ঈদুল আযহার শিক্ষা-ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক মানবতা
মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। এই দিনটি শুধু পশু কোরবানির মাধ্যমে উৎসব উদযাপনের দিন নয়, বরং এটি ত্যাগ, বিশ্বাস ও আত্মসমর্পণের এক অনন্য প্রতীক। হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)–এর আত্মত্যাগের ইতিহাস আমাদের শেখায়—আল্লাহর নির্দেশে নিঃশর্ত আনুগত্য এবং ত্যাগের মহান আদর্শ। এর মহান ত্যাগের স্মরণে আমরা প্রতিবছর পালন করি এই ঈদ।
আজকের ঈদুল আযহা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনে শুধু ভোগ নয়, ত্যাগেরও এক আলাদা সৌন্দর্য আছে। আমরা অনেক সময় ঈদকে শুধুই উৎসব, বিলাস আর খরচের প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ করে ফেলি। এই উৎসব আমাদের শেখায়, শুধু পশু কোরবানি নয়, বরং নিজের লোভ, অহংকার, হিংসা—এসবকেও কোরবানি দেওয়া জরুরি। ঈদের প্রকৃত মাহাত্ম্য তখনই আসে, যখন একজন মানুষ নিজেকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহর নিকট সমর্পণ করে।
কোরবানির সাথে সাথে ঈদুল আযহা আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়। গরিব-দুঃখীদের মাঝে কোরবানির মাংস বণ্টন, প্রতিবেশীদের খোঁজ রাখা, এবং সমাজে ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বন্ধন গড়ে তোলাই এই ঈদের মূল শিক্ষা।
আরও পড়ুন:
❒ পহেলা বৈশাখ: ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও জাতিগত ঐক্যের প্রতীক
❒ পবিত্র ঈদুল ফিতর: আনন্দ ও উদারতার উপলক্ষ্য
❒ তেরো বছর পূর্তিতে আইসিটি ওয়ার্ল্ড নিউজ
❒ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মপরিচয়ের দিন
ঈদুল আযহার সময় আমাদের দায়িত্বশীল আচরণও জরুরি। পশু জবাইয়ের পর পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, যথাস্থানে কোরবানি করা, এবং পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেওয়া উচিত। শুধু ধর্ম নয়, এটি নৈতিক দায়িত্বও।
ঈদুল আযহা আমাদের আত্মশুদ্ধির, ত্যাগের এবং সাম্যবোধের এক চমৎকার পাঠ দেয়। এবারের ঈদ হোক অহংকার ভাঙার, মানবিক গুণের চর্চার এবং সত্যিকারের মুসলিম চেতনায় উদ্ভাসিত হবার এক নতুন প্রতিজ্ঞা।
ত্যাগ হোক আমাদের চরিত্র, আর ভালোবাসা হোক আমাদের পরিচয়।
ঈদ মোবারক।
❑ সম্পাদকীয় থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: মহান মে দিবস: শ্রমের মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক