আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: আ.লীগ শাসনামলে বছরে পাচার গড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার । আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৪০০ কোটি (১৪ বিলিয়ন) ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, সরকারি নথি ও বৈশ্বিক প্রতিবেদন ব্যবহার করে অর্থ পাচারের চিত্র তুলে ধরা হয়।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে গত সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হবে।
এর আগে ২ নভেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানায়, গত ১৫ বছর ধরে প্রতি বছর দেশ থেকে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
ড. দেবপ্রিয় গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ইআরএফের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম, সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে কেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। রোববার বলতে পারব কোন ডাল পচা, আর কোনটি ভালো ছিল।’
দেশ থেকে অর্থ পাচারের মূল্য তথ্য সংগ্রহ করতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বেশি সময় পায়নি। সময় স্বল্পতার কারণে অর্থ পাচারের প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি বলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছি সেখানে।’
বছরের পর বছর ধরে চলা অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা জানাতে প্রতিবেদন তৈরিতে ২৮ আগস্ট গঠিত কমিটিকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘কীভাবে অর্থ পাচার হয় এবং কীভাবে বন্ধ করা যায় তা আমরা প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির তথ্য অনুযায়ী, কর ফাঁকি দিতে ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ভুল চালানের কারণে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ গড়ে ৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র শীর্ষক ২৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সেখানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক ভারসাম্য, ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, মেগা প্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও জলবায়ু ইস্যুসহ ২২টি অধ্যায় থাকছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি পদ্মা সেতু, রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কর্ণফুলী টানেলের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর ওপর তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুনঃ
❒ মাত্র ৮ বিডিআর সদস্যের কাছে পরাজিত হয়েছিল ভারতীয় বাহিনী
❒ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ দিনে হাসিনা সরকারের পতন
❒ ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণিত স্বৈরশাসক হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে
❒ রক্তাক্ত বাংলাদেশে নিহত শতাধিক
কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ ও কানাডার আদালতের বিষয়ে আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের বিষয়েও আমাদের পর্যবেক্ষণ আছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের দেওয়া বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে।’
কমিটির আরেক সদস্য বলেন, মোট সরকারি ঋণ বিশেষ করে বিদেশি অর্থায়নে চলমান ২১৫টি প্রকল্পের আগামী চার বছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বিষয়টি প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটি বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি ব্যয় যৌক্তিককরণ, মন্দ ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার ব্যবস্থাপনা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর অনলাইন
❑ বাংলাদেশ থেকে আরও পড়ুন
আরও পড়ুনঃ জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪২৩ জন শহীদ হয়েছেন