আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ঈসা (আ.) সম্পর্কে যেসব তথ্য আপনাকে চমকে দেবে । ঈসা (আ.) ছিলেন বনি ইসরাঈলের সর্বশেষ নবী ও রাসুল। তাঁর পর থেকে শেষ নবী মুহাম্মদ (স.) পর্যন্ত আর কোনো নবী আগমন করেননি। ২ হাজার বছরের বেশি সময় আগে ফিলিস্তিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পবিত্র কোরআনের ১৫টি সুরার ৯৮টি আয়াতে আল্লাহ তাআলা ঈসা (আ.)-এর প্রসঙ্গ এনেছেন। ঈসা (আ.)-এর কিছু বৈশিষ্ট্য এখানে তুলে ধরা হলো।
ঈসা (আ.)-এর জন্মের পেছনে পুরুষের ভূমিকা ছিল না। অর্থাৎ তিনি ছিলেন পিতাবিহীন একমাত্র নবী। (সুরা আলে ইমরান: ৪৬)
স্বয়ং আল্লাহ তাঁর নাম রেখেছেন ঈসা মাসিহ। (সুরা আলে ইমরান: ৪৫)
তিনি মাতৃক্রোড়ে থেকেই সারগর্ভ বক্তব্য দেন। (সুরা মরিয়ম: ২৭-৩৩, সুরা আলে ইমরান: ৪৬)
দুনিয়া ও আখিরাতে তিনি ছিলেন মহাসম্মানের অধিকারী এবং আল্লাহর একান্ত প্রিয়জনদের অন্যতম। (সুরা আলে ইমরান: ৪৫)
তিনি শয়তানের অনিষ্টতা থেকে মুক্ত ছিলেন। (সুরা আলে ইমরান: ৩৬-৩৭)
তিনি বনি ইসরাঈলের প্রতি প্রেরিত হয়েছিলেন। (সুরা আলে ইমরান: ৪৯)
তিনি শেষ নবী ‘আহমদ’ (স.)-এর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। (সুরা ছফ: ৬)
আরও পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসির বিস্ময়কর ফজিলত
ঈসা (আ.)-এর বিশেষ অলৌকিক ক্ষমতার অন্যতম হলো- ক. তিনি মাটির তৈরি পাখিতে ফুঁক দিলেই তা জীবন্ত হয়ে উড়ে যেত। খ. তিনি জন্মান্ধকে চক্ষুষ্মান ও কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করতে পারতেন। গ. তিনি মৃতকে জীবিত করতে পারতেন। ঘ. তিনি বলে দিতে পারতেন, মানুষ বাড়ি থেকে যা খেয়ে আসে এবং যা সে ঘরে সঞ্চিত রেখে আসে। (সুরা আলে ইমরান: ৪৯, সুরা মায়েদা: ১১০)
তিনি আল্লাহর কিতাব ইনজিল লাভ করেছিলেন এবং আগের গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। তবে তাওরাতে হারামকৃত অনেক বিষয়কে তিনি আল্লাহর হুকুমে হালাল করেন। (সুরা আলে ইমরান: ৫০)
তিনি ইহুদিদের চক্রান্তের শিকার হয়ে নির্যাতনের সম্মুখীন হন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাঁকে সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন। (সুরা আলে ইমরান: ৫২, ৫৪, ৫৫, সুরা নিসা: ১৫৮)
তিনিই একমাত্র নবী, যাঁকে মহান আল্লাহ জীবিত অবস্থায় দুনিয়া থেকে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। শত্রুরা তাঁরই মতো আরেকজনকে সন্দেহের বশে শূলে চড়িয়ে হত্যা করে এবং তারা নিশ্চিতভাবেই ঈসাকে হত্যা করতে পারেনি। (সুরা নিসা: ১৫৭)
হাদিসে এসেছে, ঈসা (আ.) কেয়ামতের আগে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। সেসময় তিনি ’ক্রুশ’ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর মেরে ফেলবেন এবং যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। তখন সম্পদের স্রোত বয়ে চলবে। এমনকি কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না। তখন আল্লাহকে একটিমাত্র সেজদা সমগ্র দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত সম্পদ থেকে বেশি মূল্যবান বলে গণ্য হবে। কিতাবিদের মধ্যে প্রত্যেকে তাঁর মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে বিশ্বাস করবেই এবং কেয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন। (সহিহ বুখারি: ৩২০৫)
পৃথিবীতে তিনি কীভাবে অবতরণ করবেন সে সম্পর্কে নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, নবী ঈসা (আ.) জাফরানের রঙের দুটি পোশাক পরে এবং দুজন ফেরেশতার পাখার ওপর হাত রেখে দামেশক শহরের পূর্বে অবস্থিত সাদা মিনারের উপরে অবতরণ করবেন।’ (মুসলিম: ২৯৩৭)
হাদিসে আরও এসেছে, তখন পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে দাজ্জাল। তখন ঈসা (আ.) অবতরণ করে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। মুজাম্মা ইবনে জারিয়া আনসারি (রা.) বর্ণনা করেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ঈসা ইবনে মরিয়ম দাজ্জালকে বাবে লুদে হত্যা করবেন। (মুসনাদ আহমদ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা-৪২০; সুনানে তিরমিজি: ২২৪৪)
আরও পড়ুনঃ নফল রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত