আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: এলাচ খান, বদলে যাবে জীবন । এলাচ এমন একটি মশলা উপাদান, যা মোটামুটি সকলের রান্নাঘরেই উপস্থিত থাকে এবং নানা রকমের খাবারে বিশেষ সুগন্ধ ও স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এলাচের ব্যবহার কেবল মাত্র রান্নাতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং নানা ওষুধই গুণাবলী এবং স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভূমিকা রাখছে।
এলাচে রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, কোলেস্টেরল, ফাইবার, নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, পাইরিডক্সিন, থিয়ামিন, ইলেক্ট্রোলাইট, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম,জিঙ্ক, ভিটামিন এ, সি সহ আরো অনেক উপাদান। এলাচের উপকারিতা:
সর্দি-কাশি নিরাময়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এলাচ। তবে এটি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে- সবুজ এবং কালো। বেঙ্গালুরুভিত্তিক পুষ্টিবিদ ডা. অঞ্জু সুদ জানিয়েছেন- কালো এলাচ সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এ জন্য মধুর সঙ্গে কিছু এলাচ গুঁড়ো পানিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে এই এলাচ চা অনেক উপকারে আসে। শরীরে উষ্ণতা প্রদান করে।
আরও পড়ুনঃ লবঙ্গের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
হজম শক্তি বৃদ্ধি: এলাচের শক্তিশালী গন্ধের কারণে এটি কেবল খাবারের স্বাদই বৃদ্ধি করে না। সেই সঙ্গে সংবেদনশীল উপাদানকেও সক্রিয় করতে সহযোগিতা করে। একইভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। বদ হজম, গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো পেটের সমস্যা দূর করতে এলাচ অনেক কার্যকর।
মুখের দুর্গন্ধ রোধ: এমন অনেকে আছেন যারা নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করার পরও মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। তাদের জন্য এলাচ খুবই উপকারী। এটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে এর ফুল ও মিষ্টি সুগন্ধ থেকে মুখে আর কোনো দুর্গন্ধ থাকে না। এছাড়া মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে মুখের স্বাস্থের উন্নতি করে থাকে এলাচ।
চুলকানি প্রতিরোধ: চুলকানির সমস্যা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বাজারে পাওয়া সাধারণ মলম ব্যবহারেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বড় এলাচি চন্দনের মতো ঘষে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মাথা ব্যথা দূর করে: প্রায় কম-বেশি সবারই মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। এ জন্য গরম পানিতে এলাচ গুঁড়ো ও মধু মিশিয়ে ফুটিয়ে এলাচ চা তৈরি করুন। মাথা ব্যথার সময় গরম গরম এক কাপ এলাচ চা পানের পর নিজেই উপকারিতা বুঝতে পারবেন।
হৃদরোগ প্রতিরোধ: উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় এলাচ খুব উপকারী। স্যুপ বা স্টু-এর মধ্যে এলাচ মিশিয়ে খেলে খুব সহজেই কিছু দিনের মধ্যে রক্তচাপ নীচে নামতে শুরু করে। হৃদরোগ প্রতিরোধ হয় এবং হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে।
রক্তের ঘনত্ব ঠিক রাখে: রক্তনালীতে রক্ত জমে যাওয়ার সমস্যা সমাধানে এলাচের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিদিন এলাচ খেলে রক্তের ঘনত্ব সঠিক থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়: এলাচের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হার্টের জন্যে ভালো। কোলেস্টেরল কম করতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপেও দারুণ একটি ওষুধ এলাচ।
মানসিক উদ্বেগ কমায়: নিয়মিত এলাচের নির্যাস পানিও পান করলে মানসিক উদ্বেগ অনেকটাই কমে যায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
বয়সের ছাপ দূর করে: এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে বয়সের ছাপ, রিংকেল, ফ্রি র্যাহডিকেল ইত্যাদি পড়তে বাঁধা প্রদান করে। এলাচ ত্বকের ক্ষতি পূরণেও বেশ সহায়ক।
হেঁচকি সমাধান: হেঁচকির সমস্যার সমাধানে এক কাপ গরম জলে এক চা চামচ এলাচ মিশিয়ে ১৫ মিনিট রেখে সেটি আসতে আসতে পান করলে উপকার হয়।
শ্বাসকষ্ট দূর হয়: মধু, লেবুর রস ও গরম জলের সঙ্গে একটা এলাচ মিশিয়ে দিয়ে পান করলে শ্বাসকষ্ট দূর হবে। যাঁরা হুপিংকাশি ও ফুসফুস সংক্রমণের মতো সমস্যায় ভোগেন তাঁদের জন্য এলাচ খুবই উপকারী।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লেবু