আইসিটি ওয়ার্ড নিউজ ডেস্ক: আল্লাহর কাছে মানুষের মর্যাদার মানদণ্ড তাকওয়া । আল্লাহ তাআলার কাছে মানুষের মর্যাদার মানদণ্ড হলো তাকওয়া বা খোদাভীতি। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে তাঁর কাছে কেউ বেশি মর্যাদার অধিকারী, আবার কেউ মর্যাদাহীন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- يا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে। যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদার অধিকারী যে বেশি তাকওয়ার অধিকারী। আল্লাহ সবকিছু জানেন। সব খবর রাখেন। (সুরা হুজরাত: ১৩)
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা, রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
তাকওয়া অর্জন করা সবার ওপর ফরজ। আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যেভাবে তাকে ভয় করা উচিত।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২০)। তিনি আরো বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক ও সত্য কথা বলো। (সুরা আহজাব: ৭০)
আল্লাহ তাআলার নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ মুমিনদের নেই। আর তাঁর নির্দেশ পালন করলেই তাঁর ভালোবাসার পাত্র হওয়া যায়। এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
আরও পড়ুনঃ মুমিনদের জন্যে আল্লাহর ২৫ প্রতিশ্রুতি
আল্লাহর নিকট যে মর্যাদাবান হয়ে যায়, ভালোবাসার পাত্র হয়ে যায়, সমগ্র সৃষ্টির কাছেও সে মর্যাদাবান ও ভালোবাসার পাত্র হয়ে যায়। নবীজি (স.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মানুষের নিকট অধিক সম্মানিত হতে চায়, সে যেন আল্লাহকে ভয় করে অর্থাৎ তাকওয়া অর্জন করে। (আল-কামেলু ফিদ দুয়াফায়ি: ৮/৪০৫)
এজন্য মানব চরিত্রের অন্যতম সম্পদ তাকওয়া অর্জন ও সংরক্ষণে নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানরা সচেষ্ট হবেন। সেই বুদ্ধির কথা শিখিয়ে দিয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করছেন, হে বুদ্ধিমানগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হও। (সূরা মায়েদা: ১০০) অন্য আয়াতে আল্লাহ আরও বলছেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তাকে বিপদাপদ থেকে নিষ্কৃতি দেবেন এবং তাকে ধারণাতীত রিজিক দান করবেন।’ (সুরা তালাক: ২-৩)
তাকওয়া অবলম্বনকারী তথা মুত্তাকিদের চূড়ান্ত স্থান হলো জান্নাত। সেই প্রসঙ্গটি টেনে আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাতে ও নেয়ামতে, তারা উপভোগ করবে, যা তাদের পালনকর্তা দেবেন এবং তিনি জাহান্নামের আজাব থেকে তাদেরকে রক্ষা করবেন। (সুরা তুর: ১৭-১৮)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমীন।
আরও পড়ুনঃ ঈসা (আ.) সম্পর্কে যেসব তথ্য আপনাকে চমকে দেবে