আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ফ্যান, টিভি ও ফ্রিজে বিদ্যুৎ বিল কত ? বর্তমানে সবার বাসায় ছোট কিংবা বড়, এক বা একাধিক ফ্যান, টিভি ও ফ্রিজ রয়েছে। এসব ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বিদ্যুৎ বিলে বেশ প্রভাব ফেলে। খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার, যেহেতু এই পণ্যগুলো পুরোপুরি বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল তাই এগুলো ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসতে পারে।
ফ্যান
গরমে ঘরে সারাক্ষণ ফ্যান ঘুরতেই থাকে। ঘরে ছোট শিশু বা বয়োজ্যেষ্ঠ থাকলে একাধিক ফ্যানও চালাতে হয়। তবে তীব্র তাপদাহে ফ্যান শরীর জুড়ালেও মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল দেখে যে কারও কপালে ঘাম জমতে শুরু করবে। কিন্তু আসলে একটি ফ্যান চালাতে মাসে খুব বেশি বিল আসে না।
বিভিন্ন কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসতে পারে। শুধু একটি ফ্যানের এক মাসের বিদ্যুৎ বিল কত তার হিসাব বের করতে পারলে আপনি অনেকটাই বুঝতে পারবেন বিল বেশি আসার কারণ। ফ্যান বা এসি যেটাই ব্যবহার করেন না কেন টিপস মেনে ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল আসবে সাধ্যের মধ্যেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক একটি ফ্যানে মাসে কত বিল আসতে পারে।
আরও পড়ুনঃ সস্তায় বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির মতো, একটি সিলিং ফ্যানও তার শক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ খরচ করে। সিলিং ফ্যান একটানা অনেক ঘণ্টা ধরে চলে। তাই কোম্পানিগুলো বেশি পাওয়ার যুক্ত ফ্যান তৈরি করে। সাধারণত সিলিং ফ্যান ৭০ ওয়েট থেকে ১০০ ওয়াট হয়। তাহলে ধরুন যদি একটি সিলিং ফ্যান ৭০ ওয়াটের হয় তাহলে এটি এক ঘণ্টায় ৭০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। দিনে যদি ১০ ঘণ্টা একটি ফ্যান চলে তাহলে খরচ হবে ১০×৭০ = ৭০০ ওয়াট শক্তি।
এবার বিদ্যুৎ বিল প্রতি ইউনিট যদি হয় ৭ টাকা ৫০ পয়সা তাহলে ১০ ঘণ্টায় দিনে ০.৭ ওয়াট × ৭.৫০ = ৫.২৫ টাকা খরচ হবে। অর্থাৎ একদিনে একটি ফ্যানের জন্য খরচ হবে ৫.২৫ টাকা। এক মাসে খরচ হবে ৫.২৫×৩০= ১৫৭.৫ টাকা অর্থাৎ প্রায় ১৫৮ টাকা।
আরও অনেক পদ্ধতিতে এই হিসাব করতে পারবেন। যেমন ধরুন, আপনার ঘরের ফ্যানটি যদি ১০০ ওয়াটের হয় তাহলে ১০ ঘণ্টা চললে মোট ১০×৩০ = ৩০০ ঘণ্টা চলবে মাসে। বিদ্যুৎ খরচ দাঁড়ায়, ১০০×৩০০ ওয়াট বা ঘণ্টা=৩০,০০০ ওয়াট বা ঘণ্টা। ৩০,০০০÷১০০০ ইউনিট=৩০ ইউনিট। এবার বিদ্যুৎ বিল প্রতি ইউনিট যদি হয় ৭ টাকা ৫০ পয়সা তাহলে ফ্যানের এক মাসে খরচ হবে ৩০×৭.৫০ = ২২৫ টাকা।
তবে এটি সম্পূর্ণই নির্ভর করবে আপনার ফ্যানের পাওয়ার এবং বিদ্যুতের ইউনিটের উপর। বর্তমানে অনেক কম পাওয়ারের ফ্যান পাওয়া যায় বাজারে। সেগুলোতে মাস শেষে খরচ হবে আরও কম।
টিভি
টিভির ক্ষেত্রে আপনি টিভি কত সময় ধরে ব্যবহার করছেন, তার ওপর নির্ভর করে। ধরুন আপনার টিভি প্রতি ঘণ্টায় ১০০ ওয়াট খরচ করে এবং দিনে ৮ ঘণ্টা চলে। এক মাসে ৮×৩০=২৪০ ঘণ্টা চালু থাকে।
তাহলে একটি টিভির এক মাসে মোট বিদ্যুৎ খরচ দাঁড়ায়, ১০০×২৪০ ওয়াট বা ঘণ্টা=২৪,০০০ ওয়াট বা ঘণ্টা। ২৪০০০÷১০০০ ইউনিট=২৪ ইউনিট। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিলের বিভিন্ন স্টেপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ বিলের হার ১২.৩ টাকা এবং সর্বনিম্ন হার ৪.৪০ টাকা। তাহলে একটি টিভির সর্বোচ্চ মাসিক বিল দাঁড়ায়, ২৪×১২.৩=২৯৫.২ টাকা এবং সর্বনিম্ন মাসিক বিল দাঁড়ায় ২৪×৪.৪০=১০৫.৬ টাকা।
ফ্রিজ
একটি ফ্রিজের জন্য মাসে বিদ্যুৎ বিল কত আসে? ভালো মানের নতুন রেফ্রিজারেটরের জন্য বিদ্যুতের বিল প্রতি মাসে গড়ে ১৫০-২০০ টাকা হতে পারে। তবে বার বার খোলা কিংবা বেশিক্ষণ খোলা রাখলে সামান্য কিছু খরচ বেশি হতে পারে। ৫ বছরের বেশি পুরোনো রেফ্রিজারেটরের বিদ্যুতের বিল দেড় থেকে দুই গুণ বেশি হতে পারে।
একটি ১০-১৫ সিএফটি (বা ২৮০ থেকে ৪২০ লিটার) রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ সাধারণত ৩০০ ওয়াটের হয়ে থাকে। কোন রেফ্রিজারেটর কত পাওয়ার নেয়, তা এর নেমপ্লেটে উল্লেখ থাকে। এখানে ৩০০ ওয়াটের একটি ফ্রিজ কী পরিমাণ পাওয়ার খরচ করে এবং মাসে কী পরিমাণ বিল আসতে পারে তা হিসাব করা যাক।
একটি ফ্রিজে সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা কম্প্রেসর চালু থাকে। বাকি ১৮ ঘণ্টাই ফ্রিজের কম্প্রেসর বন্ধ অবস্থায় থাকে। তবে ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে এই সময় ভিন্ন হতে পারে। ফলে একদিনে ৬ ঘণ্টা হলে এক মাসে ৬×৩০=১৮০ ঘণ্টা ফ্রিজ চালু থাকে।
তাহলে ওই ফ্রিজের এক মাসে মোট বিদ্যুৎ খরচ দাঁড়ায়, ৩০০×১৮০ ওয়াট বা ঘণ্টা=৫৪,০০০ ওয়াট বা ঘণ্টা। ৫৪০০০÷১০০০ ইউনিট=৫৪ ইউনিট। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিলের বিভিন্ন স্টেপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ বিলের হার ১২.৩ টাকা এবং সর্বনিম্ন হার ৪.৪০ টাকা। তাহলে ঐ ফ্রিজের সর্বোচ্চ মাসিক বিল দাঁড়ায়, ৫৪×১২.৩=৬৬৪.২ টাকা এবং সর্বনিম্ন মাসিক বিল দাঁড়ায় ৫৪×৪.৪০=২৩৭.৬ টাকা।
❑ জেনে রাখুন থেকে আরও পড়ুন
সূত্র: মেক ইউজ অব
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের ২০টি মজার ঘটনা