর মেঝেতে দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য বেশ কিছু দ্রব্যাদি পাওয়া যায়। ভেতরের দিকে কক্ষগুলোর দৈর্ঘ্য ৪.২৬ মি এবং প্রস্থ ৪.১১ মি। কক্ষের পেছনের দিকের দেয়াল অর্থাৎ সীমানা দেয়াল ৪.৮৭মি এবং সামনের দেয়াল ২.৪৪মি চওড়া। কক্ষগুলোর সামনে ২.৫মি প্রশস্ত টানা বারান্দা আছে। ভেতরের দিকের উন্মুক্ত চত্বরের সাথে প্রতিটি বাহু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত।
বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর রয়েছে প্রধান ফটক। এর বাইরের ও ভেতরের দিকে একটি করে স্তম্ভ সংবলিত হলঘর এবং পাশে ছোট ছোট কুঠুরি আছে। এই কুঠুরিগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত। প্রধান ফটক এবং বিহারের উত্তর-পূর্ব কোনের মাঝামাঝি অবস্থানে আরও একটি ছোট প্রবেশ পথ ছিলো। এখান থেকে ভেতরের উন্মুক্ত চত্বরে প্রবেশের জন্য যে সিঁড়ি ব্যবহৃত হত তা আজও বিদ্যমান।
উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম বাহুতেও অনুরুপ সিঁড়ির ব্যবস্থা ছিলো। এদের মাঝে কেবল পশ্চিম বাহুর সিঁড়ির চিহ্ন আছে। উত্তর বাহুর প্রবেশ পথের সামনে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত একটি পুকুর ছিল। ১৯৮৪-৮৫ সালের খননে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম নির্মাণ যুগের পরবর্তী আমলে এ পুকুর খনন করা হয় এবং এসময় এ অংশের সিঁড়িটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে পুকুরটি ভরাট করে দেয়া হয়।
❑ কেন্দ্রীয় মন্দির
বিহারের অন্তর্বর্তী স্থানের উন্মুক্ত চত্বরের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দিরের ধ্বংশাবশেষ। বিস্ময়কর মূল মন্দিরটি স্থাপত্য শিল্পের অনুপম নিদর্শন। অসাধারণ এর শৈল্পিক পরিকল্পনা। মন্দিরের দেয়াল জুড়ে পাওয়া যায় প্রায় ২ হাজারটি অপূর্ব পোড়ামাটির ফলকচিত্র।
এতে বিচ্ছুরিত হয়েছে প্রাচীণ বাংলার সাধারণ জনজীবনের প্রত্যাহিক প্রতিচ্ছবি। যেমনঃ মানুষ, শিকারি, নৃত্যরত রমণী, রাখাল, গাছপালা, ফুল, পশু-পাখি, হাতি, ঘোড়া আরো কত কি। চারিদেকে তাকালে চোখে পড়ে নান্দনিক শিল্প সুষমার সমাহার।
আরও পড়ুনঃ কুয়াকাটা সৈকতের অজানা ১০ স্থানে রয়েছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য
মূল মন্দিরটি ছিল বিহারের মাঝখানে। মূল পরিকল্পনাটির কেন্দ্রে দরজা-জানালা বিহীন একটি শূন্যগর্ভ চতুষ্কোণাকার প্রকোষ্ঠ আছে। এই প্রকোষ্ঠটি মন্দিরের তলদেশ থেকে চূড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলতঃ এ শূন্যগর্ভ প্রকোষ্ঠটিকে কেন্দ্র করেই সুবিশাল এ মন্দিরের কাঠামো নির্মিত।
এটি ধাপে ধাপে পিরামিডের মত করে উপরের দিকে উঠে গেছে। এখানে ছিল প্রদক্ষিণ পথ। মন্দিরটির দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুট, প্রস্থ ৩৫০ ফুট। প্রধান মন্দিরটি তৈরী করা হয়েছিল ইটের সাথে কাদা মাটি মিশিয়ে। ঐতিহাসিকরা মনে করেন এই মন্দিরের নয়নাভিরাম গঠন শৈলী পরবর্তীতে বেশ প্রভাব বিস্তার করেছিল বার্মা, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার জাভা আর বালি দ্বীপের বিভিন্ন বিহার নির্মাণকে।কেন্দ্রীয় শূন্যগর্ভ কক্ষে একটি ইঁট বাধানো মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে।
এ মেঝে কক্ষের বাইরে চারদিকের কক্ষ ও মন্ডপের প্রায় একই সমতলে অবস্তথিত। কিন্তু চারদিকের কক্ষগুলো থেকে কেন্দ্রীয় এ কক্ষে যাওয়ার কোন পথ বা দরজা নেই এবং আগে ছিলো,পরে বন্ধ করা হয়েছে এমন কোন প্রমাণও পাওয়া যায় না। কক্ষে মূর্তি রাখার বেদী বা কুলুঙ্গী কিছুই নেই।
তাই অনুমিত হয় ফাঁপা এ দন্ডটি মন্দিরের সুউচ্চ দেয়ালগুলোর সুদৃঢ় নির্মানের জন্য একটি উপকরণ ছিল। মূর্তিগুলো সম্ভবত এর চারদিকের কক্ষগুলোতে স্থাপন করা হয়েছিলো। মন্দিরের শীর্ষদেশের কোন নিদর্শন নেই বিধায় এর ছাদ সম্বন্ধে সুস্পষ্ট কিছু বলা যায় না।উন্মুক্ত অঙ্গন
বিহারের মধ্যবর্তী উন্মুক্ত অঙ্গনে আরও কিছু ইমারতের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এদের মাঝে বেশ কিছু ইমারতের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অঙ্গনের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ভোজনশালা ও রন্ধনশালা অবস্থিত। এ দুটি স্থাপনার মাঝে ৪৬মি দীর্ঘ ইট বাঁধানো একটি নর্দমা আছে এবং এর কাছে এক সারিতে তিনটি কূপ আছে।
এছাড়াও রয়েছে কিছু নিবেদন স্তূপ, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রতিকৃতি ইত্যাদি। নিবেদন স্তূপগুলোর মাঝে দক্ষিণ-পূর্বাংশে অবস্থিত স্তূপটি ১৬কোণ বিশিষ্ট নক্ষত্র আকৃতির। অনুচ্চ একটি মঞ্চের মাঝে সংস্থাপিত এ স্তূপটির সংলগ্ন স্থানে রয়েছে একটি পাকা কূপ। অন্যান্য নিবেদন স্তূপগুলো বিক্ষিপ্তভাবে নির্মিত। চত্বরের উত্তর-পূর্বাংশের ইমারতগুলো সম্ভবত প্রশাসনিক এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হত।
আরও পড়ুনঃ একদিনেই ঘুরে আসুন পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে
❑ স্নানাগার ও শৌচাগার
এটি মূলত বিহারের বাইরের অবস্থিত স্থাপনা। বিহারের দক্ষিণ দেয়াল হতে ২৭মি দক্ষিণে অবস্থিত একটি মঞ্চে অনেকগুলো স্নানাগার ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছিলো। এটি বিহারের ১০২ নম্বর কক্ষ থেকে একটি উঁচু বাধানো পথ দ্বারা সংযুক্ত। এই পথের নিচে বিহার দেয়ালের সমান্তরালে একটি ভল্টযুক্ত খিলান রয়েছে। সম্ভবত বিহারের বহির্ভাগে অবাধে চলাচল এবং চারদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য এইরুপ করা হয়েছিলো।
❑ সন্ধ্যাবতীর ঘাট
বিহারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ থেকে প্রাচীরের বাইরে শানবাঁধানো ঘাট আছে। এটাকে সন্ধ্যাবতীর ঘাট বলা হয়। রাজা মৈদলনের কন্যা সন্ধ্যাবতী এ ঘাটে নিয়মিত স্নান করতেন। বিহারের পাশ দিয়েই একটি নদী প্রবাহিত ছিল। এর দুপাশে প্রতিটি দেয়াল ১.৫মি প্রশস্ত। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ঘাটটি ঢালু হয়ে প্রায় ১২মি নিচে নেমে গিয়েছে।
❑ গন্ধেশ্বরী মন্দির
স্নানঘাট থেকে ১২ মি পশ্চিমে পূর্বমুখী একটি ইমারত পাওয়া গেছে যাকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় গন্ধেশ্বরীর মন্দির।এর দৈর্ঘ্য ৬.৭মি ও প্রস্থ ৩.৫মি। এর সম্মুখ দেয়ালের ইটে পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের নকশা এবং গাঁথুনিতে ব্যবহৃত উপাদান দেখে মনে হয় এদেশে মুসলমান যুগের প্রথম এ ইমারতটি নির্মিত হয়েছিলো। এতে একটি চতুষ্কোণ হলঘর রয়েছে।
হলঘরের মধ্যবর্তী স্থানে অষ্টকোণাকৃতি একটি স্তম্ভের নিম্নাংশ পাওয়া যায়। পশ্চিমের উদগত একটি দেয়ালের বাইরের দিকে ১.৪মি বাহু বিশিষ্ট বর্গাকার একটি পূজার কক্ষ রয়েছে। তাছাড়া হলঘরের চারটি কুলুঙ্গিতেও মূর্তি স্থাপনের ব্যবস্থা আছে।মন্দিরের সামনে একটি চত্বর আছে। এর মেঝে খাড়া ভাবে স্থাপিত ইট দিয়ে গাঁথা এবং গাঁথুনি পাহাড়পুরের অন্যান্য স্থাপত্য-নিদর্শন থেকে পৃথক।
❑ সত্যপীরের ভিটা
সত্যপীরের ভিটা পাহাড়পুর বিহার থেকে ৩৬৫ মিটার পূর্বে অবস্থিত। এ ভিটায় একটি তারা মন্দির এবং বিভিন্ন আকার ও আয়তনের প্রচুর নিবেদন স্তূপের ধ্বংসাবশেষ বিদ্যমান। মন্দির অঙ্গনের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০টি পোড়ামাটির ফলক, আটহাত বিশিষ্ট দেবীমূর্তি ও বৌদ্ধ ধর্মীয় মতবাদ লিপি খোদিত পোড়ামাটির গোল সীলগুলি থেকেই এই ভিটা ও তারা মন্দিরের অভিন্নতা প্রতিপন্ন হয়েছে।
মন্দির এলাকায় ১৩২টি নিবেদন স্তূপ আছে। মন্দিরের চতুর্দিকে বিভিন্ন আকৃতির ও নকশার নিবেদন সূতপের সংখ্যাধিক্য এবং অলংকরণ এর খ্যাতি ও গুরুত্বের প্রতি সাক্ষ্য দেয়। এখানকার স্তূপগুলির মধ্যে প্রধান মন্দিরের কাছাকাছি অঙ্গনের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত চতুষ্কোণ স্তূপটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সূতপের প্রতিবাহুর দৈর্ঘ্য ৩ মি এবং বহির্ভাগের সূতপটি অলংকৃত ইট দিয়ে শোভিত।
খননের ফলে এই সূতপের মধ্যস্থলে ১ মি বর্গ বিশিষ্ট একটি বাঁধানো স্মারক-কুঠুরি আবিষ্কৃত হয়েছে। কুঠুরিটি কয়েক হাজার ছোট ছোট মাটির নিবেদন সূতপের প্রতিকৃতি দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। মনে হয় মন্দিরে আগত হাজার হাজার তীর্থযাত্রী তাদের ভক্তি ও শ্রদ্ধার প্রতীকস্বরূপ এগুলি স্মারক কুঠুরিতে উৎসর্গ করতেন।
আরও পড়ুনঃ মনের ক্লান্তি মেটানোর এক অপরূপ স্থান নিকলী হাওর
❑ বৌদ্ধ বিহার কিভাবে যাবেন
দেশের যেকোন প্রান্ত হতে নওগাঁ শহরে এসে নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায়। আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিঃমিঃ এবং বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা। অথবা দেশের যেকোন প্রান্ত হতে জয়পুরহাট শহরে এসে বাস অথবা অটোরিক্সা নিয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার চলে আসতে পারবেন। জয়পুরহাট হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার।
ট্রেন যোগে জয়পুরহাটের জামালঞ্জ ষ্টেশনে নামলে এখান হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে আসতে চাইলে আপনাকে ভ্যান অথবা অটোরিক্সা নিতে হবে। জামালগঞ্জ হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।
❑ কোথায় থাকবেন
জয়পুরহাটে থাকলেই আপনার জন্য ভালো হবে। তবে পাহাড়পুরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি রেস্টহাউস আছে।
তবে ওখানে থাকতে হলে প্রত্নতত্ত্ব অফিস বগুড়া অথবা ঢাকা থেকে অনুমতি নিতে হবে। এ ছাড়া নওগাঁ ও জয়পুরহাটে অবস্থিত অনেক হোটেল আছে, তাতেও থাকতে পারবেন সীমিত খরচে।
❑ কী খাবেন
নওগাঁ জেলার খাবারদাবার দেশের অনন্য জেলার মানুষের মতোই। প্রায় সব হোটেলেই ভাত, ডাল মাছ, মাংস পাওয়া যায়। রুটি, পরেটা, সবজিও পাওয়া যায় সকালের নাশতা হিসেবে।
নওগাঁ জেলা চাল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য বিখ্যাত। পোলাও, পায়েস বা বিরিয়ানির জন্য কম দামে ভালো মানের চাল নিয়ে আসতে পারেন। তাই আর দেরি না করে প্ল্যান করে চলে যেতে পারেন সোমপুর বিহারসহ নওগাঁর ঐতিহাসিক জায়গায়। আর এমন দর্শনীয় স্থান দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে ঢাকায় ফিরে আসতে পারেন এক ভিন্নরকম স্মৃতি নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের বৈচিত্রময় স্থান কটকা সমুদ্র সৈকত
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ এ প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ দায়ী থাকবে না।
দৃষ্টি আকর্ষণ: যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
[আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান।]
✺ আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক ✺ আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ
❑ ভ্রমণ থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ কানাডার জনপ্রিয় ৭ ভ্রমণ স্পট